বাবার সঙ্গেই মেয়ের বিয়ে!

মেয়ের সঙ্গে নিজের স্বামীকে শেয়ার করেন মা। শুনে অবিশ্বাস্য মনে হলেও, এটাই রীতি। এই চলই দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে মান্ডি উপজাতির মধ্যে। ভারতের অসম, নাগাল্যান্ড, মেঘালয় ছাড়াও বাংলাদেশের কিছু অংশেও এই উপজাতির বাস। মান্ডি ঘরের মেয়েদের কখনও নিজের বাড়ি ছেড়ে শ্বশুরবাড়ি যেতে হয় না। কারণ নিজের বাবাকেই বিয়ে করেন মেয়েরা। শুনে রক্ত গরম হয়ে গেলেও এটাই সত্যি।
কৈশোর থেকে যৌবনে যাওয়ার পথে কখনও কোনও প্রিন্স চার্মিং-এর স্বপ্ন দেখেন না মান্ডি উপজাতির মেয়েরা। মান্ডি কন্যা অরোলা ডালবোটের জীবন কাহিনি শুনলে কান্নায় চোখ ভিজে আসবে। বাংলাদেশের মধুপুর নিবাসী বছর ৩০-এর এই যুবতী যখন খুব ছোট, তখনই মারা যান তাঁর বাবা। তখন তাঁর মা আর একটি বিয়ে করেন। সেই বয়স থেকেই মায়ের দ্বিতীয় স্বামীকেই নিজের স্বামী হিসেবে জানেন অরোলা।
তিনি বলছিলেন, ‘যখন বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছই তখন একজন সুপুরষ আমার স্বামী হবেন, এই স্বপ্ন দেখতে শুরু করি। তবে যেদিন জানতে পারলাম রীতি মেনে তিন বছর বয়সেই আমার সঙ্গে বাবার বিয়ে হয়ে গিয়েছে, তখন পালিয়ে যেতে ইচ্ছে হয়েছিল।’
এই উপজাতির মধ্যে আরও একটা আজব চল রয়েছে। যদি অল্প বয়সে কোনও মহিলা বিধবা হয়ে যান, তবে তিনি তাঁর স্বামীর পরিবারের কারও সঙ্গেই ফের বিয়ে করেন। স্বামী হাট্টাকাট্টা হলে তিনি তাঁর স্ত্রী ও কন্যা দুজনকেই সুরক্ষিত রাখতে পারবেন – এই ধারণা থেকেই এই চলই হয়ে উঠেছে তাঁদের সংস্কৃতি। এখন বাবার ঔরসজাত ৩ সন্তানের মা অরোলা। আর তাঁর মায়ের আবার দুটি সন্তান।
ভারত ও বাংলাদেশ মিলিয়ে মান্ডি উপজাতির মানুষের সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ। এঁদের গারো উপজাতিও বলা হয়ে থাকে।

No comments

Powered by Blogger.