ডেনমার্কের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক-গ্রিনহাউস গ্যাস হ্রাস ও কার্বন-বাণিজ্যে সহায়তা

লবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা এবং শহরাঞ্চলের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গ্রিনহাউস গ্যাস কমানো এবং কার্বন-বাণিজ্যে বাংলাদেশকে সহায়তা দেবে ডেনমার্ক সরকার। ক্লিন ডেভেলপমেন্ট মেকানিজম (সিডিএম) প্রকল্পের আওতায় এই দুই দেশ একযোগে কাজ করবে।


এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তর ও ঢাকার ডেনিশ দূতাবাস গতকাল মঙ্গলবার নিজ নিজ সরকারের পক্ষে এক সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করে।
সমঝোতা চুক্তির আওতায় ডেনমার্ক সরকার বর্জ্য দিয়ে সার ও বায়োগ্যাস তৈরির প্রকল্পে কারিগরি সহায়তা দেবে। সঠিকভাবে এ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা হলে তা থেকে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমবে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী গ্যাসগুলো সম্মিলিতভাবে গ্রিনহাউস গ্যাস হিসেবে পরিচিত। এ প্রকল্পের মাধ্যমে যে পরিমাণ গ্যাস নিঃসরণ কমবে, ডেনমার্ক সরকার বাংলাদেশকে সে পরিমাণ অর্থ দেবে।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সারা দেশে যে গৃহস্থালি বর্জ্য তৈরি হয়, তার ৫০ শতাংশ সিটি করপোরেশন ও অন্যান্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান মিলে ব্যবস্থাপনা করে। বাকি ৫০ শতাংশ ব্যবস্থাপনার বাইরে থেকে যায়। এ বর্জ্য দিয়ে বায়োগ্যাস ও কম্পোস্ট সার তৈরি করে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হ্রাস ছাড়াও বায়ু ও পানিদূষণ কমানো যাবে।
বাংলাদেশে জৈব বর্জ্য থেকে বছরে ২ দশমিক ০৯ মিলিয়ন টন গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হয়। জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা ইউএনএফসিসিসির পদ্ধতি অনুযায়ী তা হ্রাস করা সম্ভব। এ-সংক্রান্ত প্রকল্পটি সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত হলে বর্তমান আন্তর্জাতিক দরে (প্রতি টন ছয় মার্কিন ডলার) বছরে ১২ মিলিয়ন ডলারের বেশি দামের কার্বন বিক্রি করা সম্ভব।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ে এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মনোয়ার ইসলাম ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত সভেন্ড ওলিং। পরিবেশ ও বনমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও সচিব মেছবাহ উল আলম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এই স্মারকের আলোকে ডেনমার্ক সরকার প্রকল্প ধারণাপত্র তৈরি ও বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে কারিগরি সহায়তা দেবে। বিনিময়ে এ প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ যে পরিমাণ কার্বন বিক্রি করার যোগ্যতা অর্জন করবে, সে পরিমাণ কার্বন ডেনমার্ক সরকার বাংলাদেশ থেকে কেনায় অগ্রাধিকার পাবে।
প্রকল্পটি প্রথম পর্যায়ে বাস্তবায়িত হবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন, গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও কক্সবাজার পৌরসভায়।

No comments

Powered by Blogger.