নতুন চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল

স্পোর্টস রিপোর্টার: তারকাদের সমন্বয় ঘটিয়ে গেলো মওসুমে ফেডারেশন কাপের শিরোপা পায়নি শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। পাতানো ম্যাচের কলঙ্ক নিয়ে শুধু লীগ শিরোপাই ছিল তাদের সম্বল। এবার নেই সে তারকা ফুটবলাররা। জাতীয় দলের ১০ ফুটবলার ক্লাব ছেড়ে আবাহনী মুক্তিযোদ্ধায় নাম লেখালে ভাঙাহাটে পরিণত হয়েছে গেলোবারের লীগ চ্যাম্পিয়নরা। গত মওসুমে তারকা ফুটবলারদের নিয়ে যা করতে পারেনি শেখ জামাল, এবার ভাঙাহাট নিয়ে তাই করে দেখালেন দলটির কোচ সাইফুল বারী টিটু। গতকাল ফেডারেশন কাপের ফাইনালে টিম বিজেএমসিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে নব্য অধ্যায়ের সূচনা করে  শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। আবাহনী, মোহামেডান, মুক্তিযোদ্ধা ও ব্রাদার্স না থাকাতে নব্য অধ্যায় সৃষ্টির সুযোগ ছিল ২৯ বছর পর ফুটবলে ফেরা টিম বিজেএমসির সামনেও। তার প্রতিফলন ঘটানোর মতোই শুরু করেছিল জাকারিয়া বাবুর শিষ্যরা। তবে পুরো ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ করেও  শেখ জামালের কাছে ৩-১ গোলে হেরে রানার্সআপ ট্রফি নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাদের। ফাইনালে জামালের মিন্টু শেখ, কেস্টার, সবুজ একটি করে গোল করেন। বিজেএমসির ইকাঙ্গা একটি গোল শোধ করেন।
বিজেএমসির উত্থান এবং শেখ জামালের ধারাবাহিক পারফরমেন্সে গ্রুপপর্ব থেকেই ছিটকে পড়েছিল ফেডারেশন কাপের সর্বাধিক চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান ও ব্রাদার্স। কোয়ার্টার ফাইনালে আবাহনীকে বিদায় করে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। আর সেমিফাইনালে মুক্তিযোদ্ধাকে মাটিতে নামিয়ে আনে অভিজ্ঞ ফুটবলারদের মিশেলে গড়া টিম বিজেএমসি। এ কারণে উপভোগ্য ফাইনালের প্রত্যাশায় দীর্ঘদিন পরে মাঠে আসে হাজার সাতেক দর্শক। শুরু থেকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় জাতীয় দল থেকে অবসর নেয়া আলফাজের টিম বিজেএমসি। তবে ম্যাচের প্রথম আক্রমণ শানায় শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। ম্যাচের ৫ মিনিটে শরীফের নেয়া শট দক্ষতার সঙ্গে প্রতিহত করেন বিজেএমসির গোলরক্ষক হিমেল। ম্যাচের ৪০ মিনিটে ভাগ্য সহায়তা না করায় গোল বঞ্চিত হয় বিজেএমসি। শেখ জামালের দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বাঁপ্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে বক্সের ঠিক বাইরে থেকে আলফাজের বাঁকানো শট ক্রসবার ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে টিম বিজেএমসি কিছুটা চাপিয়ে খেললেও গোলের দেখা পায় শেখ জামাল। ম্যাচের ৫৬ মিনিটে ফেমির ফ্রি কিক। জটলার মধ্যে এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বল বক্সে দাঁড়ানো মিন্টু শেখের পায়ের সামনে পড়ে। একমুহূর্ত দেরি না করে জালে বল পাঠিয়ে শেখ জামালকে এগিয়ে নেন তিনি (১-০)। উল্লাসে মেতে ওঠেন সমর্থকরা। প্রথম গোলের রেশ কাটতে না কাটতেই শেখ জামালকে দ্বিতীয় গোল উপহার  দেন দলের নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড কেস্টার। সতীর্থের বাড়ানো বল নিয়ে কেস্টার এগিয়ে যান টিম বিজেএমসির বক্সের দিকে। ডিফেন্ডার শুভ্র কুলিয়ে উঠতে পারেননি কেস্টারের সঙ্গে। বল নিয়ে গোলরক্ষক হিমেলকে বোকা বানিয়ে গোলের গ্রাফটা আরও একধাপ উপরে নিয়ে যান এ নাইজেরিয়ান (২-০)। ৭৪ মিনিটে বেইবেকের ক্রসে ইকাঙ্গার দর্শনীয় গোলে ব্যবধান কমায় বিজেএমসি (২-১)। ৮৭ মিনিটে আবুলের ফ্রি-কিকে বাঙ্গুরার হেড ক্রস পিচে লেগে প্রতিহত হয়। এর মিনিট তিনেক পরেই উল্টো গোল হজম করে বিজেএমসি। মাঠে নেমেই গোলের দেখা পান উপেক্ষিত সবুজ। সোহেল রানার ক্রস থেকে গোল করে ব্যবধান ৩-১ নিয়ে যান এই স্ট্রাইকার।
শেখ জামাল: আমিনুল (গোলরক্ষক), মিন্টু শেখ, ইউসুফ, ইউসুফি ঈসা, কোমল (সবুজ), শরীফ (সোহেল রানা), রাজু, ফেমি অরুনিমি (ভাসানি), মিশু,  সামনিক, কেস্টার।
টিম বিজেএমসি: হিমেল (গোলরক্ষক), শুভ্র (বিপ্লব), আশরাফুল, জনি, সাইফ (পারভেজ), বেইবেক, ইকাঙ্গা, আবুল, রশীদ, ইসমাইল বাঙ্গুরা, আলফাজ (রনি ইসলাম)।
রোল অব অনার
সাল    চ্যাম্পিয়ন    রানার্সআপ
১৯৮০    মোহামেডান ও ব্রাদার্স    -
১৯৮১    মোহামেডান    আবাহনী
১৯৮২    মোহামেডান ও আবাহনী -
১৯৮৩    মোহামেডান    আবাহনী
১৯৮৫    আবাহনী    ব্রাদার্স
১৯৮৬    আবাহনী    ব্রাদার্স
১৯৮৭    মোহামেডান    ওয়ান্ডার্স
১৯৮৮    আবাহনী    মোহামেডান
১৯৮৯    মোহামেডান    আবাহনী
১৯৯১    ব্রাদার্স     মোহামেডান
১৯৯৪    মুক্তিযোদ্ধা    আবাহনী
১৯৯৫    মোহামেডান    আবাহনী
১৯৯৭     আবাহনী    আরামবাগ
১৯৯৯    আবাহনী    মুক্তিযোদ্ধা
২০০০    আবাহনী     মোহামেডান
২০০১    মুক্তিযোদ্ধা    আরামবাগ
২০০২-০৩    মোহামেডান    মুক্তিযোদ্ধা
২০০৩-০৪    মুক্তিযোদ্ধা    মোহামেডান
২০০৪-০৫     ব্রাদার্স    মুক্তিযোদ্ধা
২০০৮    মোহামেডান     আবাহনী
২০০৯    মোহামেডান     আবাহনী
২০১০    আবাহনী     শেখ জামাল
২০১১    শেখ জামাল     বিজেএমসি
ম্যান অব দ্য ফাইনাল
ইয়কো সামনিক (শেখ জামাল)
ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট
জুলস ইকাঙ্গা (বিজেএমসি)
সর্বোচ্চ গোলদাতা
অ্যাসোগবা অ্যালেন (শেখ জামাল), আজাগুন আবদুল রশিদ (বিজেএমসি), আর্নেস্ট এমাকো (শেখ রাসেল) ও লাকী ডিভাইন (রহমতগঞ্জ)
ফেয়ার প্লে ট্রফি : ফরাশগঞ্জ

No comments

Powered by Blogger.