ন্যাটো মিত্রদের সামরিক ব্যয় বাড়াতে বলছেন ট্রাম্প

ব্রাসেলসে ন্যাটো সম্মেলনে সদস্য দেশগুলোর নেতারা
উত্তর আটলান্টিক দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটো মিত্রদের সামরিক ব্যয় বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন ২৯টি দেশের এই জোটের সদস্য দেশগুলোকে নিজেদের জিডিপি’র (গ্রস ডমেস্টিক প্রডাক্ট) চার শতাংশ পর্যন্ত ব্যয় বাড়াতে বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে জোটের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে সদস্য দেশগুলোর জিডিপির ২ শতাংশ ব্যয় বাড়ানো। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যয় বৃদ্ধির তাগিদ না দিলেও জোটের নেতাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় বরাদ্দ বাড়াতে বলেছেন। আর ন্যাটো মহাসচিব বলেছেন, জিডিপির দুই শতাংশ ব্যয় বাড়াতে সদস্য দেশগুলো সম্মত হয়েছে।
বুধবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে শুরু হয়েছে দুই দিনের ন্যাটো সম্মেলন। এতে যোগ দিচ্ছেন সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানেরা। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ন্যাটো মিত্রদের প্রকাশ্য সমালোচনা করে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্প। বারবার তিনি বলে আসছেন যুক্তরাষ্ট্র অন্যায্য অতিরিক্ত ব্যয় করছে। তার দাবি অন্য ন্যাটো দেশগুলোর চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের জিডিপির বহুগুন বেশি সামরিক ব্যয় করে আসছে। সম্মেলন সামনে রেখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সদস্য দেশগুলোকে ব্যয় বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন বলে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
বুধবার ন্যাটো সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে ন্যাটো সেক্রেটারি জেনস স্টোলেনবার্গ বলেছেন, সামনের বছরগুলোতে আরও বেশি ব্যয় করতে সদস্য দেশগুলো সম্মত হয়েছে। ব্রাসেলসে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সব সদস্য দেশই প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াচ্ছে। এই বছরে কমপক্ষে আটটি ন্যাটো সদস্য দেশ তাদের জিডিপির দুই শতাংশ প্রতিরক্ষায় ব্যয় করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আর আমাদের বেশিরভাগ সদস্যদেশের ২০২৪ সালের মধ্যে এমনটি করার পরিকল্পনা রয়েছে।’
স্টোলেনবার্গ বলেন, ‘এই শতকের এক চতুর্থাংশ বছর অনেক দেশ প্রতিরক্ষা বাজেট থেকে হাজার হাজার কোটি ডলার কমিয়েছে। এখন তারা প্রতিরক্ষা বাজেটে হাজার হাজার কোটি মার্কিন ডলার যোগ করছে।’ তিনি বলেন, আসন্ন বছরগুলোতে অতিরিক্ত অর্থনৈতিক ব্যয় আরও ন্যায় সঙ্গতভাবে বন্টিত হবে। এই বছর থেখে শুরু করে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ন্যাটো মোট ২২ হাজার ছয়শো কোটি ডলার বরাদ্দ পাবে।
আল জাজিরা বলছে, স্টোলেনবার্গ ন্যাটো সদস্য দেশগুলোর এই ব্যয় বৃদ্ধির আশ্বাস দিলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাতে সন্তুষ্ট হতে পারছেন বলে মনে হচ্ছে না।
‘রাশিয়ার কাছে জিম্মি জার্মানি’ -ট্রাম্প
ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েই বিতর্কের সৃষ্টি করে দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। বার্লিন ও মস্কোর মধ্যে গ্যাস নিয়ে যে চুক্তি হয়েছে তাকে তিনি অসঙ্গত বলে আখ্যায়িত করেছেন। আক্রমণ শাণিয়েছেন জার্মানি ও রাশিয়ার প্রতি। তিনি দু’দিনের ন্যাটো সম্মেলনে যোগ দিতে ব্রাসেলস পৌঁছেই বলেন, জার্মানি হলো রাশিয়ার কাছে জিম্মি (ক্যাপটিভ)। ক্ষুব্ধস্বরে তিনি এমন সমালোচনা করেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন স্কাই নিউজ। এতে বলা হয়, অন্য বিশ্বনেতারা ব্রাসেলসে পৌঁছার আগেই বুধবার ন্যাটো সেক্রেটারি জেনারেল জেনস স্টোলটেনবার্গের সঙ্গে