অভাব নিয়ে পারিবারিক কলহ: দুই সন্তানকে হত্যা করে মায়ের আত্মহত্যা

যশোরের শার্শায় ঈদের নতুন পোশাক না কিনে দিতে পেরে দুই শিশুসন্তানকে বিষ খাইয়ে হত্যার পর মা আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ উপজেলার কায়বা ইউনিয়নের দীঘা চালিতাবাড়িয়া গ্রাম থেকে লাশ ৩টি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে। নিহতরা হলো- উপজেলার কায়বা ইউনিয়নের দীঘা চালিতাবাড়িয়া গ্রামের ইব্রাহিমের স্ত্রী হামিদা খাতুন (৩৫), মেয়ে শারিফা খাতুন (১২) ও ছেলে সোহান সেন (৫)। এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্র জানায়, দরিদ্রতার নির্মম কশাঘাতে জর্জরিত ইব্রাহিমের পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা থাকে প্রায় সারাবছর। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা লেগেই থাকতো। আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরে সন্তানদের নতুন পোশাক কিনে দেয়া নিয়ে গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। এর একপর্যায়ে স্ত্রী হামিদা খাতুন নিজে তার শিশুকন্যা শরিফা ও শিশুপুত্র সোহানকে বিষের ট্যাবলেট খাইয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে নিজেও একই ধরনের ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেন। পুলিশ ধারণা করছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে নির্যাতনের পর রোববার রাতে ওই মা তার দুই সন্তানকে বিষ খাইয়ে নিজেও আত্মহত্যা করেন। এর আগে দিনভর কলহ হয় ওই পরিবারে। এদিকে গৃহবধূ ও তার দুই শিশু সন্তানের লাশ উদ্ধারের পর গৃহবধূর শ্বশুর ও শাশুড়িসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। বাগআঁচড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক (তদন্ত) সুখদেব রায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  কায়বা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নুর মোহাম্মদ বলেন, ইব্রাহিম ইউনিয়ন পরিষদ অফিসের কাছে চায়ের দোকান দিয়ে সংসার চালাতেন। দোকানের পাশেই ঘর তুলে সপরিবারে বসবাস করতেন।
পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক সুখদেব বলেন, রাতে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পারিবারিক কলহকে আত্মহত্যার কারণ হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইব্রাহিমের বাবা আরাফাত হোসেন (৬০), মা মরিয়ম বেগম (৪৫) ও প্রতিবেশী ছিদ্দিক হোসেনকে আটক করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.