আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া প্রীতি ম্যাচ-বাংলাদেশে সুস্বাগতম লিওনেল মেসি

র্তমান ধরাতলে ফুটবল মাঠে অপার নান্দনিক সৌন্দর্য ছড়ানো লিওনেল মেসি এবং তার আর্জেন্টাইন জাতীয় দলকে বাংলাদেশের কোটি কোটি ফুটবলপ্রেমীর পক্ষ থেকে স্বাগতম, সুস্বাগতম। স্বাগতম সুপার ঈগল নাইজেরীয় জাতীয় দলকেও। মঙ্গলবার এ দুটি দল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে খেলবে প্রীতি ম্যাচ, আন্তর্জাতিক ফুটবল ফেডারেশন বা ফিফা যাকে কিন্তু অফিসিয়াল ম্যাচ হিসেবেই স্বীকৃতি দিয়েছে।


এর আয়োজনের সঙ্গে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন। এটা ঠিক যে, বিশ্বখ্যাত খেলোয়াড় কিংবা এক বা একাধিক বড় দল ঢাকা কিংবা বাংলাদেশের অন্য কোনো মাঠে খেলে গেলেই আমাদের ফুটবলের মান রাতারাতি উন্নত হয়ে যাবে না। কিন্তু এশীয় তো নয়ই, এমনকি দক্ষিণ এশীয় মানেও অতি সাধারণ বাংলাদেশের ফুটবলকে এগিয়ে যেতে প্রেরণা হিসেবে তা অবশ্যই কাজ করতে পারে। এর ধারাবাহিকতায় বিশ্বের আরও বড় বড় ক্লাব ও জাতীয় দলের বাংলাদেশে আগমনের সম্ভাবনা বাড়বে, তাতে সন্দেহ নেই। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের খ্যাতিমান ক্লাবগুলো তাদের মৌসুমের শুরুতে প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলার জন্য এশিয়ার কয়েকটি দেশ সফর করে। আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া ম্যাচের সফল আয়োজন এ তালিকায় বাংলাদেশের নাম যুক্ত করাতে সক্ষম হলে সেটাও হবে দেশের ফুটবলের উন্নয়নে বড় পাওনা। তবে এটাও মনে রাখতে হবে যে, ফুটবলসহ যে কোনো খেলার বিকাশের মূল ভিতটি রচিত হয় সংশ্লিষ্ট দেশের পরিকাঠামো, সার্বিক পরিবেশ এবং সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতার গুণে। আমরা তাকে উপেক্ষা করলে গোটা বিষয়টি হয়ে পড়বে নিছকই সাময়িক চমক। এতে দর্শকরা সাময়িক সময়ের জন্য আনন্দ পাবে, কিছু লোক হয়তো বাণিজ্যিক ফায়দা হাসিল করবে কিন্তু আমাদের খেলাধুলার মান রয়ে যাবে সেই তলানিতেই। লিওনেল মেসি এখন ফুটবল মাঠে যে দক্ষতার বিচ্ছুরণ ও বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছেন তা মুগ্ধ করছে সব মহাদেশের কোটি কোটি অনুরাগীকে। তাকে গণ্য করা হয়ে থাকে দিয়াগো ম্যারাডোনার সার্থক উত্তরসূরিরূপে। এমনও বলা হয়_ তিনি ভিনগ্রহের ফুটবল খেলছেন। তাকে যে কোনো দেশই নিজেদের মাঠে পেলে ধন্য মনে করবে। টেলিভিশনের পর্দায় আর্জেন্টিনা জাতীয় দল কিংবা স্পেনের বার্সেলোনার হয়ে তার খেলা বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীরা নিয়মিত উপভোগ করে। তবে আমাদের মাঠেই তাকে খেলতে দেখা এবং তাও নাইজেরিয়ার মতো একটি শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে, তার আমেজই যে আলাদা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়াও নিজেকে ফুটবলের বিশ্ব শক্তির কাতারে নিয়ে যেতে পেরেছে। তারা এখনও বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়নি বটে, কিন্তু এমনটি যে অসম্ভব কল্পনা নয়, সে বিষয়ে ফুটবল বিশেষজ্ঞদের মধ্যে দ্বিমত কম। অদম্য হিসেবে অভিহিত এ দলটির কাছ থেকেও আমাদের অনেক কিছু শেখার রয়েছে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের এ মহাআয়োজন সুচারুরূপে সম্পন্ন হবে, এটাই কাম্য। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের মতো বড় আয়োজন সফল করার অভিজ্ঞতা এ ক্ষেত্রে কাজে লাগবে। মেসিদের সফরকে কেন্দ্র করে খেলোয়াড় ও দর্শকদের আবেগ থাকবে এটাই স্বাভাবিক, কিন্তু তা যেন বিশৃঙ্খলায় পরিণত না হয়, তার প্রতি সতর্ক নজরদারি চাই। আমাদের যেন বদনাম না হয়।
সবকিছু ছাপিয়ে কিন্তু একটু আক্ষেপ, একটু বেদনাবোধ আমাদের হতেই পারে_ আর্র্জেন্টিনা কিংবা নাইজেরিয়ার মতো দল বাংলাদেশ জাতীয় দলের সঙ্গে খেলার জন্য ঢাকায় আসত! এ আয়োজন থেকে এ লক্ষ্য অর্জনের পথে কিছুটা হলেও যেন এগিয়ে যেতে পারি, সেটাই কাম্য থাকবে।
 

No comments

Powered by Blogger.