কংগ্রেস সুযোগ পেয়েও কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়েনি

দুর্নীতি ও কালো টাকার বিরুদ্ধে ‘লড়াই না করার জন্য’ বিরোধী দল কংগ্রেসকে দুষলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গতকাল শুক্রবার সকালে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের শেষ দিন বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠকে দেওয়া ভাষণে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ১৯৭১ সালেই এই সুযোগ কংগ্রেসের কাছে এসেছিল। কিন্তু তখন তারা সেটি গ্রহণ করেনি। গতকালও যে সংসদীয় অধিবেশন ভেস্তে যাবে বিজেপি নেতৃত্বের তা জানা ছিল। সেই কারণেই সকালে সংসদীয় দলের বৈঠকে নরেন্দ্র মোদি ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করেন। বলেন, কালো টাকার বাড়বাড়ন্ত ঠেকানোর জন্য এ ছাড়া অন্য উপায় ছিল না। এই ধরনের সুযোগ যে কংগ্রেসের কাছেও এসেছিল, সে কথা জানাতে সাবেক আমলা মাধব গোডবলের লেখা একটি বই থেকে উদ্ধৃতি দেন মোদি। বলেন, ১৯৭০ সালের গোড়ার দিকে ওয়াংচু কমিটির রিপোর্টে বড় নোট বাতিলের পরামর্শ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কাছে রাখা হয়েছিল। সেই রিপোর্টের রেশ ধরেই পরের বছর শীর্ষ নেতা ওয়াই বি চবন ইন্দিরার কাছে নোট বাতিলের প্রস্তাব রাখেন। সে কথা শুনে চবনকে ইন্দিরা বলেছিলেন, কংগ্রেস কি আর কোনো নির্বাচনে লড়বে না?
সেই একাত্তর সালে এই কাজটা ইন্দিরা করলে আজ দেশের হাল এমন হতো না বলে মন্তব্য করেন মোদি। তিনি আরও বলেন, সেই সময় সিপিএম নেতারাও নোট বাতিলের পক্ষে ছিলেন। অথচ আজ সেই দল বিরোধিতায় নেমেছে। নোট বাতিল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আলোচনা ও প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটির দাবিতে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন পুরোটাই ভেস্তে গেল। এত কম কাজ এবং নিত্য সভা মুলতবি অতীতে আর কখনো হয়নি। এর দায় পুরোপুরি বিরোধীদের ওপর চাপিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে মনমোহন সিং বারবার দুর্নীতি দূর করা ও কালো টাকার বিরুদ্ধে কথা বলতেন, তিনি দশ বছরের শাসনে এই বিষয়ে কিছুই করেননি। কংগ্রেসকে আক্রমণ করে মোদি বলেন, কংগ্রেস আমলে বোফর্স, টু-জি কিংবা কয়লা নিয়ে কেলেঙ্কারি হতো বলে বিরোধীরা আলোচনার দাবিতে সংসদ অচল রাখত। এখন সরকার পক্ষ কালো টাকা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে বিরোধীরা সংসদে অচলাবস্থা সৃষ্টি করছে। বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ সাংসদদের বলেন, ‘টানা এক সপ্তাহ ধরে আপনারা যে যার নির্বাচনী কেন্দ্রে চলে যান। মানুষদের বোঝান, নোট-বন্দির প্রয়োজন কতটা এবং এতে দেশের মানুষদের কী উপকার হবে।’ মোদি সরকারের ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট বাতিলের উদ্যোগ নোট-বন্দি হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে।

No comments

Powered by Blogger.