গর্ভের সন্তানের পিতৃত্বের দাবিতে দুই স্বামীর লড়াই

সন্তান সম্ভবা এক নারীর গর্ভের অনাগত সন্তানের দাবিতে তার সাবেক ও বর্তমান দুই স্বামীর মধ্যে সৃষ্ট বিরোধ গ্রাম্য সালিশ পর্যন্ত গড়ানোর পরেও কোন সুরাহা হয়নি। এখন মামলা-পাল্টা মামলায় আদালত পর্যন্ত গড়াচ্ছে এ লড়াই। ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার পুরাপাড়া ইউনিয়নের গোয়ালদী গ্রামের এ ঘটনা এলাকায় ব্যাপক কৌতূহল সৃষ্টি করেছে।
গোয়ালদি গ্রামের জনৈক লাল মোল্যার ছেলে হেলাল মোল্যা জানান, গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর তার সাথে একই গ্রামের আলমগীর কাজির মেয়ে নাজমা বেগমের শরিয়ত সম্মতভাবে বিয়ে হয়। বর্তমানে তার স্ত্রী গর্ভবতী। অবশ্য হেলাল অভিযোগ করেন, বিয়ের কিছুদিন পর আমার অনুপস্থিতিতে আমার স্ত্রী তার বাবা ও মাকে সাথে নিয়ে আমার বাড়ী থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান মালামাল নিয়ে চলে যায়।
এদিকে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি উপজেলার জুনাসুর গ্রামের জনৈক বাদশা লস্করের ছেলে সাবু লস্কর দাবি করেন, নাজমার সাথে তার দশ বছর পূর্বেই বিয়ে হয়। তবে মাঝখানে তাদের মাঝে মনোমালিন্য হওয়ায় গত বছরের ৩০ আগষ্ট নাজমা তাকে তালাক দিয়ে হেলালকে বিয়ে করে। এরপর গত ১ মার্চ হেলালকে তালাক দেয়ার পর এখন নাজমা ও সে আবার দাম্পত্য জীবন শুরু করেছে নতুন করে।
এদিকে, বর্তমানে নাজমা বেগম গর্ভবতী। হেলাল মোল্যার দাবি, নাজমা বেগমের গর্ভে ৪ মাসের শিশু সন্তান রয়েছে যার পিতা আইনত সে-ই।
অপরদিকে, সাবু লস্কর জানান, তার স্ত্রীর গর্ভে ৩ মাসের শিশু সন্তান রয়েছে এবং সেই এই সন্তানের পিতা।
পারিবারিক আদালতে মিমাংসাযোগ্য এমন অপরাধ বা অভিযোগকে কেন্দ্রে করে মামলা জট বাড়ছে। সাবেক স্বামী হেলাল মোল্যা মালামাল চুরির অভিযোগে নাজমা বেগম ও তার সাবেক শ্বশুর-শ্বাশুরিকে আসামী করে গত ২১ এপ্রিল ফরিদপুরের সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনি একটি মামলা দায়ের করেছেন।
অন্যদিকে, সাবেক স্বামী হেলাল মোল্যার বিরুদ্ধে নাজমা বেগমও নারী নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সাবু লস্কর। তবে এসব ব্যাপারে নাজমা বেগম সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে চাননি।
এব্যাপারে পুরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সোবহান মিয়া বলেন, উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সব মহলই বিব্রত। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আপোস মিমাংসার চেষ্টা চলছে। দ্রুতই বিষয়টি মিমাংসা করতে পারবো বলে আশাবাদি।

No comments

Powered by Blogger.