ব্রেক্সিট কার্যকরের ইতিবাচক পরিকল্পনা নেই

লন্ডনের সাবেক মেয়র বরিস জনসন ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়া কার্যকর করতে ইতিবাচক কোনো পরিকল্পনা না থাকার অভিযোগ তুলেছেন ক্যামেরন সরকারের বিরুদ্ধে। ব্রেক্সিট অর্থাৎ ইইউ ত্যাগের পক্ষে প্রচার চালানো ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা বরিস জনসনকে হবু প্রধানমন্ত্রী মনে করা হয়ে এলেও আকস্মিকভাবে তিনি প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। বরিস জনসন গতকাল সোমবার বলেন, যাঁরা ইইউ জোটে থাকতে চেয়েছেন তাঁদের ‘উন্মত্ততা’ পেয়ে বসেছে। ব্রেক্সিটের প্রভাব সম্পর্কে সত্যি কথাটা সরকারের ব্যাখ্যা করা উচিত। ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় প্রকাশিত অভিমতে বরিস জনসন লেখেন, ‘জনসংখ্যার একাংশের মধ্যে একধরনের উন্মত্ততা আছে, সংক্রামক শোকের মতো; যা আমি ১৯৯৭ সালের প্রিন্সেস অব ওয়েলসের (ডায়ানা) মৃত্যুর পর দেখেছিলাম।’ ব্রেক্সিটের পক্ষের এই অন্যতম শীর্ষ নেতা বলেন, ‘সরকারের উচিত যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের স্বার্থে এটি (ব্রেক্সিট) কী করে কার্যকর করা যায়, তা ব্যাখ্যা করা। আমরা সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি ও নতুন প্রধানমন্ত্রী আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারব না।’ ইইউ ত্যাগের প্রভাবের আশঙ্কা নিয়ে ‘মাত্রাজ্ঞানহীনভাবে’ বলা হয়েছে বলে উল্লেখ করে বরিস জনসন বলেন, ‘শেয়ারবাজারে ধস নামেনি। জরুরি বাজেটে সরকারের ব্যয় হ্রাস করা এবং কর বাড়ানোর যে কথা অর্থমন্ত্রী জর্জ অসবর্ন ও তাঁর সমর্থকেরা বলেছিলেন, তা বাস্তবে পরিণত হয়নি।’ স্কটিশদের গণভোট ঠেকানো ঠিক হবে না: এদিকে স্কটিশ কনজারভেটিভ দলের নেতা বলেছেন, যুক্তরাজ্য থেকে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার দ্বিতীয় গণভোট যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর আটকানো উচিত হবে না।
ইইউতে থাকা না-থাকা নিয়ে গত ২৩ জুনের গণভোটে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসবাসীর অধিকাংশ ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে ভোট দিলেও জোটে থেকে যাওয়ার পক্ষে ভোট দেন বেশির ভাগ স্কটিশ। এর মধ্য দিয়ে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার বিষয়টি আবারও সামনে আসে। কারণ, এর আগে ২০১৪ সালের গণভোটে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার পক্ষ জেতেনি অনেকটা সেখানকার অধিবাসীদের ইইউতে থেকে যাওয়ার ইচ্ছার জন্যই। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির স্কটল্যান্ড শাখার নেতৃত্ব দেওয়া রুথ ডেভিসন বলেন, ব্রিটিশ সরকারের উচিত হবে না স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার প্রশ্নে আরেকটি গণভোটকে অগ্রাহ্য করা। কারণ, এটি গণতান্ত্রিক হবে না। যদিও তিনি স্কটল্যান্ডে আরেকটি গণভোট আয়োজনের বিরুদ্ধে জোর প্রচারণা করবেন। বিবিসি টিভিকে রুথ ডেভিসন এ-ও বলেন, সাংবিধানিকভাবেই যুক্তরাজ্যের সরকার এটি রুখতে পারে না। গণভোটে ব্রেক্সিটের পক্ষে রায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হতে যাওয়া প্রার্থীরা ইতিমধ্যে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার প্রশ্নে দ্বিতীয় গণভোটের সম্ভাবনায় পানি ঠেলে দিয়েছেন। স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টার্জন ব্রেক্সিটের সিদ্ধান্তের পর নতুন গণভোট যে ‘খুব সম্ভাব্য’ এমনটাই ইঙ্গিত করেছেন। তবে তিনি এ-ও জানান, আগে স্কটল্যান্ডকে ইইউতে রাখার সব চেষ্টাই করা হবে।

No comments

Powered by Blogger.