জ্বালানি তেলের দাম আবারও বাড়ল

সরকার এক নির্বাহী আদেশে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে জ্বালানি তেলের দাম আবারও বাড়াল। এর মধ্যে প্রতি লিটার অকটেন পাঁচ টাকা বেড়ে হয়েছে ৯৯ টাকা। পেট্রলের দর বেড়েছে লিটারপ্রতি পাঁচ টাকা।
এখন প্রতি লিটার পেট্রল কিনতে হবে ৯৬ টাকায়। আর ডিজেল ও কেরোসিন লিটারে সাত টাকা করে বেড়ে হয়েছে ৬৮ টাকা। ফার্নেস তেল ও জেট ফুয়েলের দাম বাড়ানো হয়নি। তবে এই দুটিতে সরকারের কোনো ভর্তুকি লাগে না। অকটেন ও পেট্রলেও ভর্তুকি লাগে না। এর পরও এই দুটির দাম বাড়ানো হলো।
হঠাৎ জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ফলে জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়বে প্রায় সব ক্ষেত্রে। বেড়ে যাবে পরিবহন ব্যয়। যানবাহনের ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টিরও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে দ্রব্যমূল্য আরেক দফা বৃদ্ধি পেয়ে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়াবে। তাই সরকারের এ সিদ্ধান্তকে ভালোভাবে দেখছেন না দেশের অর্থনীতিবিদেরা। কারণ, এতে সরকারের পক্ষে সামষ্টিক অর্থনীতির ব্যবস্থাপনা আরও কঠিন হবে।
প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য, সরকারের বর্তমান রাজস্ব-পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক বিবেচনায় দাম বাড়ানো অবধারিত ছিল না। এই মূল্যবৃদ্ধি দেশে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতিকে আরও উসকে দেবে। তবে বোরো চাষের জন্য সরকার ডিজেলের দাম না বাড়িয়ে কৃষককে রক্ষা করবে বলে আশা করেছিলাম।’ তিনি বলেন, এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, তেলের দাম বাড়ানোর ফলে যে অর্থের সাশ্রয় হবে, সেটা কোন খাতে ব্যয় হবে। এই ব্যয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা থাকলে জনগণের জন্য মূল্যবৃদ্ধি মেনে নেওয়া সহজ হতো।
এর আগে ২০১১ সালের ৩০ ডিসেম্বর সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম লিটারপ্রতি পাঁচ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। এই সরকারের আমলে এ নিয়ে পাঁচবার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ল। গত মধ্যরাত থেকেই নতুন মূল্য কার্যকর হয়েছে। গতকাল রাতে জ্বালানি মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে পরিপত্র জারি করে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত মেনেই তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। ১০০ কোটি ডলারের বর্ধিত ঋণসুবিধার আওতায় (ইএসএফ) বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত একটি কিস্তির অর্থ পেয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তির ১৪ কোটি ১০ লাখ ডলার চলতি জানুয়ারি মাসেই পাওয়ার কথা। এই অর্থ পেতেই বাড়ানো হলো জ্বালানি তেলের দাম।

No comments

Powered by Blogger.