টি-টোয়েন্টি গাপটিল-বীরত্বে কিউইদের জয়

বীরত্ব শব্দটা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সঙ্গে ঠিক যায় না। শুরুর মতো আর ‘ফান’ ক্রিকেট নেই, তবে ক্রিকেটীয় শৌর্য-বীর্যে টি-টোয়েন্টিকে এখনো সেভাবে বিবেচনায় নেওয়া হয় না।
কিন্তু পরশু ইস্ট লন্ডনে মার্টিন গাপটিল যা করলেন, সেটিকে ‘বীরোচিত’ বললে ভুল বলা হয় না একটুও!
পাকস্থলীর পীড়ায় প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বসে ছিলেন বাইরে। পুরোপুরি সুস্থ হননি, সিরিজে পিছিয়ে পড়া দলকে উদ্ধারে পরশু তবু নেমে গেলেন মাঠে। অসাধারণ এক ইনিংসে দলকে জিতিয়ে গাপটিল দেখিয়ে দিলেন, কেন তাঁকে খেলাতে মরিয়া ছিল দল। এক দিন আগের ৮ উইকেট হারের প্রতিশোধ নিয়েছে নিউজিল্যান্ড ৮ উইকেটে জিতে।
তবে ব্যবধান যা বলছে, জয় এতটা সহজ ছিল না মোটেও। শেষ বলে নির্ধারিত হয়েছে ম্যাচের ভাগ্য। জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ৪ রান, সেঞ্চুরির জন্য গাপটিলের ৩। ররি ক্লেইনভেল্টের লো ফুলটসকে কাভার বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে দুটি কাজই সেরেছেন গাপটিল। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটি নবম সেঞ্চুরি। তবে পরে ব্যাট করে মাত্র দ্বিতীয়! প্রথমটিও ছিল নিউজিল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচেই, রিচার্ড লেভির ১১৭। অধিনায়ক ম্যাককালাম ঘুরে দাঁড়ানোর কৃতিত্ব দিয়েছেন গাপটিলকেই। আর গাপটিলের কৃতজ্ঞতা সদ্য সাবেক অধিনায়কের প্রতি, ‘রস টেলরের সঙ্গে আমার নিয়মিত যোগাযোগ আছে। ও আমাকে বলেছে নিরুদ্বেগ থেকে স্রেফ নিজের মতো খেলে যেতে।’
১৬৯ রান তাড়ায় একজনেরই ১০১, এটাই বলে দিচ্ছে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস কতটা গাপটিলময়। ফ্লাডলাইট বিপর্যয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে ঘণ্টা খানেক বন্ধ ছিল খেলা। প্রোটিয়ারা ১৯ ওভারে ১৬৫ করলেও ডাকওয়ার্থ-লুইসে কিউইদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৬৯। গাপটিলের সঙ্গে প্রথম ২ উইকেটে ৭৬ ও ৭৩ রানের দুটি জুটি হয়েছে, যাতে রব নিকোল ও ব্রেন্ডন ম্যাককালামের অবদান ২৫ ও ১৭! আর অবিছিন্ন তৃতীয় উইকেট জুটিতে মানরোর অবদান ৮। কখনোই খুব বেশি খ্যাপাটে হয়নি গাপটিলের ব্যাট, কিন্তু প্রয়োজনীয় রানরেটটাকে নাগালের বাইরেও যেতে দেননি। যখনই প্রয়োজন, ঠিকই বের করেছেন চার-ছয়।
শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১১। প্রথম দুই বলে দুটি সিঙ্গেল, পরের দুই বলে দুটি ডাবল। পঞ্চম বলে সিঙ্গেল নিয়ে মানরো শেষের দায়িত্বটুকুও তুলে দেন গাপটিলের হাতে। ওই বলটাতে চার মারতে না পারলে হয়তো ট্র্যাজেডির নায়ক হতে হতো। কিন্তু নিজের হাতে গড়া প্রেক্ষাপটের শেষটাও নিখুঁতভাবে করেছেন ২৬ বছর বয়সী ওপেনার। নয়টি চার ও ছয় ছক্কায় ৬৯ বলে করেছেন ১০১। প্রথমে ব্যাট করে দক্ষিণ আফ্রিকা ১৬৫ তুলেছিল অধিনায়ক ফ্যাফ ডু প্লেসিস (৪৩ বলে ৬৩) ও হেনরি ডেভিডসের (৩৮ বলে ৫৫) ফিফটি এবং শেষ দিকে ডেভিড মিলারের ঝড়ে (১৮ বলে ৩৩)।
কাল বক্সিং ডেতে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি, পোর্ট এলিজাবেথে। ওয়েবসাইট।

No comments

Powered by Blogger.