ইতিউতি-ট্রানজিটের জন্য রেলপথ ভালো, সড়ক নয় by আতাউস সামাদ

কালের কণ্ঠ পত্রিকার প্রিয় পাঠকদের সদয় বিবেচনার জন্য আজকে এই লেখার শুরুতেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় সুড়ঙ্গ পথের কথা তুলে ধরছি। আর তা এ জন্য যে, এটি তৈরি করার প্রয়োজনীয়তা, এর মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা_এই বিষয়গুলোর মধ্যে বাংলাদেশ যে এ মুহূর্তে ভারত এবং তারপর পর্যায়ক্রমে নেপাল ও ভুটান এবং পরে মিয়ানমারকে ট্রানজিট সুবিধা দিতে চাইছে সে-সংক্রান্ত জরুরি অন্তত তিনটি প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যেতে পারে।


দুনিয়ার সবচেয়ে বড় রেল সুড়ঙ্গ পথটার নাম গটহার্ড বেইস টানেল (gotthard Base Tunnel)। এর দৈর্ঘ্য ৫৭ কিলোমিটার (৩৫.৪ মাইল)। এটি আল্পস পর্বতের ভেতর দিয়ে খোঁড়া হয়েছে। গটহার্ড টানেলের পুরোটাই সুইজারল্যান্ডে অবস্থিত। এটি শুধু রেলগাড়ি চলাচলের জন্য ব্যবহার করা হবে। বস্তুতপক্ষে, এতে দুটি সুড়ঙ্গ আছে_একটির নাম পূর্ব সুড়ঙ্গ, অপরটি পশ্চিম সুড়ঙ্গ। দুটো সুড়ঙ্গপথ তৈরি করা হয়েছে, যাতে দুটি বিপরীতমুখী ট্রেন একই সময়ে যাতায়াত করতে পারে। প্রতিটি সুড়ঙ্গে থাকছে মাত্র একটি করে রেলপথ। গটহার্ড টানেলের এবং এর রেলপথের স্বত্বাধিকারী হচ্ছে সুইস ফেডারেল রেলওয়ে (ঝঋজ)। এই ঝঋজ ওই টানেলের মধ্য দিয়ে ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ করবে। এই টানেলটি সুইজারল্যান্ডের জুরিখ এবং ইতালির মিলানের মধ্যে রেলপথ কমিয়ে আনবে।
বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, গটহার্ড বেইস টানেল তৈরি করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় সুইজারল্যান্ডের অধিবাসীরা ট্রাক চলাচলের বিরোধিতা শুরু করার পর। সুইজারল্যান্ড আশপাশের সব দেশকে ট্রানজিট সুবিধা দেয়। এসব দেশের মধ্যে জার্মানি ও ইতালির পণ্য পরিবহন হয় সবচেয়ে বেশি। ইউরোপে আন্তরাষ্ট্রীয় বাণিজ্য বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সুইজারল্যান্ডের ওপর দিয়ে ভারী ট্রাক চলাচল বাড়তেই থাকে। একই সঙ্গে বাড়তে থাকে পরিবেশ দূষণ। বিপুলসংখ্যক ট্রাকের ধোঁয়া বাতাস বিষাক্ত করে তোলে। ট্রাকের পোড়া তেল আর ট্রাক ও অন্যান্য মোটরযানের চালক এবং যাত্রীদের ফেলে দেওয়া বর্জ্য পরিবেশ নোংরা করে। আর ট্রাক ও দ্রুতগামী মোটরের শব্দ সড়কের পাশে বসবাসকারীদের জন্য অস্বস্তিকর হয়ে দাঁড়ায়। এই পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পাওয়ার উদ্দেশ্যে সুইসদের দাবিতে দেশটিতে পরিবেশ রক্ষার জন্য যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি আইন পাস হয়। কিন্তু একই সঙ্গে সুইজারল্যান্ডের ভূমি দিয়ে যাতায়াতকারী সে দেশের নিজের এবং আন্তরাষ্ট্রীয় ট্রাফিক ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার প্রচণ্ড তাগিদও ছিল। ফলে আল্পসের মধ্য দিয়ে সুড়ঙ্গ তৈরি করে রেলপথ নির্মাণের অনুমতি প্রদান করে সুইজারল্যান্ডে আরেকটি আইন পাস হয়। তবে আল্পসের মধ্য দিয়ে বিশ্বের দীর্ঘতম টানেলটি তৈরির আগে এ নিয়ে সুইজারল্যান্ডে একটি গণভোট হয়। ১৯৯২ সালে অনুষ্ঠিত এই রেফারেন্ডামে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে শতকরা ৬৪ জন টানেল তৈরির পক্ষে ভোট দেন। অতঃপর ১৯৯৬ সালে টানেল খোঁড়ার কাজ আরম্ভ হয়। এর একটি সুড়ঙ্গ খোঁড়া সম্পন্ন হয় ১৫ অক্টোবর ২০১০ এবং দ্বিতীয়টি শেষ হয় ২৩ মার্চ ২০১১ সালে। অর্থাৎ গটহার্ড টানেল খোঁড়া একটি অতি সাম্প্রতিক ঘটনা। এই টানেল চলাচলের জন্য যোগ্য করা ও রেললাইন বসানোর কাজ সবেমাত্র হাতে নেওয়া হয়েছে। টানেলটি ব্যবহারের জন্য সুইস ফেডারেল রেলওয়ের কাছে এটি হস্তান্তর করা হবে ২০১৬ সালে।
