শিশু হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ৩০০, পাঁচ শিশুর মৃত্যু
শিশু
সিয়াম। বয়স ২ বছর ৮ মাস। সিয়ামকে নিয়ে শুক্রবার সকালে ঢাকা শিশু
হাসপাতালের বারান্দায় বসে কান্নাকাটি করছেন মা সালেহা। জ্বর, পাতলা
পায়খানা, একই সঙ্গে বমি। সালেহা বলেন, ডাক্তার দেখিয়েছি। ডাক্তার বলেছেন
সিয়ামের ডেঙ্গু হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। কিন্তু সিট পাচ্ছি না।
কি করবো, কোথায় যাবো বুঝতে পারছি না। তাদের বাসা মিরপুর ১ নম্বরে। আরেক শিশু নুরজাহানের বয়স ৩ বছর।
বাবা শহিদুল আলম একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। মা গৃহিণী। নুরজাহান তাদের প্রথম সন্তান। এক সপ্তাহ আগে রাতে হঠাৎ করে প্রচণ্ড ঝাঁকুনি দিয়ে জ্বর আসে। কি করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না তারা। এর মধ্যে গায়ে লাল র্যাস উঠে গেছে। পরে মেয়েকে শ্যামলীর ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে আসেন। নুরজাহানের অবস্থা কিছুটা ভালো হওয়ায় বাসায় নিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। শুধু সিয়াম বা নুরজাহান নন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে প্রত্যেক ওয়ার্ডে প্রতিদিনই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিশুদের মধ্যে যাদের অবস্থা বেশি গুরুতর তাদের ডেঙ্গুর ধরন বুঝে আইসিইউ, ইন আইসিইউ, আইসুলেশন, কার্ডিয়াক আইসিইউতে ভর্তি করা হচ্ছে। ঢাকা শিশু হাসপাতালে রয়েছে ১৫টি ওয়ার্ড। এখন পর্যন্ত ৩শ’র বেশি রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ৫ জন রোগীর অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাদের বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
একাধিক হাসপাতাল সূত্রে জানা যায় প্রথমে জ্বর, বমি ও তলপেটে ব্যথা নিয়ে প্রায় ৪/৫ দিন ভোগার পর হাসপাতালে ভর্তি হয় রোগীরা। এসব রোগীর মধ্যে থেকে ৭ জন ডেঙ্গু শকড সিনড্রোম ও হেমোরেজিক শকডে মারা গেছেন। এ প্রসঙ্গে ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. আব্দুল আজিজ মানবজমিনকে বলেন, ডেঙ্গুজ্বর প্রতিরোধে আমরা ইতিমধ্যে ৬ সদস্যে একটি সেল গঠন করেছি। যার প্রধান আমি নিজেই। আমরা ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি। আমাদের সার্জনদের এ বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। যেকোনো সমস্যায় সেলের যে কাউকে ফোন দিলে রোগীরা সব ধরনের সেবা পাবেন। ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত শিশুদের আমরা স্পেশাল কেয়ার নিচ্ছি। ভর্তিযোগ্য হলে কাউকেই ফিরিয়ে দিচ্ছি না। এখন পর্যন্ত ৩শ’র বেশি রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এই মাসে ৩ জন রোগীর অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাদের বাঁচানো সম্ভব হয়নি। তারা একেবারে খারাপ অবস্থায় আমাদের কাছে এসেছিল। অন্য রোগীরা এখন ভালো আছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গু এবং এর ভয়াবহতা অনেক বেশি। ডেঙ্গু সাধারণত ৪ ধরনের হয়ে থাকে। ডেঙ্গু ১, ২, ৩, ৪। এর আগে ছিল ১, ২। এবারই প্রথম ডেঙ্গু ৩ দেখা গেছে। যেটা খুবই ভয়াবহ এবং খারাপ। তাই অনেক রোগী মারা যাচ্ছে। ডেঙ্গু থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে তিনি বলেন, ডেঙ্গু মশার প্রজনন ক্ষেত্র ফুলের টব, পরিত্যক্ত বালতি, খালি বোতল, আঙিনার চারপাশে জমে থাকা পানি থেকে ডেঙ্গু মশা জন্ম নিতে পারে।
এ থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায় ডেঙ্গুর প্রজনন উৎসগুলোকে ধ্বংস করে দিতে হবে। প্রতিদিন মশার স্প্রে করতে হবে। দিনের বেলায় বাচ্চাকে মশারি টাঙ্গিয়ে ঘুমানোর ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি নিজেদের ঘরবাড়ি ও আঙিনা পরিষ্কার রাখতে হবে। একইসঙ্গে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মশা নিধনের উদ্যোগ নিতে হবে। জ্বরে আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। শিশুকে বেশি বেশি তরল জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে এবং বারবার খাওয়াতে হবে। যেন পানি শুন্যতা দেখা না দেয়।
এসময় অ্যান্টিবায়টিক খাওয়ানোর প্রয়োজন নেই। জ্বর যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। হাসপাতালটির আরপিএস ডা. ইমরানুল হাসান বিপুল বলেন, গতকাল পর্যন্ত হাসপাতালে প্রায় ৩৭ জন শিশু ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা খারাপ হওয়ায় আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। আগস্ট ও সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৫ জন শিশু ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। নরমাল সিজনে রোগীর সংখ্যা দুই থেকে আড়াই শ’ থাকলেও এখন সেখানে প্রায় সাড়ে ৩শ’ রোগী ভর্তি আছে।
