তিন বছর পেরিয়ে-সামাজিক দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট

পেরিয়ে গেল আরো একটি বছর। দেখতে দেখতে তিনটি বছর পার করে দিল কালের কণ্ঠ। ২০১০ সালের ১০ জানুয়ারি 'আংশিক নয়, পুরো সত্য' প্রকাশের অঙ্গীকারে পাঠকের হাতে হাতে উঠে আসা নতুন দৈনিকটি আজ পা ফেলছে চতুর্থ বছরে।
পাঠকের ভালোবাসায় তিন বছরের পথচলা, এই চতুর্থ বর্ষে পদার্পণ। একটি নতুন দৈনিকের আত্মপ্রকাশের সময় পাঠকমহলে যে আগ্রহ ছিল, আজ চতুর্থ বর্ষেও সেই আগ্রহের কোনো কমতি নেই।
সংবাদপত্রের প্রথম বিবেচনা হচ্ছে পাঠক। পাঠকের কাছে পৌঁছা যেকোনো সংবাদপত্রের প্রধান লক্ষ্য। কারণ সংবাদপত্রের প্রাণ হচ্ছে তার পাঠক। একটি সংবাদপত্র সম্পর্কে পাঠকের আগ্রহ থাকে। সংবাদপত্রের কাছে পাঠকের অনেক চাহিদাও থাকে। পাঠকের সেই আগ্রহের জায়গাটি স্পর্শ করা, জানার তৃষ্ণা মেটানোই একটি পত্রিকার আরাধ্য হওয়া উচিত। কালের কণ্ঠ বরাবরই এ ব্যাপারে সচেষ্ট থেকেছে। চেষ্টা করেছে পাঠকের জ্ঞানের তৃষ্ণা ও জানার আকাঙ্ক্ষা মিটিয়ে পাঠকহৃদয়ে একটি ভালোবাসা ও ভালো লাগার জায়গা করে নিতে। গত তিন বছরে পাঠকের তৃষ্ণা নিবারণের ভেতর দিয়ে তার মন স্পর্শ করতে চেয়েছে কালের কণ্ঠ। সব সময় চেষ্টা করেছে পাঠকের চাহিদা পূরণে। সংবাদ পরিবেশনে কোনো পক্ষপাতিত্ব নয়, সত্য তুলে ধরতে পিছপা হয়নি। ঘটনার আড়ালে যে ঘটনা, তা তুলে ধরার ঝুঁকি নিতেও দ্বিধা করেনি।
একুশ শতকে, আজকের দিনে পৃথিবী অনেক অগ্রসর। প্রতিদিনই অগ্রসর হচ্ছে সমাজ ও মানুষ। শুরু থেকেই অগ্রসরমাণ এই সমাজের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কালের কণ্ঠের পথচলা; পালন করেছে সামাজিক দায়িত্ব। কারণ সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি আজকের দিনে একটি সংবাদপত্রকে সামাজিক দায়িত্ব পালন করতে হয়। একটি সামাজিক সংবাদপত্রই পারে দ্রুত পাঠকপ্রিয় হয়ে উঠতে। সামাজিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি একটি দায়িত্বশীল নতুন প্রজন্ম গড়ে তোলার কাজটিও করেছে কালের কণ্ঠ। গড়ে তুলতে চেয়েছে সমাজসচেতন নতুন প্রজন্ম। হারিয়ে যাওয়া সামাজিক মূল্যবোধ ফিরিয়ে আনার কাজেও কালের কণ্ঠের ভূমিকা প্রশংসনীয়। আর এসব করা সম্ভব হয়েছে পাঠকদের কারণে। পাঠকের চাহিদা কালের কণ্ঠকে দায়িত্বশীল হতে সাহায্য করেছে। সামাজিক দায়িত্বশীলতার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ সমুন্নত রাখার কাজটিও করেছে কালের কণ্ঠ। ২০১০ সালে আমরা নারী মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানিয়েছিলাম। ২০১১ সালে সম্মান জানানো হয়েছে সেই শহীদজননীদের, যাঁরা একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে উৎসর্গ করেছিলেন তাঁদের সন্তানদের। একাত্তরে যে বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে ছুটে গিয়েছিলেন যুদ্ধের ময়দানে, সেই বীরদের অনেকেই আজ জীবনযুদ্ধে পরাজিত। সেই বীরদের নিয়ে গত ডিসেম্বরে বিজয়ের মাসজুড়ে প্রকাশিত হয়েছে প্রতিবেদন। কালের কণ্ঠ সব সময় পাঠকের আগ্রহের কেন্দ্রে থাকতে চেয়েছে, থেকেছে।
প্রকাশের প্রথম দিন থেকেই মুক্তবুদ্ধির কণ্ঠ হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে চেয়েছে কালের কণ্ঠ। মুক্তমনের মানুষের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়েই পথ চলতে চেয়েছে, চলেছে। গত তিনটি বছর অঙ্গীকার থেকে বিচ্যুত হয়নি বলেই সমাজের প্রতিটি স্তরে কালের কণ্ঠ একটি বিশেষ জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়েছে। সংবাদপত্রের কাছে পাঠকের অন্তহীন প্রত্যাশা। সেই প্রত্যাশা পূরণে সব সময় সচেষ্ট থেকেছে কালের কণ্ঠ। আংশিক নয়, পুরো সত্য প্রকাশের অঙ্গীকার নিয়ে কালের কণ্ঠ কখনো কলমের সঙ্গে বিবেকের সত্যনিষ্ঠ সাঁকো নির্মাণ প্রয়াসে আপস করেনি। দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থবিরোধী, সুচেতনাবিনাশী, অনৈতিক সব কিছুকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে কালের কণ্ঠ।
আজ কালের কণ্ঠের তিন বছর পূর্তি ও চতুর্থ বর্ষের যাত্রা শুরুর দিনে আমাদের অসংখ্য পাঠক, লেখক, শুভানুধ্যায়ী, বিজ্ঞাপনদাতা, বিপণনকর্মী- সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন। সবার মিলিত প্রয়াসেই এই পথপরিক্রমা। এই পথপরিক্রম সবার সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব ছিল না। আগামী দিনেও সবাইকে পাশে চাই আমরা। পাড়ি দিতে চাই আরো অনেক পথ।

No comments

Powered by Blogger.