গটহার্ড বেইস টানেল তৈরি করার উদ্দেশ্য সম্পর্কে একটি তথ্য বিবরণীতে লেখা হয়েছে, 'Its main purpose is to increase the transport capacity across the Alps, especially for freight, notably between �erma� and Italy and more particularly to shift freight volume from road to rail so as to reduce the environmental damage being caused by ever-increasing number of ever-larger tucks'. এই দীর্ঘ ইংরেজি বাক্যটির বাংলা অনুবাদ হতে পারে, 'এটার (গটহার্ড টানেলের) মূল লক্ষ্য হচ্ছে আল্পস পর্বতমালার ভেতর দিয়ে যাতায়াত করার সুবিধা বাড়ানো, বিশেষ করে মালামাল পরিবহনের জন্য, যার উল্লেখযোগ্য অংশ হবে জার্মানি ও ইতালির মধ্যে এবং সুনির্দিষ্টভাবে, মালামাল পরিবহনের পরিমাণ সড়কপথ থেকে কমিয়ে রেলপথে বৃদ্ধি করা, যাতে ক্রমবর্ধমানসংখ্যক এবং ক্রমাগত কলেবরে বড় হতে থাকা ট্রাক পরিবেশের যে ক্ষতিসাধন করছে, তা কমিয়ে আনা যায়।'
এখানে আরো তিনটি কথা উল্লেখ করি। গটহার্ড টানেল দিয়ে একেকটি মালগাড়ি চার হাজার টন পর্যন্ত মালামাল বয়ে নিয়ে যেতে পারবে। এগুলো চলবে দ্রুতগতিতে। গটহার্ড টানেল দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন ঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটার (১৫৫.৩ মাইল) বেগে পর্যন্ত ছুটতে পারবে। এই টানেল দিয়ে প্রতিদিন ২৫০টি ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এই সুড়ঙ্গ তৈরি করতে ২৬,৫০০,০০০ টন পাথর পাহাড়ের পেট থেকে কেটে সরাতে হয়েছে। গটহার্ড টানেল তৈরি করতে খরচ হচ্ছে ১০ বিলিয়ন ফ্রাঁ (৯.৮৩ বিলিয়ন ডলার)। এটি একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ বটে। অবশ্য আল্পসের ভেতর দিয়ে চলাচলের জন্য এর আগেও বেশ কয়েকটি টানেল বানানো হয়েছে।
এবারে গটহার্ড বেইস টানেলের সঙ্গে বাংলাদেশের কথা যেভাবে আসে তা বলি। প্রথম কথা হচ্ছে, সড়কপথে পণ্য পরিবহনের জন্য বেশি বেশি করে বড় বড় ট্রাক ব্যবহার করা সুইজারল্যান্ডের জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়েছে। তাই সুইজারল্যান্ড ট্রাকের ব্যবহার কমিয়ে ওই যানের চেয়ে কম ক্ষতিকর ট্রেনের দিকে ঝুঁকেছে। সুইস ফেডারেল রেলওয়ে গটহার্ড টানেলের মালগাড়ি দিয়ে কেবল পণ্যই পরিবহন করবে না, তারা প্রয়োজনে মাল বোঝাই ট্রাক পর্যন্ত রেলগাড়িতে চড়িয়ে পার করে দেবে (আমাদের দেশে ফেরিতে করে নদী পার করার মতো)। প্রসঙ্গত, ইউরোপের অপর এক দেশ অস্ট্রিয়াও ট্রানজিটকারী ট্রাক চলাচল কমানোর জন্য এসব বাহনকে মালগাড়িতে করে তার এক সীমান্ত থেকে অন্য সীমান্তে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব করেছে বলে শুনেছি। এখন বাংলাদেশ প্রসঙ্গ। সুইজারল্যান্ড ও অস্ট্রিয়ার মতো বাংলাদেশও বড় বড় ট্রাকের আনাগোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমাদের সড়ক ও মহাসড়কগুলোর অবস্থা যে ভালো নয়, এগুলো যে ভঙ্গুর, তা তো এই ঈদের সময় প্রকটভাবে জানা হয়ে গেছে। এসব রাস্তা দিয়ে বড় বড় ও ভারী পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করলে এগুলো নষ্ট হয়ে যাবে খুবই অল্প সময়ের ভেতরে। আর ট্রাক থেকে