বিশেষ লেখা-মঙ্গল আলোয় উদ্ভাসিত বাংলাদেশ by ইমদাদুল হক মিলন

'আংশিক নয়, পুরো সত্য'- এই মন্ত্র নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল 'কালের কণ্ঠ'। দেখতে দেখতে তিন বছর পূর্ণ হলো সেই যাত্রার। তিন বছর পূর্তির শুভলগ্নে আমাদের প্রিয় পাঠক, লেখক, বিজ্ঞাপনদাতা, হকার এবং পত্রিকাসংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।
সবার অকুণ্ঠ সহযোগিতায় মসৃণ হয়েছে আমাদের পথচলা। সবার ভালোবাসায় আমরা সমৃদ্ধ হয়েছি। নিশ্চয় কালের কণ্ঠের প্রতি এই সহযোগিতা এবং ভালোবাসা অক্ষুণ্ন থাকবে সবার, আমাদের এগিয়ে চলার পথ আরো মসৃণ হবে।
পথচলার শুরু থেকেই দেশের সাধারণ মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি আমরা। কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলের মুখপত্র হওয়ার চেষ্টা করিনি। আমরা পুরো সত্যকে ধারণ করেছি। সত্য আমাদের এক শক্তি, আরেক শক্তি দেশের সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা আমরা ভাগ করে নিয়েছি। যে কারণে জনদুর্ভোগ বিষয়টিকে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। জনদুর্ভোগের চিত্র প্রতিনিয়তই পাঠকের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। সেই চেষ্টা কতটা সফল হয়েছে, পাঠকই তা ভালো বলতে পারবেন। এই বিচারের ভার আমরা পাঠকের ওপর ছেড়ে দিচ্ছি।
আমরা সর্বান্তঃকরণে আলোকিত বাংলাদেশ চাই।
পজিটিভ বাংলাদেশ। আমরা চাই দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ, রাজনৈতিক হানাহানির ঘোর বিরোধী আমরা। হাজার রকমের জনদুর্ভোগ থেকে আমরা মুক্তি চাই। আমরা চাই আইনের প্রকৃত শাসন, সুশৃঙ্খল বাংলাদেশ। বাংলাদেশে যেন আর কখনো না ঘটে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা, গুম আতঙ্কে যেন না ভুগতে হয় কাউকে, অপহরণ আতঙ্কে যেন না ভুগতে হয়। মুক্তিপণ দিয়ে যেন সন্তানকে ফিরিয়ে আনতে না হয় কোনো পিতাকে। চাপাতির কোপে আর যেন প্রাণ দিতে না হয় নিরীহ বিশ্বজিতদের, রামুর মতো ঘটনা যেন আর কখনই না ঘটে এই দেশে। গার্মেন্ট ফ্যাক্টরির আগুনে যেন আর একটিও প্রাণ কখনো না যায়, ফ্লাইওভারের গার্ডার যেন আর ভেঙে না পড়ে। আমরা নারী নির্যাতনমুক্ত বাংলাদেশ চাই। খাদ্যের বিষক্রিয়ায় ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগোতে চাই না। আমরা যানজটমুক্ত রাজধানী চাই, সড়ক দুর্ঘটনামুক্ত দেশ চাই। ক্ষমতাশীন এবং বিরোধীদল যে যার সঠিক ভূমিকা পালন করবে, শুধু নিজ নিজ দলের কথা না ভেবে নেতারা ভাববেন দেশের মানুষের কথা। মানুষের কল্যাণই দেশের কল্যাণ।
বাংলাদেশ অতি সম্ভাবনার একটি দেশ। স্বাধীনতার পর থেকে হাজারো সমস্যায় জর্জরিত থাকার পরও দেশ এগিয়েছে অনেক। কৃষি এবং শিল্পক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে, শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে, জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে, উন্নতি হয়েছে যোগাযোগক্ষেত্রে। পোশাকক্ষেত্রে উন্নতি, টেলিযোগাযোগক্ষেত্রে উন্নতি, সাধারণ মানুষের জীবনের মানে উন্নতি, এ রকম বহু অর্জন আমাদের। এই সব দিক বিবেচনা করলে বাংলাদেশ এখন আর পিছিয়ে পড়া দেশ নয়।
কিছুদিন আগে জানা গেল, বাংলাদেশ পৃথিবীর ১১তম সুখী দেশ। এও এক অর্জন। আমাদের ক্রিকেট দল পৃথিবীর কাছে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। আমাদের ড. ইউনূস নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন, ফজলে হাসান আবেদ 'স্যার' উপাধী পেয়েছেন। আমাদের চার তরুণ-তরুণী এভারেস্ট জয় করেছেন। পৃথিবীর বড় দেশগুলোতে বাংলাদেশি বহু মানুষ দুর্দান্তসব কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখছেন। বাঙালি এগোচ্ছে, বাংলাদেশ এগোচ্ছে।
শুধু রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা পারে এই দেশকে আরো এগিয়ে নিতে, আরো সমৃদ্ধ করতে। আমরা চাই, বাংলাদেশ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার দেশ হোক, প্রকৃত গণতান্ত্রিক দেশ হোক। আমরা চাই আলোকিত বাংলাদেশ। মঙ্গল আলোয় উদ্ভাসিত বাংলাদেশ।

No comments

Powered by Blogger.