১৯টি চুক্তিই ভারতের প্রয়োজনে হয়েছে

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরে তিস্তা ও ফেনী নদীর পানি বন্টন নিয়ে আলোচনা না হওয়ায় জনগন হতাশ বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর মকবুল আহমাদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পাদিত ১৯টি চুক্তি, প্রটোকল ও সমঝোতা সারক কার্যত ভারতের প্রয়োজনেই হয়েছে। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরে দেশের সাড়ে ১৬ কোটি মানুষ দুই দেশের বিদ্যমান সমস্যার সমাধান হবে বলে বুকভরা আশা নিয়ে অপেক্ষা করছিল। কিন্তু দ্বিপাক্ষীক বাণিজ্য, উপকূলীয় জাহাজ চলাচল ও দুই রুটে বাস চলাচলের ৪টি সহ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১৯টি চুক্তি, প্রটোকল ও সমঝোতা সারক সাক্ষর হয়েছে। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মংলা সামুদ্রিক বন্দর ব্যবহারের সুযোগ পাবে ভারত। বাংলাদেশের ওপর দিয়ে উত্তর ভারতে যাওয়ার ট্রানজিট সুবিধা পাবে উত্তর-পূর্ব ভারত। এ সবই কার্যত ভারতের প্রয়োজনেই সম্পাদিত হয়েছে। জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর বলেন, নরেন্দ্র মোদী দেশের সীমান্তবর্তী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের তার সফরসঙ্গী হিসেবে নিয়ে আসায় সঙ্গত কারণেই জনগণ আশা করেছিল এ সফরে তিস্তা নদী ও ফেনী  নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা পাবে বাংলাদেশ। কিন্তু এ দুটি নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা পাওয়ার বিষয়ে কোন আলোচনা না হওয়ায় জনগণ হতাশ হয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের অভিন্ন নদীসমূহের পানি বন্টনের কোন সমস্যার সমাধান না হওয়ায় বাংলাদেশ মরুভূমি হতে চলেছে।দেশের অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এছাড়া বাংলাদেশের জন্য এক গুরুতর সমস্যা হচ্ছে ভারতীয় বিএসএফ কর্তৃক সীমান্তে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশীদের হত্যা। প্রধানমন্ত্রীর সফরে এ সকল সমস্যার সমাধান হবে বলে জনগণ আশা করেছিল। কিন্তু তারও কার্যকর কোন পদক্ষেপ জনগণ দেখতে পায়নি।
তিনি বলেন,দেশের জনগণ, বিশ্ববাসীর এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের নিকট এটা স্পষ্ট যে, বর্তমান সরকার ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারী  নির্বাচনের নামে একটি প্রহসনের আয়োজন করে ক্ষমতা দখল করেছে। শতকরা ৫ ভাগ ভোটার ওই নির্বাচনে ভোট দেয়নি। এই নির্বাচনের বিষয়ে জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে সকল দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচনের দ্রুত আয়োজনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এদেশের জনগণ আশা করেছিল জনগণের প্রত্যাশা ও গণতান্ত্রিক দেশসমূহের আহ্বানের পাশাপাশি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এ সফর বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় জনগণের প্রত্যাশা পুরণ করবে। কিন্তু দেশের জনগণের নিকট গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কার্যকর কোন সহায়ক পদক্ষেপ দৃশ্যমান হয়নি। সার্বিকভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর থেকে দেশের জনগণের প্রত্যাশা পুরণ না হওয়ায় জনগণ হতাশ হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.