নওয়াজ শরিফ ও ইমরান খান এগিয়ে, নেতৃত্বহীনপিপিপি

পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে আগামী শনিবার ভোট দেবে জনগণ। তালেবানের হুমকিতে স্বাভাবিক নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারেনি অনেক দলই। পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) সেই তালেবানের হুমকির শিকার। নেতৃত্বহীন দল চলছে দিকনির্দেশনাহীন। এই সুযোগে নির্বাচনের মাঠে এগিয়ে গেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগের (পিএমএল-এন) এবং সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। তাই নির্বাচনে এই দুই দলের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। প্রেসিডেন্ট পদে থাকায় পিপিপির কো-চেয়ারম্যান আসিফ আলী জারদারি প্রচারণায় নামতে পারছেন না। অন্যদিকে জারদারি-বেনজির দম্পতির ছেলে দলের চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো বয়স কম হওয়ায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেননি। ফলে পিপিপি এক প্রকার অভিভাবকহীনভাবে প্রচারণা চালাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এ মুহূর্তে নওয়াজ শরিফই এগিয়ে আছেন। নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে তিনিই হবেন পাকিস্তানের প্রথম রাজনীতিক, যিনি তিনবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার গৌরব অর্জন করবেন। নওয়াজ প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন ১৯৯০ সালে। ১৯৯৩ সালে দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৯৯ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয় তাঁকে। অন্যদিকে সাবেক ক্রিকেটার ইমরানের দল ২০০২ সালে সাধারণ নির্বাচনে একটি মাত্র আসন পেয়েছিল। ২০০৮ সালের নির্বাচন বর্জন করেছিলেন ইমরান। পাকিস্তানে মার্কিন ড্রোন (মানুষবিহীন বিমান) হামলা এবং কট্টরপন্থীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের বিরোধিতা করে দারুণ জনপ্রিয়তা পান তিনি। এরপর তারকা ক্রিকেটারের ভাবমূর্তি ও দুর্নীতিবিরোধী কথা বলে তরুণদেরও প্রভাবিত করতে সক্ষম হন ইমরান। তাঁর ভাষায়, জনসমর্থনের ‘সুনামি’ তাঁকে নির্বাচনে জয়ী করবে। ইমরান নির্বাচনী প্রচারণায় বিগত সরকারের ব্যর্থতার বিভিন্ন ইস্যু ও নীতি তুলে ধরছেন। একই সঙ্গে দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তবে প্রথাগতভাবে দেখা যায়, ভোটাররা উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া রাজনীতিকদেরই পছন্দ করেন বেশি। ভোটও তাঁদেরই দেন। এই দিক বিবেচনায় ইমরান কিছুটা পিছিয়ে পড়তে পারেন। নওয়াজ তাঁর প্রচারণায় রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে নিজেকে দক্ষ ব্যক্তি হিসেবে উপস্থাপন করছেন। উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরছেন নব্বইয়ের দশকে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাঁর ভূমিকা। প্রচারণায় ইমরান ও নওয়াজ—দুই নেতাই তালেবানের সঙ্গে সরকারের আলোচনায় বসার পক্ষে কথা বলছেন। পাকিস্তানে মার্কিন হামলার বিরুদ্ধেও নিজেদের শক্ত অবস্থান তুলে ধরছেন। তবে তাঁরা সরকার গঠন করলে তালেবান বা অন্যান্য কট্টরপন্থী গোষ্ঠীর প্রতি তাঁদের নীতি কী হবে, তা স্পষ্ট করছেন না। এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.