জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে

জঙ্গি বাদকে একটি বৈশ্বিক সমস্যা অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা হলেও জঙ্গিদমনে বাংলাদেশ বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সমর্থ  হয়েছে। তিনি হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা পরবর্তী ১০ ঘণ্টার মধ্যেই জিম্মি নাটকের অবসান এবং পরবর্তীতে এই হামলায় জড়িতদের এবং অন্যান্য সন্ত্রাসী হামলার পূর্ব-প্রস্তুতিকালে জঙ্গিদের গ্রেপ্তারের জন্য র‌্যাব ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন। একই সঙ্গে তিনি জঙ্গিদমনে সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে তাঁর প্রচেষ্টার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি প্রত্যেকের পুত্র বা পোষ্য কোথায় যায়, কার সঙ্গে মেশে, কি করে, তা লক্ষ্য রাখার পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেউ দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকছে কিনা তার প্রতি লক্ষ্য রাখতে সংশ্লিষ্ট অভিভাবক এবং শিক্ষকদের প্রতি পুনরায় আহ্বান জানান। গতকাল কুর্মিটোলা সদর দপ্তরে র‌্যাব’র ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌?যাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদক উদ্ধার, চরমপন্থি দমন এবং ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনাসহ সকল ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে র‌্যাব অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। র‌্যাব দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে সকলের আস্থা ও শ্রদ্ধা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন, পবিত্র ইসলাম ধর্মের মূলধারা কোরআন ও হাদিসের সঠিক ব্যাখ্যা থেকে বিচ্যুতির কারণে উগ্র জঙ্গিবাদের উদ্ভব হয়েছে। এই জঙ্গিবাদীরা সামপ্রদায়িকতা, সহিংসতা, অরাজকতা ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল ও নিরাপত্তাহীন করে তোলার অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। কিন্তু র‌্যাব জঙ্গি দমনে অভাবনীয় সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয়েছে, যা সর্বমহলে সমাদৃত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে তার সরকারের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী জিরো টলারেন্স নীতির পুনরুল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ হবে একটি শান্তির দেশ এবং আমরা কখনই জঙ্গিবাদকে কোনো প্রশ্রয় দেবো না। তিনি বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম কিন্তু আমরা দেখেছি এই ধর্মের নাম করে কিছু মানুষকে বিভ্রান্তির পথে ঠেলে দেয়া হয়েছিল। এমনকি আমাদের ভালো ঘরের উচ্চশিক্ষিত কোমলমতি ছেলেরাও এই বিভ্রান্তির বেড়াজালে পড়ে যায়। তিনি বলেন, মানুষ মারলে বেহশ্‌তে যাওয়া যাবে এই বিভ্রান্তিতে পড়ে তারা দেশে যে অস্থিতিশীলতা এবং অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল তার বিরুদ্ধে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, সশস্ত্রবাহিনী, বর্ডার গার্ড, গোয়েন্দা সংস্থা এবং র‌্যাব বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এ অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখতে হবে যেন বাংলাদেশকে কেউ সন্ত্রাসী এবং জঙ্গির দেশ বলে অপবাদ দিতে না পারে, বাংলাদেশের মানুষ যেন শান্তিতে জীবন-যাপন করতে পারে এবং যাতে আমরা আমাদের দেশকে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের পথে নিয়ে যেতে পারি। সুন্দরবনে জলদস্যু দমনে র‌্যাব’র ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত ২১৭ জন জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেছে, যারা বর্তমানে পুনর্বাসিত হয়ে স্বাভাবিক জীবন-যাপন করছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, র‌্যাব’র মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বক্তব্য রাখেন।

No comments

Powered by Blogger.