বের হওয়া কার্বন, পোড়া তেল এবং অন্যান্য বর্জ্য যে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করে, তাও প্রমাণ হয়েছে সুইজারল্যান্ড ও অস্ট্রিয়াতে। কাজেই বাংলাদেশের উচিত হবে, এ থেকে অন্য দেশকে ট্রানজিটের জন্য তার সড়কপথ ব্যবহার করতে না দেওয়া। বাংলাদেশের সড়কগুলো যে অতিকায় ট্রাক তো বটেই, এমনকি বেশ ভারী ট্রাকের জন্য উপযোগী নয়, তা তো ভারতের পালাটানা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য শিক্ষা নিয়ে ভারী যন্ত্রপাতি আশুগঞ্জ নদী বন্দর থেকে আখাউড়া হয়ে ভারত সীমান্ত পর্যন্ত নেওয়ার সময়ই দেখা গেছে। তাই মাল পরিবহনের ট্রানজিট সুবিধা থেকে বাংলাদেশের সড়কপথ বাদ দেওয়া বাঞ্ছনীয়।
বাংলাদেশ তার পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট কয়েকটি রেলপথে ভারতকে পণ্য পরিবহনের জন্য ট্রানজিট দিতে পারে। নেপাল ও ভুটানের সঙ্গেও একই ব্যবস্থার কথা চিন্তা করা যেতে পারে। এ জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি রেললাইনকে ব্রডগেজে পরিণত করতে হবে অথবা মিটারগেজের পাশাপাশি ব্রডগেজ লাইন বসাতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সেতু অর্থাৎ যমুনা নদীর সেতুর ওপর ব্রডগেজ রেললাইন আছে। এই লাইন যমুনার পশ্চিম পাড় থেকে ঢাকা পর্যন্ত এসেছে এরই মধ্যে। এখন এ ধরনের রেললাইন পূর্ব সীমান্ত ও চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত নিতে হবে। তা শুধু ট্রানজিট দেওয়ার জন্যই নয়, বাংলাদেশের নিজের স্বার্থেও।
রেলপথে ট্রানজিটের মালামাল পরিবহন করলে বাংলাদেশ রেলওয়ে তার জন্য ভাড়া দাবি করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে ট্রানজিট 'ফি' চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর এক সম্মানিত উপদেষ্টার আশঙ্কা যে তাতে আমরা অসভ্য জাতি বলে পরিগণিত হব, তা সত্যে পরিণত হবে না। সুইজারল্যান্ড ও অন্যান্য দেশ এ রকম ক্ষেত্রে কিভাবে ট্রেন ভাড়া অথবা ফি হিসাব করে, তা আমরা সুইজারল্যান্ডের কাছ থেকে জেনে নিতে পারি। আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে বলে যে, বাংলাদেশ রেলপথে ট্রানজিটের মালামাল পার করে দিয়ে যে ভাড়া পাবে, সেই আয় ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভারদের দেওয়া অনুমিত হোটেল ভাড়ার চেয়ে অনেক বেশি হবে। স্মরণ করা যেতে পারে, ট্রানজিট সুবিধা দিয়ে বাংলাদেশ বছরে ট্রিলিয়ন ডলার আয় করবে এমন খোয়াব যাঁরা দেখাতেন তাঁরা হঠাৎ করেই নীরব হয়ে গেছেন। অতঃপর প্রধানমন্ত্রীর আরেক মাননীয় উপদেষ্টা 'হোটেল ভাড়া' তত্ত্ব হাজির করেছেন। তবে তিনি ট্রিলিয়ন তো নয়ই, এমনকি বিলিয়নের অঙ্কেও কোনো হিসাব দেননি।
সুইজারল্যান্ডের গটহার্ড বেইস টানেল দিয়ে যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করবে সুইস ফেডারেল রেলওয়ে। তাই ওই ক্ষেত্রে ট্রানজিটের মাধ্যমে দেশের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ার ঝুঁকিটাও থাকে না। বাংলাদেশের বেলায়ও একই যুক্তি প্রযোজ্য। সড়কপথে ট্রানজিটের প্রসঙ্গেও শুনেছি, বিভিন্ন দেশ ট্রানজিট পণ্য বোঝাই ট্রেইলার বা কনটেইনার লরি তাদের দেশের ট্রাক দিয়ে এক সীমান্ত থেকে অপর সীমান্তে টেনে নিয়ে যায়। এতে তারা ভাড়া বাবদ কিছু আয় করে, আবার নিরাপত্তার বিষয়টা অনেকটাই তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ আমেরিকা ও আফ্রিকা মহাদেশে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারে। ট্রাকে করে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে আর নিজস্ব বা ট্রানজিট, যাইহোক বাংলাদেশকে ট্রাকের আয়তন ও পণ্যসহ ওজন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কারণ, আমাদের রাস্তা অপ্রশস্ত ও দুর্বল।