সকালে নাস্তার টেবিলে দার কণ্ঠ ধারালো করেন। এ সময় তিনি অন্য দেশগুলোতে তাদের প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বৃদ্ধির তাগিদ দেন। ডনাল্ড ট্রাম্পের এমন সব মন্তব্যে এবার ন্যাটো সম্মেলনেও বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সমুহ আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর আগে গত মাসে কানাডায় জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে গিয়ে তিনি একই রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে নিয়ে কড়া মন্তব্য করেন। এমন কি ওই সম্মেলন থেকে যে যৌথ বিবৃতি দেয়া হয়েছিল তাতে তিনি সম্মতি দেন নি। তিনি তার আগেই দলবল নিয়ে পাড়ি দেন সিঙ্গাপুরে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠক করতে। তিনি এবার ন্যাটো সম্মেলনে যোগ দিতে ব্রাসেলস পৌঁছে প্রথমেই টার্গেটে পরিণত করলেন জার্মানিকে। এ সময় তিনি বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে জার্মানি যে গ্যাস চুক্তি করেছে তাতে বার্লিন পুরোপুরি মস্কোর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। তার ভাষায় ‘আমি যতদূর জানি, জার্মানি রাশিয়ার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। কারণ, তারা রাশিয়ার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি পাচ্ছে। আমরা জার্মানিকে রক্ষা করতে প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু তারা গ্যাস কিনছে রাশিয়ার কাছ থেকে। বিষয়টি ব্যাখ্যা করুন। এটার কোনো ব্যাখ্যা করা যায় না। কারণ, তারা রাশিয়াকে গ্যাস কেনা বাবদ শত শত কোটি ডলার বিল দিচ্ছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে আমাদের উচিত জার্মানির পক্ষ নেয়া’। ওই নাস্তার টেবিলে ডনাল্ড ট্রাম্পের এমন মন্তব্যে হতবিহ্বল হয়ে পড়েন ন্যাটো মহাসচিব। এ সময় তিনি ডনাল্ড ট্রাম্পকে ন্যাটোর অভিন্ন উদ্দেশ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। জেনস স্টোলটেনবার্গ তাকে বলেন, ন্যাটো হলো ২৯টি জাতির জোট। এর মধ্যে মাঝে মধ্যে কিছুঠা পার্থক্য আছে। দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য থাকবে। কিছু অমতও থাকবে। এক্ষেত্রে রাশিয়া থেকে জার্মানি পর্যন্ত গ্যাস পাইপ লাইন হলো মিত্রদের মধ্যে ওইরকম একটি বিষয়। কিন্তু ন্যাটোর শক্তি বলে, এমন পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও আমরা সব সময়ই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে সক্ষম। পারস্পরিক সুরক্ষা, একে অন্যের পাশে দাঁড়ানো এসবই হলো ন্যাটোর মূল কাজ। কারণ, আমরা বিশ্বাস করি বিচ্ছিন্ন অবস্থার চেয়ে একত্রিত হলে আমাদের শক্তি বৃদ্ধি পায়। এ সময় তিনি ট্রাম্পকে বুঝিয়ে দেন শীতল যুদ্ধের সময় রাশিয়ার সঙ্গে কি আচরণ করেছে ন্যাটোর মিত্ররা। ট্রাম্পের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী উরসুলা ভন ডার লিয়েন। তিনি বলেন, কোনো সংশয় ছাড়াই রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের প্রচুর ইস্যু আছে। অন্যদিকে বিভিন্ন দেশ, মিত্র ও বিরোধীদের সঙ্গে কোনো প্রশ্ন ছাড়াই যোগাযোগ রাখা উচিত।
ব্রাসেলসে ট্রাম্প-মার্কেল বাকযুদ্ধ
ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েই বিতর্কের সৃষ্টি করে দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। বার্লিন ও মস্কোর মধ্যে গ্যাস নিয়ে যে চুক্তি হয়েছে তাকে তিনি অসঙ্গত বলে আখ্যায়িত করেছেন। আক্রমণ শানিয়েছেন জার্মানি ও রাশিয়ার প্রতি। তিনি দু’দিনের ন্যাটো সম্মেলনে যোগ দিতে বুধবার ব্রাসেলস  পৌঁছেই বলেন, জার্মানি হলো রাশিয়ার কাছে জিম্মি (ক্যাপটিভ)। ক্ষুব্ধস্বরে তিনি এমন সমালোচনা করেন। ট্রাম্পের এমন বিস্ফোরক মন্তব্যেল পাল্টা জবাব দেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল। তিনি বলেন, জার্মানির স্বাধীনভাবে নীতি নির্ধারণের