কি করবো, কোথায় যাবো বুঝতে পারছি না। তাদের বাসা মিরপুর ১ নম্বরে। আরেক শিশু নুরজাহানের বয়স ৩ বছর।
বাবা শহিদুল আলম একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। মা গৃহিণী। নুরজাহান তাদের প্রথম সন্তান। এক সপ্তাহ আগে রাতে হঠাৎ করে প্রচণ্ড ঝাঁকুনি দিয়ে জ্বর আসে। কি করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না তারা। এর মধ্যে গায়ে লাল র্যাস উঠে গেছে। পরে মেয়েকে শ্যামলীর ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে আসেন। নুরজাহানের অবস্থা কিছুটা ভালো হওয়ায় বাসায় নিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। শুধু সিয়াম বা নুরজাহান নন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে প্রত্যেক ওয়ার্ডে প্রতিদিনই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিশুদের মধ্যে যাদের অবস্থা বেশি গুরুতর তাদের ডেঙ্গুর ধরন বুঝে আইসিইউ, ইন আইসিইউ, আইসুলেশন, কার্ডিয়াক আইসিইউতে ভর্তি করা হচ্ছে। ঢাকা শিশু হাসপাতালে রয়েছে ১৫টি ওয়ার্ড। এখন পর্যন্ত ৩শ’র বেশি রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ৫ জন রোগীর অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাদের বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
একাধিক হাসপাতাল সূত্রে জানা যায় প্রথমে জ্বর, বমি ও তলপেটে ব্যথা নিয়ে প্রায় ৪/৫ দিন ভোগার পর হাসপাতালে ভর্তি হয় রোগীরা। এসব রোগীর মধ্যে থেকে ৭ জন ডেঙ্গু শকড সিনড্রোম ও হেমোরেজিক শকডে মারা গেছেন। এ প্রসঙ্গে ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. আব্দুল আজিজ মানবজমিনকে বলেন, ডেঙ্গুজ্বর প্রতিরোধে আমরা ইতিমধ্যে ৬ সদস্যে একটি সেল গঠন করেছি। যার প্রধান আমি নিজেই। আমরা ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি। আমাদের সার্জনদের এ বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। যেকোনো সমস্যায় সেলের যে কাউকে ফোন দিলে রোগীরা সব ধরনের সেবা পাবেন। ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত শিশুদের আমরা স্পেশাল কেয়ার নিচ্ছি। ভর্তিযোগ্য হলে কাউকেই ফিরিয়ে দিচ্ছি না। এখন পর্যন্ত ৩শ’র বেশি রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এই মাসে ৩ জন রোগীর অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাদের বাঁচানো সম্ভব হয়নি। তারা একেবারে খারাপ অবস্থায় আমাদের কাছে এসেছিল। অন্য রোগীরা এখন ভালো আছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গু এবং এর ভয়াবহতা অনেক বেশি। ডেঙ্গু সাধারণত ৪ ধরনের হয়ে থাকে। ডেঙ্গু ১, ২, ৩, ৪। এর আগে ছিল ১, ২। এবারই প্রথম ডেঙ্গু ৩ দেখা গেছে। যেটা খুবই ভয়াবহ এবং খারাপ। তাই অনেক রোগী মারা যাচ্ছে। ডেঙ্গু থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে তিনি বলেন, ডেঙ্গু মশার প্রজনন ক্ষেত্র ফুলের টব, পরিত্যক্ত বালতি, খালি বোতল, আঙিনার চারপাশে জমে থাকা পানি থেকে ডেঙ্গু মশা জন্ম নিতে পারে।
এ থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায় ডেঙ্গুর প্রজনন উৎসগুলোকে ধ্বংস করে দিতে হবে। প্রতিদিন মশার স্প্রে করতে হবে। দিনের বেলায় বাচ্চাকে মশারি টাঙ্গিয়ে ঘুমানোর ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি নিজেদের ঘরবাড়ি ও আঙিনা পরিষ্কার রাখতে হবে। একইসঙ্গে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মশা নিধনের উদ্যোগ নিতে হবে। জ্বরে আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। শিশুকে বেশি বেশি তরল জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে এবং বারবার খাওয়াতে হবে। যেন পানি শুন্যতা দেখা না দেয়।
এসময় অ্যান্টিবায়টিক খাওয়ানোর প্রয়োজন নেই। জ্বর যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। হাসপাতালটির আরপিএস ডা. ইমরানুল হাসান বিপুল বলেন, গতকাল পর্যন্ত হাসপাতালে প্রায় ৩৭ জন শিশু ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা খারাপ হওয়ায় আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। আগস্ট ও সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৫ জন শিশু ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। নরমাল সিজনে রোগীর সংখ্যা দুই থেকে আড়াই শ’ থাকলেও এখন সেখানে প্রায় সাড়ে ৩শ’ রোগী ভর্তি আছে।
No comments