জনি হত্যা: ভিডিও ফুটেজে ৭ খুনি শনাক্ত

চট্টগ্রাম মহানগরীর এমইএস কলেজের সামনে জাকির হোসেন জনিকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় কলেজ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত সাতজন খুনিকে সুনির্দিষ্টভাবে শনাক্ত করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলের আশেপাশে থাকা সিসি টিভি ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহের পর তা নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করে এই সাত ছুরিকাঘাতকারী খুনিকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানান নগরীর খুলশী থানার ওসি প্রণব চৌধুরী।
তিনি বলেন, জনির ওপর হামলাকারীরা সংঘবদ্ধভাবে ১০ থেকে ১৫ জন ছিল। এদের মধ্যে দু’জনকে ঘটনার পরপরই আটক করা হয়। শিগগিরই বাকিদের গ্রেপ্তারে সক্ষম হবে বলেও আশা করছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বোন মাহমুদা আক্তার বাদী হয়ে খুলশী থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন- সৌরভ ঘোষ (২০), সৈয়দ সাফাত কায়সার (১৯), রবিউল (১৯), তুষার (২২), আনিসুর রহমান (৩০), আয়াতুল হক (২০) ও মো. মামুন (৩০)। এর বাইরে আরো ১৫ থেকে ২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
ওসি প্রণব চৌধুরী বলেন, আমরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত কয়েকজনকে ইতিমধ্যে শনাক্ত করেছি।
এরা সবাই কলেজকেন্দ্রিক ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এরমধ্যে সৌরভ ও সাফাতকে ঘটনার পরপরই আটক করা হয়েছে। তাদের এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়েছে। 
ওসি বলেন, হামলা ও ছুরিকাঘাতকারী বাকিদের গ্রেপ্তারে তৎপর রয়েছে পুলিশ। যেকোনো সময় তাদের গ্রেপ্তারের খবর দিতে পারবো।
হত্যাকাণ্ড সমপর্কে তিনি বলেন, আধিপত্য নিয়ে আগেরদিনও ভিকটিমের সঙ্গে প্রতিপক্ষের হাতাহাতি ও ধাওয়ার তথ্য পেয়েছি আমরা। আবার প্রেমঘটিত একটি বিষয়ও নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। আমরা সবদিক বিবেচনায় রেখেই কাজ করছি। জড়িতরা গ্রেপ্তার হলে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।
এদিকে এমইএস কলেজ গেটের সামনের সিসিটিভি থেকে পাওয়া ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের সময় ১০-১২ জন যুবক জনিকে ঘিরে ধরেছিল। তাদের মধ্যে কেউ একজন সরি বল, সরি বল বলছিল তাকে। এ সময় আরেকজন জনির উরু ও হাঁটুতে ছুরিকাঘাত করে। জনি পালাতে চাইলে আরেকজন তার পিঠে ছুরিকাঘাত করে। এরপর সে সড়কের ওপর লুটিয়ে পড়ে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই জনির মৃত্যু হয়েছে বলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন।
বুধবার সকালে জনির সহপাঠীরা খুলশী থানার সামনে ঘাতকদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছে।
জনির বোন মাহমুদা আক্তার জানান, জাকির হোসেন জনি ঢাকার একটি কলেজে পড়ে। তাদের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলার কলাপাড়ায়।
মাহমুদা আক্তার জানান, জনি একসময় তার বাসায় থেকে লেখাপড়া করলেও বছরখানেক আগে ঢাকায় বড় ভাইয়ের বাসায় গিয়ে সেখানেই একটি কলেজে ভর্তি হয়। কোরবানির ঈদের আগে আমার বাসায় বেড়াতে এসেছিল জনি। গত ২৬শে আগস্ট রাতে ট্রেনে তার ঢাকায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু দুপুরেই ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারাতে হয় তাকে।

No comments

Powered by Blogger.