২০ বছরের শিশু! by আমিনুল ইসলাম লিটন

২০ বছর বয়সী চম্পা খাতুন কেবল হাসতে আর কাঁদতে পারেন। এখনো মায়ের কোলেই চড়েন। হাটতে পারেন না। বয়স বাড়লেও বাড়েনি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ। নেই শরীরের কোন পরিবর্তন। যে বয়সে পড়ালেখা বা বিয়ের রঙ্গিন স্বপ্ন থাকার কথা সেই বয়সেও চম্পা মানুষের কোল চেপে বসে থাকে। বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধি হিসেবে সমাজসেবা থেকে তার নাম নিবন্ধিত হলেও এখনো ভাগ্যে জোটেনি প্রতিবন্ধি ভাতার কার্ড।
চম্পা খাতুন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাধুহাটী ইউনিয়নের বংকিরা গ্রামের হাসেম মোল্লার মেয়ে।
চম্পা খাতুনের মা মিনুয়ারা বেগম জানান, ১৯৯৯ সালের ২৮শে এপ্রিল চম্পা খাতুনের জন্ম। জন্মের পর থেকে সে বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধি। আচরণ করে শিশুর মতো। কোন কথা বলতে পারে না। কেবল হাসতে আর কাঁদতে পারে। সারাক্ষণ মানুষের কোলে কোলেই তার দিন কাটে।
বড় বোন ময়না খাতুন জানান, ২০ বছর বয়স হলেও চম্পা এখনো শিশুর মতোই রয়ে গেছে। তার পিতা হাসেম মোল্লার মেয়েকে চিকিৎসা করানোর মতো সঙ্গতি নেই। এ জন্য তারা চম্পার জন্য একটি প্রতিবন্ধি ভাতার কার্ড করার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, ঝিনাইদহ সদর উপজেলা সমাজসেবা থেকে ২০১৬ সালে প্রতিবন্ধি হিসেবে চম্পার নাম নিবন্ধিত হলেও সেখানে মোছা. চম্পার খাতুনের স্থলে ভুলক্রমে মো. চাকমা খাতুন লেখা হয়েছে। নাম সংশোধনের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও ময়না খাতুন জানান।
প্রতিবন্ধি ভাতা না হওয়া প্রসঙ্গে এলাকার ইউপি মেম্বর এনামুল হক ডালু বলেন, বছরে দুইটি কার্ড পায়। কার রেখে কার দেব? তবে পর্যায়ক্রমে চম্পা খাতুনকেও দেয়া হবে বলে তিনি জানান।
২০ বছর বয়সী চম্পা খাতুন এখনো ‘শিশু’ থাকার বিষয়ে ঝিনাইদহের প্রাইভেট প্র্যাকটিশনার বিশিষ্ট শিশু চিকিৎসক ডা. দুলাল কুমার চক্রবর্তী জানান, অনেক সময় মস্তিস্কের অসম্পূর্ণ গঠনে এমনটি হতে পারে। তারপরও জন্মের পর থেকে শিশুটির ইতিহাস পর্যালোচনা ও পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.