কোরবানির সময় পরিচ্ছন্নতা

পবিত্র ঈদুল আজহায় দেশের সর্বত্র একই সময়ে বিপুলসংখ্যক পশু কোরবানি করার ফলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার যে সমস্যা দেখা দেয়, তা মোকাবিলার প্রস্তুতি আগেই শুরু করা উচিত। গ্রাম-মফস্বলের তুলনায় রাজধানীতে এই সমস্যা বেশি প্রকট হয়ে থাকে; পরিচ্ছন্নতার জন্য বিশেষভাবে তৎপর না হলে মহানগরের অনেক পাড়া-মহল্লার পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে। কিন্তু সবাই যত্নবান ও দায়িত্বশীল হলে পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখেই পশু কোরবানির কাজ সমাধা করা সম্ভব। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কর্তৃপক্ষ গত বছরের মতো এবারও পশু কোরবানির জন্য কিছু স্থান নির্ধারণ করে ওই সব নির্ধারিত স্থানেই পশু কোরবানি করার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। আমরা দেখেছি, গত ঈদুল আজহায় সীমিত আকারে হলেও নগর কর্তৃপক্ষের আহ্বানে সাড়া দিয়ে নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি করা হয়েছে। ফলে কিছু এলাকার দৃশ্য অপেক্ষাকৃত পরিচ্ছন্ন ছিল। তবে দুই সিটি করপোরেশনকে এ ব্যাপারে জোর প্রচারণা চালাতে হবে, লোকজনকে উৎসাহিত করতে হবে।
তবে এ কথা ঠিক যে সম্ভবত নির্ধারিত স্থানের বাইরেই বেশির ভাগ পশু কোরবানি হবে। এ জন্য দুই সিটি করপোরেশনকে মহানগরের সব পাড়া-মহল্লা থেকে কোরবানির পশুর বর্জ্য দ্রুত সরিয়ে ফেলার জন্য তৎপর থাকতে হবে। নগরবাসীকে সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে হবে। কোরবানির পর পশুর বর্জ্য যত্রতত্র না ফেলে ডাস্টবিনে ফেলতে হবে। তা ছাড়া কোরবানির জায়গার রক্ত, মল-মূত্র ইত্যাদি সঙ্গে সঙ্গেই ধুয়ে ফেলতে হবে। প্রতিটি পাড়া-মহল্লার মানুষ নিজ নিজ দায়িত্বে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে উদ্যোগী হলে সিটি করপোরেশনের কাজ অনেকটাই সহজ হয়ে আসতে পারে। পশু কোরবানিকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগরের পরিবেশে যে বিশৃঙ্খলা, অপরিচ্ছন্নতা ও দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়, তা কোনো অপরিহার্য বাস্তবতা নয়। সবাই মিলিতভাবে সচেষ্ট হলে পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখেই কোরবানির কাজ সমাধা করা যায়। ঈদুল আজহার পবিত্রতা রক্ষার অবিচ্ছেদ্য অংশ হোক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সংস্কৃতি।

No comments

Powered by Blogger.