অধিকার রয়েছে। যে কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে আমরা সম্পূর্ণ স্বাধীন। যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ন্যাটোর অংশীদার দেশগুলো অধিক সুবিধা নিচ্ছে, ট্রাম্পের এমন অভিযোগের জবাবে মার্কেল বলেন, ন্যাটোয় এখনো জার্মানির বিপুল সৈন্য নিয়োজিত রয়েছে। এখনো আফগানিস্তানে আমাদের সৈন্য রয়েছে। সেখানে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থও রক্ষা করছি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন স্কাই নিউজ। এতে বলা হয়, অন্য বিশ্বনেতারা ব্রাসেলসে পৌঁছার আগেই বুধবার ন্যাটো সেক্রেটারি জেনারেল জেনস স্টোলটেনবার্গের সঙ্গে সকালে নাস্তার টেবিলে তার কণ্ঠ ধারালো করেন। এ সময় তিনি অন্য দেশগুলোতে তাদের প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বৃদ্ধির তাগিদ দেন। ডনাল্ড ট্রাম্পের এমন সব মন্তব্যে এবার ন্যাটো সম্মেলনেও বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সমূহ আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর আগে গত মাসে কানাডায় জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে গিয়ে তিনি একই রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে নিয়ে কড়া মন্তব্য করেন। এমন কি ওই সম্মেলন থেকে যে যৌথ বিবৃতি দেয়া হয়েছিল তাতে তিনি সম্মতি দেন নি। তিনি তার আগেই দলবল নিয়ে পাড়ি দেন সিঙ্গাপুরে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠক করতে। তিনি এবার ন্যাটো সম্মেলনে যোগ দিতে ব্রাসেলস পৌঁছে প্রথমেই টার্গেটে পরিণত করলেন জার্মানিকে। এ সময় তিনি বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে জার্মানি যে গ্যাস চুক্তি করেছে তাতে বার্লিন পুরোপুরি মস্কোর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। তার ভাষায় ‘আমি যতদূর জানি, জার্মানি রাশিয়ার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। কারণ, তারা রাশিয়ার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি পাচ্ছে। আমরা জার্মানিকে রক্ষা করতে প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু তারা গ্যাস কিনছে রাশিয়ার কাছ থেকে। বিষয়টি ব্যাখ্যা করুন। এটার কোনো ব্যাখ্যা করা যায় না। কারণ, তারা রাশিয়াকে গ্যাস কেনা বাবদ শত শত কোটি ডলার বিল দিচ্ছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে আমাদের উচিত জার্মানির পক্ষ নেয়া’। ওই নাস্তার টেবিলে ডনাল্ড ট্রাম্পের এমন মন্তব্যে হতবিহ্বল হয়ে পড়েন ন্যাটো মহাসচিব। এ সময় তিনি ডনাল্ড ট্রাম্পকে ন্যাটোর অভিন্ন উদ্দেশ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। জেনস স্টোলটেনবার্গ তাকে বলেন, ন্যাটো হলো ২৯টি জাতির জোট। এতে মাঝে মধ্যে কিছুটা পার্থক্য আছে। দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য থাকবে। কিছু অমতও থাকবে। এক্ষেত্রে রাশিয়া থেকে জার্মানি পর্যন্ত গ্যাস পাইপলাইন হলো মিত্রদের মধ্যে ওইরকম একটি বিষয়। কিন্তু ন্যাটোর শক্তি বলে, এমন পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও আমরা সব সময়ই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে সক্ষম। পারস্পরিক সুরক্ষা, একে অন্যের পাশে দাঁড়ানো এসবই হলো ন্যাটোর মূল কাজ। কারণ, আমরা বিশ্বাস করি বিচ্ছিন্ন অবস্থার চেয়ে একত্রিত হলে আমাদের শক্তি বৃদ্ধি পায়। এ সময় তিনি ট্রাম্পকে বুঝিয়ে দেন শীতল যুদ্ধের সময় রাশিয়ার সঙ্গে কি আচরণ করেছে ন্যাটোর মিত্ররা। ট্রাম্পের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী উরসুলা ভন ডার লিয়েন। তিনি বলেন, কোনো সংশয় ছাড়াই রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের প্রচুর ইস্যু আছে। অন্যদিকে বিভিন্ন দেশ, মিত্র ও বিরোধীদের সঙ্গে কোনো প্রশ্ন ছাড়াই যোগাযোগ রাখা উচিত।

No comments

Powered by Blogger.