মাথায় গুলিতেই গাদ্দাফির মৃত্যু :ময়নাতদন্ত রিপোর্ট

লিবিয়ার ক্ষমতাচ্যুত শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এতে বলা হয়, মাথায় গুলির আঘাতেই তার মৃত্যু হয়। গতকাল রোববার মিসরাতায় কয়েকজন লিবীয় ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার গাদ্দাফির লাশের ময়নাতদন্ত করেন। এদিকে ৪৮ ঘণ্টা পার হওয়ার পরও গতকাল রোববার পর্যন্ত গাদ্দাফিকে কবর দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারেনি দেশটির নতুন নেতৃত্ব জাতীয় অন্তর্বর্তী পরিষদ (এনটিসি)।এ পরিস্থিতিতে গাদ্দাফির জন্মশহর সিরতের অনেকেই নাখোশ।


তারা মনে করছেন, গাদ্দাফিকে নৃশংসভাবে হত্যা এবং তার লাশ দাফন নিয়ে এনটিসি নেতারা যে নাটক শুরু করেছেন, তা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম। এ থেকেই বোঝা যায় এনটিসি লিবিয়াকে ভবিষ্যতে বিপ্লবের কোন পথে নিয়ে যাবে। খবর সিএনএন, এএফপি ও দ্য টেলিগ্রাফ অনলাইনের।
গাদ্দাফির লাশের ময়নাতদন্তকারী টিমের ডাক্তারদের একজন ওসমান আল জিনতানি। তিনি বলেন, 'মিসরাতা হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। এতে দেখা যায়, মাথায় গুলির আঘাতে তার মৃত্যু হয়। তিনি আরও জানান, ময়নাতদন্তের সময় সেখানে বিদেশি কোনো নিরপেক্ষ ব্যক্তির উপস্থিতি ছিল না।'
গাদ্দাফিকে কাছ থেকে গুলি করা হয়েছে, নাকি তিনি ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন_ এসব প্রশ্নে ডাক্তার ওসমান আল জিনতানি বাড়তি কোনো তথ্য দিতে পারেননি। তবে তিনি বলেছেন, এই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এখন লিবিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসে জমা দেওয়া হবে। এরপর সরকার তা জনসাধারণকে জানাবে।
মিসরাতা সামরিক কাউন্সিলের মুখপাত্র ফাথি আল বাসাঘ বলেন, 'রোববার সকাল ১০টায় গাদ্দাফির লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। যদিও তার লাশের ময়নাতদন্ত করার পরিকল্পনা আমাদের ছিল না; কিন্তু ত্রিপোলি থেকে এনটিসি নেতাদের অনুরোধে তা করতে হয়েছে।' মুখপাত্রের দাবি, চিকিৎসা বিজ্ঞানের সব নিয়মবিধি মেনেই গাদ্দাফির লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। এতে দেখা গেছে, গুলিতে তিনি নিহত হয়েছেন।
গাদ্দাফির জন্মশহর সিরতে থেকে দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদক অ্যান্ড্রু গিলিগান শনিবার জানান, গাদ্দাফিকে এভাবে হত্যা করা এবং লাশ দাফনে এনটিসির গড়িমসিতে তার জন্মশহর সিরতের লোকজন নাখোশ। এনটিসি যোদ্ধাদের এই আচরণে সিরতেবাসী যারপরনাই ত্যক্তবিরক্ত। শহরটিতে এখনও জনজীবনের স্বাভাবিক গতি-প্রকৃতি ফিরে আসেনি। দোকানপাট এখনও প্রায় বন্ধই। কফি হাউস ও চা স্টলগুলোতে জমছে না আড্ডা। বাজার ও বিপণি বিতানগুলোতেও লোক সমাগম কম। মানুষ ঘরে বসে শুধু টিভি দেখছে এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। এই থমথমে পরিস্থিতির মধ্যেও যারা ঘরের বাইরে আসছেন তারা গোমরামুখেই থাকছেন। কারও সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলছেন না।
সিরতের বাসিন্দা মোহাম্মদ হামেদ। তিনি বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, গাদ্দাফির লাশ এভাবে মাটির ওপর রাখা ঠিক হচ্ছে না। তাকে ইসলামী রীতি অনুযায়ী দাফন করা দরকার। তিনি আরও বলেন, গাদ্দাফিকে বন্দি অবস্থায় হত্যা করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.