কানাডায় পাল্টে যাওয়া জীবন সৌদি টিনেজার রাহাফের

কানাডায় পৌঁছে নিজের চালচলন, পোশাকের ধরন পাল্টে ফেলেছেন সৌদি আরবের সেই বহুল আলোচিত টিনেজার রাহাফ মোহাম্মদ আল কুনুন (১৮)। সৌদি আরবের সংরক্ষণশীল পোশাক বাদ দিয়ে তার পরণে উঠেছে হাঁটু বের করা পোশাক। খাদ্যভ্যাসে এসেছে পরিবর্তন। সকালে নাস্তা খান মাংস দিয়ে তৈরি বেকন নামের খাবার। সঙ্গে থাকে একটি বিশেষ রকম কফি। হত্যার হুমকি থাকায় ২৪ ঘন্টা দেয়া হচ্ছে তাকে নিরাপত্তা। এমনই করে কানাডায় স্বাধীনতা ভোগ করছেন তিনি। তার পরিবার তাকে তার ওপর থেকে অধিকার হারানোর পর তিনি নিজের নামের শেষ অংশ আল কুনুন বাদ দিয়েছেন।
এখন তিনি পরিচিত হবেন শুধু রাহাফ মোহাম্মদ নামে। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন ডেইলি মেইল।
রাহাফ মোহাম্মদকে তার পরিবার ধর্ম ত্যাগ করার কারণে হত্যা করতে চায়- এমন অভিযোগ করে পালিয়ে তিনি চলে যান থাইল্যান্ডে। সেখান থেকে তার যাওয়ার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু তার পিতা সৌদি আরবের হেইল প্রদেশের গভর্নর। ফলে কূটনৈতিক সুবিধা ব্যবহার করে রাহাফের পাসপোর্ট ও ভ্রমণ সংক্রান্ত কাগজপত্র জব্দ করান তিনি। তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা চলতে থাকে। কিন্তু বেঁকে বসেন রাহাফ। তিনি হোটেলে নিজেকে অবরুদ্ধ করে রেখে তৃতীয় কোনো দেশে আশ্রয় প্রার্থনা করেন। এক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যকে বেছে নেন। পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। তারা তাকে শরণার্থীর মর্যাদা দেয়। এরপর তাদের আহ্বানে কানাডা রাহাফকে আশ্রয় দেয়। রাহাফ সিউল থেকে কানাডার উদ্দেশে উড়াল দেন। তাকে কানাডায় গ্রহণ করেন সেদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এরপর শুরু হয় মুক্ত পরিবেশে রাহাফের নতুন জীবন। সেখানে তাকে দেখা গেছে শীতের গরম কাপড় পরে আছেন। তবে তাতে শরীরের নিম্ন অংশের অর্থাৎ হাঁটু বেরিয়ে আছে। তাকে দেয়া হয়েছে টেলিফোন সুবিধা। বলা হচ্ছে, সংরক্ষণশীল সৌদি আরবে এমন সব মুক্ত স্বাধীনতা তিনি ভোগ করতে পারতেন না। মঙ্গলবার তিনি সকালের নাস্তার ছবি স্নাপচ্যাটে পোস্ট করেছেন। তাতে রয়েছে কানাডার স্টাইলের বেকন ও ডিম। ক্যাপশনে লিখেছেন ‘ওএমজি বেকন’। সঙ্গে দিয়েছেন হার্টের ইমোজি ও কানাডার পতাকা। সকালে স্টারবাক থেকে কফি পানের ছবিও শেয়ার করেছেন। তাতে তার ওই হাঁটু বের করা ছবি রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.