ভারত নদীপথে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পণ্য পরিবহনে ট্রানজিট সুবিধা পাচ্ছে পাকিস্তান আমল থেকে। তবে আমাদের নদীগুলো নাব্য হারানোর ফলে এই সুযোগ হয়তো আগের চেয়ে কমে গেছে। এ ক্ষেত্রে আমরা কয়েকটি নদীপথ চিহ্নিত করে ভারতকে বলতে পারি, এগুলোর সংস্কারের জন্য ড্রেজিংয়ে সহায়তা করতে। সড়কপথের চেয়ে স্থলপথে অনেক বেশি পরিমণে পণ্য পরিবহন করা যায়।
ট্রানজিট প্রসঙ্গে বাংলাদেশে চলমান বিতর্কে অনেকেই ইউরোপের প্রচলিত সুবিধাদির কথা তুলে থাকেন। তবে সে ক্ষেত্রে তাঁদের এটাও খেয়াল করতে হবে যে, ট্রানজিট সুবিধা বেশি আছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর মধ্যে। এখানে মনে রাখা দরকার, মাত্র কয়েক বছর আগে একটি বিশেষ চুক্তির মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক দেশ তাদের নাগরিকদের ওই চুক্তিবদ্ধ এক রাষ্ট্র থেকে অন্য রাষ্ট্রে চলাচল করা প্রায় ভিসামুক্ত করে দিয়েছে। তাদের মধ্যে শিল্প ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও রয়েছে গভীর সহযোগিতা। অন্যদিকে বাংলাদেশের তিন দিক ঘিরে ভারত দিয়েছে কাঁটাতারের বেড়া। ভারতীয় বিএসএফ সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যা করছে ঘনঘন। ভারতের সঙ্গে ১৯৭৪ সালে সীমান্ত চুক্তি সই করে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেরুবাড়ি হস্তান্তরকে বৈধতা দিয়ে ওই চুক্তি অনুমোদনের জন্য সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনেছিলেন সেই বছরই। অথচ ভারত সেই চুক্তি আজ পর্যন্ত অনুমোদন করেনি। ১৯৭২ সালে ভারত ও বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রীদ্বয় যথাক্রমে এ এন মিশ্র এবং এম আর সিদ্দিকী যে চুক্তি সই করেছিলেন নয়াদিলি্লতে, তাতে বাংলাদেশ ও নেপালকে ভারতের মধ্য দিয়ে ট্রানজিট দেওয়া এবং ভারতকে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে পণ্য পরিবহনের বিশেষ ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার শর্ত ছিল। সেই চুক্তি কার্যকর হয়নি কি কেবলই রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে, নাকি অন্যান্য এমন অসুবিধাও ছিল, যা দূর করা হয়নি_সেটিরও খোঁজ নেওয়া উচিত। না হলে এখন নতুন করে ট্রানজিট চুক্তি করে তা যে মলাটের আবরণেই হোক না কেন, লাভ কি হবে?
ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং ৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে সরকারি সফরে আসবেন। সঙ্গে থাকবেন বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী পাঁচ প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীরা। ওই সময়ে তাঁরা বাংলাদেশের কাছে ব্যাপক ট্রানজিট সুবিধা দাবি করবেন বলে শোনা যাচ্ছে। সেই সময় বাংলাদেশ পক্ষ বিশ্বের দীর্ঘতম সুড়ঙ্গপথ গটহার্ড বেইস টানেল ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কের বিশেষ পরিবেশের কথা মনে রাখবেন ও প্রয়োজনে ভারতীয় মেহমানদের মনে করিয়ে দেবেন আশা করি।
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট

No comments

Powered by Blogger.