পাকিস্তানে জোড়া আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত ২৪

পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কোয়েটা শহরে গত বুধবার আধা সামরিক বাহিনীর এক কর্মকর্তার বাড়ির কাছে জোড়া আত্মঘাতী বোমা হামলায় কমপক্ষে ২৪ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৮২ জন। ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা হামিদ শাকিল এ কথা জানান।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, আধা সামরিক বাহিনী ফ্রন্টিয়ার কোরের কোয়েটা শহরের উপপ্রধান ফারুক শেহজাদের বাড়ির বাইরে প্রথম আত্মঘাতী গাড়িবোমার বিস্ফোরণটি ঘটানো হয়। এরপর অপর একজন আত্মঘাতী হামলাকারী শেহজাদের বাড়ির ভেতর বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে শেহজাদের স্ত্রী ও এক সন্তানসহ কমপক্ষে ২৪ জন নিহত হয়। বিস্ফোরণে শেহজাদ আহত হন। সেই সঙ্গে আহত হয়েছে আরও ৮২ জন। ফারুক শেহজাদ সম্প্রতি আল-কায়েদার একজন ঊর্ধ্বতন নেতাকে গ্রেপ্তারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আল-কায়েদা নেতাকে গ্রেপ্তারের প্রতিশোধ হিসেবে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পুলিশ কর্মকর্তা শাকিল জানান, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন শিশুসহ ফ্রন্টিয়ার কোর ও সেনাবাহিনীর অন্তত ১১ জন সদস্য রয়েছেন। মৃত ব্যক্তির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। আহত ব্যক্তিদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কমপক্ষে সাতজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ ছাড়া বিস্ফোরণে পার্শ্ববর্তী একটি মসজিদ ও সরকারি কর্মকর্তাদের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আত্মঘাতী হামলায় ব্যবহূত গাড়িটিতে ৫০ কিলোগ্রামের মতো বিস্ফোরক ছিল। একটি পরিচয়পত্রসহ একজন আত্মঘাতী হামলাকারীর বিচ্ছিন্ন মাথা পাওয়া গেছে। পরিচয়পত্রটি থেকে ধারণা করা হচ্ছে, সে আফগানিস্তানের কুন্দুজ প্রদেশের বাসিন্দা।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো পক্ষ হামলার দায় স্বীকার করেনি। আল-কায়েদার ঘনিষ্ঠ সহযোগী পাকিস্তানের তালেবান জঙ্গিরা সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগী সরকারগুলোর বিরুদ্ধে এ ধরনের আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে থাকে। তা ছাড়া পাকিস্তান সেনাবাহিনী গত সোমবার ঘোষণা দেয়, আধা সামরিক বাহিনীর ফ্রন্টিয়ার কোরের সদস্যরা আল-কায়েদার ঊর্ধ্বতন নেতা ইউনিস আল-মৌরিতানিকে গ্রেপ্তার করেছেন। আল-কায়েদার এ নেতা যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়ায় হামলার পরিকল্পনা করছিলেন। একজন ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, মৌরিতানিকে গ্রেপ্তারের প্রতিশোধ হিসেবে আত্মঘাতী এ হামলা চালানো হলো বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত সস্ত্রীক আটক
অনুমতি ছাড়া অ্যাবোটাবাদে ওসামা বিন লাদেনের সাবেক গোপন আস্তানায় যাওয়ার চেষ্টা করায় পাকিস্তানে নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূতকে সস্ত্রীক গতকাল আটক করা হয়।
নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানান, ইসলামাবাদে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উফি উলফহেচেল তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে দাপ্তরিক গাড়িতে করে ভ্রমণে বের হলে গোয়েন্দারা তাঁদের অনুসরণ করে। অ্যাবোটাবাদের বিলাল শহরের যে বাসভবনে বিন লাদেন দীর্ঘদিন ধরে লুকিয়ে ছিলেন, সেই ভবনের কাছাকাছি পৌঁছালে তাঁদের গতি রোধ করা হয়। এরপর তাঁদের আটক করে নওয়ান শের পুলিশ কেন্দ্রে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ইসলামাবাদে ফেরত পাঠানো হয়।
পাকিস্তানি কর্মকর্তারা জানান, অনুমতি ছাড়াই ওই এলাকা পরিদর্শনের কারণে রাষ্ট্রদূতকে সস্ত্রীক দুই ঘণ্টা আটক রাখার পর ইসলামাবাদে ফেরত পাঠানো হয়।
অ্যাবোটাবাদের পুলিশ কর্মকর্তা করিম খান বলেন, ওই এলাকা পরিদর্শনে তাঁদের কোনো পূর্বানুমতি ছিল না।
এ ঘটনায় ডেনমার্ক ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। ডেনমার্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, পরিদর্শনের অনুমতিসংক্রান্ত যথেষ্ট কাগজপত্র রাষ্ট্রদূতের ছিল। ভুল-বোঝাবুঝির কারণে ঘটনাটি ঘটেছে।

No comments

Powered by Blogger.