যুক্তরাজ্য মনে করে বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের বড় হুমকি রয়েছে

যুক্তরাজ্য মনে করে বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের বড় হুমকি রয়েছে। এই সময়ে বৃটিশ নাগরিকদের এ দেশে অবস্থান এবং চলাফেরায় সাদামাটাভাব বজায় রাখাসহ পশ্চিমা নাগরিকদের সমবেত হওয়ার স্থান বা অনুষ্ঠানগুলোতে অংশগ্রহণ সীমিত রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিশেষ করে গত ২৮শে সেপ্টেম্বর রাজধানীর কূটনৈতিক জোনে ইতালীয় এনজিও কর্মী সিজারকে গুলি করে হত্যার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, দক্ষিণ কোরিয়াসহ পূর্ব-পশ্চিমের অনেক দেশ তাদের নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা বা (ট্রাভেল এলার্ট)   নিয়মিত হালনাগাদ (আপডেট) করছে। সর্বশেষ গতকাল (২রা অক্টোবর) পর্যন্ত বলবৎ থাকা বৃটেনের ভ্রমণ সতর্কতা (ট্রাভেল এলার্ট)-এ দেশটির নাগরিকদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে- বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের বড় হুমকি রয়েছে। এই সময়ে আপনারা জনসমক্ষে চলাফেরায় নিজেদের সাদামাটাভাব (লো প্রোফাইল) বজায় রাখুন এবং হোটেল কনফারেন্স সেন্টারগুলোসহ যে সব স্থান বা অনুষ্ঠানে পশ্চিমা নাগরিকদের সমবেত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সেগুলোতে অংশগ্রহণ সীমিত রাখুন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বৃটেন তার পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হুগো সোয়ারের ঢাকা সফরও স্থগিত করেছে। আজ থেকে তার ৩ দিনের সফর শুরুর আয়োজন প্রায় চূড়ান্ত ছিল। এদিকে গুলশানে বিদেশী নাগরিক খুনের পর নিজ দেশের নাগরিকদের জন্য জারি করা ভ্রমণ সতর্কতা শিথিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইতালি। ১লা অক্টোবর ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের হালনাগাদি করা ভ্রমণ বার্তায় আগের অবস্থান শিথিলের ঘোষণা দেয়া হয়। সেখানে বলা হয়- ২৯শে সেপ্টেম্বর সকাল পর্যন্ত বলবৎ থাকা ‘শেল্টার ইন প্লেস’ (বাড়ি, কর্মস্থল বা কোন ভবনের অভ্যন্তরে তাৎক্ষণিক অবস্থান এবং সেখানে গতিবিধি সীমাবদ্ধ রাখা) নির্দেশ উঠিয়ে নিয়েছে দূতাবাস। তবে শহরে চলাফেরায় দূতাবাস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশনা থাকছে। বাংলাদেশে বসবাসকারী মার্কিন নাগরিকদের নিজ সুবিবেচনা মোতাবেক সতর্কতা অবলম্বন করা অব্যাহত রাখা উচিত। একই সঙ্গে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে তাদের সতর্ক থাকা উচিত এবং স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সংক্রান্ত ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে সতর্ক ও অবগত থাকা জরুরি। পায়ে হাঁটা, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, রিকশা কিংবা ভাড়ায় চালিত যান ব্যবহার ও ফুটপাতে অরক্ষিত সকল ধরনের যাতায়াতের মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা অবলম্বন করতে মার্কিন সরকারি কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারদের নির্দেশ দেয়া হয় হালনাগাদ করা সর্বশেষ ভ্রমণ বার্তায়। স্থানীয় নিরাপত্তা কার্যালয় থেকে অনুমতি পাওয়া ব্যতিরেকে বাংলাদেশে বড় ধরনের কোন জনসমাবেশে যোগ দিতে বারণ করা হয়েছে। এ নির্দেশনা আন্তর্জাতিক হোটেলে অনুষ্ঠিত কোন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য বলে বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে। ওদিকে ঢাকাস্থ ইতালি দূতাবাসের ওয়েব সাইটে তাদের নাগরিক খুনের পর সর্বোচ্চ সতর্কতা বা রেড এলার্ট জারি করা হয়েছিল। কয়েক ঘণ্টা পর অবশ্য তাতে লাল হরফের বদলে কালো হরফ এবং কিছুটা সংশোধনী আনা হয়। প্রথম বার্তায় ঘটনায় আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস-এর দায় স্বীকারের বিষয়টি উল্লেখ ছিল। কিন্তু পরে তা ফেলে দেয়া হয়। গতকাল থেকে দূতবাসের ওয়েবসাইটে ওই বার্তা বা নোটিশটি আর দৃশ্যমান নেই।

No comments

Powered by Blogger.