ধান ক্ষেতে মাছ চাষে সাফল্য by মো. সাওরাত হোসেন সোহেল

শিক্ষা, শিক্ষকতাই নয় একজন পরোপকারী হিসেবে পরিচিত সহ-অধ্যাপক কবিরুল ইসলাম। তিনি একজন সফল কৃষক ও মাছ চাষি। সৃষ্টি করেছেন নতুন চমক আর সেই চমক হচ্ছে বোরো ধান ক্ষেতে মাছ চাষ। আর এই পদ্ধতি দেখিয়েছে তাকে লাখ লাখ টাকা আয়ের পথ। শুধু মাছেই নয় ধান চাষেও অর্জন করেছেন সাফল্য। একজন সফল ব্যক্তি সহ-অধ্যাপক কবিরুল ইসলাম কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার শরিফের হাট এলাকার মৃত আ. জলিল বিএসসির পুত্র। সাত ভাই বোনের মধ্যে তিনি পঞ্চম। ছোট বেলা থেকেই মানুষের উপকার করা কবিরুল ইসলামের একটি অভ্যাস ছিল, কারো বিপদ দেখলেই ছুটে যেত, পাশে দাঁড়াতো অসহায় মানুষের। কবিরুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করেন। পরে এলাকার টানে ফিরে এসে চিলমারী ডিগ্রি কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। কলেজ বাদ দিয়ে বাকি সময় অসল কাটতো। তাই মানুষ গড়ার কারিগর এই মানুষটি পরিচিত অনেকের সঙ্গে পরামর্শ ও স্ত্রীর পরামর্শে কিছু আবাদি এবং কিছু পরিত্যক্ত জমি মিলে প্রায় দুই একর জমিতে ধান চাষের সঙ্গে শুরু করেন রুই, কাতলা, মৃগেল, পুঁটি, বিটকাপ, বাটাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ। প্রথম বারেই দেখেন সাফল্যের মুখ-সৃষ্টি করেন নতুন চমক। আয় শুরু করেন লাখ লাখ টাকা। মাছে লাখ লাখ টাকা আয় করা ছাড়াও প্রতিবছর বোরো চাষে ঘরে তোলেন প্রায় ১শ’ মণ ধান। শুধু তাই নয় সৃষ্টি করেন অনেকের কর্মসংস্থান। নিজের সুখের সঙ্গে দেখান অন্যের সুখ। কবিরুল ইসলাম শুধু ধান ক্ষেতে মাছ চাষ করেই বসে থাকেন নি ক্ষেতের চারদিক উঁচু করে লাগিয়েছেন আম, লিচুসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। যা থেকেও প্রতিবছর আয় করছেন লাখ লাখ টাকা। পরোপকারী এই মানুষটি প্রচার বিমুখ থাকলেও বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন অফিসার গোলাম মোস্তাফার মুখে শোনা যায় তার এই সাফল্যের সঙ্গে চমক দেখানোর কাহিনী। পরে সরজমিন সরকার পাড়া এলাকায় কবিরুল ইসলামের ধান ক্ষেত ও ক্ষেতে মাছ চাষ দেখতে গেলে দেখা যায় কবিরুল ইসলাম ধান ক্ষেতের উঁচু স্থানে বসে মাছের খাদ্য দিচ্ছেন। এ সময় তাকে বেশ কয়েকজন শ্রমিক সাহায্য করছেন বিভিন্নভাবে। কেউ মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন, কেউ পানি দিচ্ছেন, আবার কেউ কেউ মাছও ধরছেন, কেউবা ধান ক্ষেতের পরিচর্যা করছেন। এ সময় কথা হয় সহ-অধ্যাপক কবিরুল ইসলামের সঙ্গে তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন- এর আগে এই জমিগুলোতে আবাদ করে ভালো ফসল পেতাম না। পরে আমার এক আত্মীয় তৎকালীন কৃষি অফিসার বর্তমানে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক (উপ-সচিব) রংপুর খন্দকার মোহাম্মদ নূরুল আমীনের পরামর্শে আমি এই পদ্ধতিতে ধান চাষ সঙ্গে ক্ষেতেই মাছ চাষ শুরু করি। আর প্রথম বারেই মাছ চাষে ব্যাপক মুনাফা পাই। শুধু তাই নয় ধান চাষও বেশ ভালো হয়। তিনি এ সময় দুঃখের সঙ্গে বলেন, প্রায় সাত বছর থেকে ধান ক্ষেতে মাছ চাষ করে আসছি কিন্তু বিভিন্ন পরামর্শের জন্য বারবার উপজেলা মৎস্য অফিসারসহ কৃষি বিভাগের দায়িত্বরতদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো ফল পাইনি। তারা এখন পর্যন্ত খবরও নেয়নি। এ ব্যাপারে মৎস্য অফিসার ও কৃষি অফিসারের সঙ্গে কথা হলে তারা কোনো মন্তব্য না করেই বলেন, আমরা কয়েকদিনের মধ্যে সরজমিন দেখতে যাব।

No comments

Powered by Blogger.