গা ঘেঁষে দাঁড়াবেন না

রেমিকার চুলের খোঁপা প্রেমিকের কাছে বরাবরই আকর্ষণীয়। এমনকি কবি কাজী নজরুল ইসলাম পর্যন্ত লিখে গিয়েছেন, ' আলগা করো গো, খোঁপার বাঁধন, দিল ওহি ম্যারা ফাছ গায়ি '।
স্ত্রীর কিংবা প্রেমিকার খোঁপায় ফুল গুঁজে দিতেই যেন পটু প্রেমিকেরা। তবে বর্তমান সময়ে খোঁপায় ফুল নয়, বরং বিভিন্ন ফ্যাশন বিপণির তৈরি চুলের কাঁটা গুঁজেই কর্মক্ষেত্রে নামেন তরুণীরা।
আর সে চুলের কাঁটাকে যৌন হেনস্তার প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে ব্যবহার করছেন দেশের এক তরুণ ডিজাইনার। তিনি তার তৈরি খোঁপার কাঁটায় লিখেছেন- ‘গা ঘেঁষে দাঁডাবেন না।’
ইদানীং টিশার্টে, ব্যাগে সমাজ সচেতনতামূলক নানা ধরনের বার্তা লেখার ফ্যাশান দেখা যাচ্ছে। ব্যক্তি উদ্যোগে অনেক ফ্যাশন হাউস এ ধরনের টিশার্ট কিংবা ব্যাগ তৈরি করছে। ঠিক তেমনটাই করেছে ২৮ বছরের জিনাত জাহান নিশা। তিন ভাইবোন বিজু, জিসা আর শুভকে নিয়ে খুলেছেন ফেসবুকভিত্তিক অনলাইন শপ ‘বিজেন্স’। প্রতিবাদের ভাষাকে রূপান্তর করেছেন ফ্যাশনে।
তাদেও ফেসবুক পেজে পণ্যের বিজ্ঞপ্তিতে হ্যাশট্যাগ হিসেবে ব্যবহার করছেন- ‘হোক প্রতিবাদ খোঁপার কাঁটায়’ আর ‘বাদ যাবে না একটি হারামজাদা, চলুন করি এ প্রতিজ্ঞা।’
এ প্রসঙ্গে নিশা বলেন ‘রাস্তাঘাটে মেয়েদের হয়রানির সঙ্গে আমরা যেন প্রায় অভ্যস্তই হয়ে পড়েছি। বাস-ট্রেনে বহুবার অস্বস্তিকর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি আমি নিজেও হয়েছি। তারই প্রতিবাদ তুলে ধরতে চেয়েছি খোঁপার কাঁটায়।’
কিন্তু খোঁপার কাঁটায় প্রতিবাদের কথা লিখলেই কি সমাজ থেকে অন্যায় চলে যাবে, এমন প্রশ্নের উত্তরে নিশা জানান, ‘খোঁপার কাঁটায় লিখেই সব সমস্যা মিটে যাবে না। কিন্তু প্রথম এবং শেষ কথা হচ্ছে- আওয়াজ তোলা। আমি আওয়াজ তুলেছি।’
তার এমন ভিন্ন ভাবনায় ইতিমধ্যেই প্রচুর সাড়া পাওয়া গেছে। বিজেন্সের ফেসবুক পেজ অনেক ইতিবাচক মন্তব্যে ভরে গিয়েছে। সেখানে অনেকে হিজাব পিনেও এমন প্রতিবাদী বার্তা লেখার অনুরোধ করছে ।
এর আগে ‘ থামুন ’, ' সুবোধ তুই পালিয়ে গেলে, ভোর আনবে কে ?' লেখা আংটি, দুল, পেনড্যান্ট বানিয়েছেন নিশা। ভবিষ্যতেও এ ধরনের প্রতিবাদী কাজ করতে আগ্রহী নিশা ও তার বিজেন্স গ্রুপ।

No comments

Powered by Blogger.