ব্রিটিশ পুলিশের ব্যর্থতায় এমপির প্রাণ গেল!

খুন হওয়ার তিনমাস আগে থেকেই ইমেইলে হত্যার হুমকি পেয়ে আসছিলেন ব্রিস্টলের ব্রিটিশ এমপি জো কক্স। পুলিশকে অভিহিতও করেছিলেন তিনি তা। ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাসও দিয়েছিল পুলিশ। তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশ সক্রিয় হওয়ার আগেই আততায়ীরা তাকে খুন করে ফেলল। বারবার অভিযোগ জানানোর পর পুলিশ তাকে নিরাপত্তা দেয়ার কথা ভাবলেও শেষ পর্যন্ত কোনো সহযোগিতাই করেনি তারা। শুক্রবারে ডেইলি এক্সপ্রেস জানিয়েছে এ কথা। পত্রিকাটি বলছে, এমপিকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ বাহিনী। ইন্টারনেটে নিয়মিত হেট ম্যাসেজ দিয়ে একরকম বলেকয়েই জো কক্সকে হত্যা করেছে এখন পর্যন্ত অজ্ঞাত ব্যক্তিটি অথবা ব্যক্তিরা। তবে এ ব্যাপারে পুলিশ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। হত্যা রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে তারা।
জো কক্সের কাছের এক সূত্রের বরাত দিয়ে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানিয়েছে দ্য টাইমস। শোক প্রকাশের জন্য সংসদ অধিবেশন ডেকেছেন ক্যামেরন : জো কক্সের অকাল মৃত্যুতে শোক প্রকাশের জন্য সোমবার সংসদ অধিবেশন ডেকেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। জো কক্সের আক্রান্ত হওয়ার স্থান ব্রিস্টলে শুক্রবারের জনসমাগমে বক্তব্য দেন ক্যামেরন। এ সময় তিনি বলেন, ‘ঘৃণা, বিভাজন এবং অসহনশীলতাকে সমাজ থেকে তাড়িয়ে দিতে হবে।’ এ সময় তার পাশে ছিলেন লেবার দলের প্রধান জেরেমি করবিন। তিনি ক্যামেরনের প্রস্তাবকে সমর্থন করেন। স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, ‘থমাস মার বা স্থানীয়ভাবে টমি নামে পরিচিত এক সন্দেহভাজনকে ধরেছে পুলিশ। তার বাড়ি নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়েছে। তল্লাশি চালানো হচ্ছে বাগানে।’
বেক্সিট গণভোটের প্রচারণা স্থগিত : ইউরোপীয়ান ইউনিয়নে ব্রিটেনের থাকা না থাকার ব্যাপারে গণভোটের এক সপ্তাহ আগে কক্সের মৃত্যুতে থেকে গেছে পক্ষে-বিপক্ষের প্রচারণা। জো কক্স এতদিন ধরে ব্রেক্সিটের বিপক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। কক্সের সমর্থক ও নির্বাচনী প্রচারণা কর্মী হিসেম বিন আবদুল্লাহ বলেন, ‘১৯৯০ সালে আইরিশ আর্মির গাড়ি বোমা হামলায় কোনো ব্রিটিশ এমপির মৃত্যুর পর এটাই প্রথম এ ধরনের ঘটনা। এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক হতে পারছে না কেউ।’ বিশপ জোনাথন গিবস বলেন, ‘তার দুই সন্তানের জন্য আমার হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে।’ এদিকে ব্রিস্টলের ইয়র্কশায়ার গ্রামের মানুষরা বৃহস্পতিবার রাতে তাদের নির্বাচিত এমপির কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে। জাতীয়তাবাদীদের হাতে খুন হতে পারেন এই মানবতাকর্মী : গার্ডিয়ানের বিশেষ সম্পাদকীয়তে উঠে এসেছে জো কক্সের জীবনের দাতব্য সহায়তামূলক কর্মগুলো। নারী, অভিবাসী ও শরণার্থী ইস্যুতে বৈষম্যদূরীকরণে প্রচারণা চালাতেন তিনি। এ কারণে কট্টরপন্থী জাতীয়তাবাদীদের আক্রোশের শিকার হতে পারেন বলেও ধারণা করা হচ্ছে। তাকে হত্যার সময় ব্রিটেন ফার্স্ট বলে খুনি চিৎকার করে ওঠে বলে জানায় পত্রিকাটি।

No comments

Powered by Blogger.