সাক্ষ্য দিলেন সাবেক শিল্পসচিব-‘নিজামী বললেন, শিল্প মন্ত্রণালয়কে কিছু করতে হবে না’

ট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানার (সিইউ-এফএল) জেটিঘাটে ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় শিল্প মন্ত্রণালয়কে জড়িয়ে খবর প্রকাশের পরও কোনো ব্যাখ্যা বা ব্যবস্থা নিতে দেননি তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী। মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সচিব শোয়েব আহমেদ এ ব্যাপারে তদন্তের কথা বললে নিজামী জবাবে বলেছিলেন, এ নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে, শিল্প মন্ত্রণালয়কে আলাদাভাবে কিছু করতে হবে না।


গতকাল বুধবার ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় চট্টগ্রামের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১-এ সাক্ষ্য দেওয়ার সময় তৎকালীন শিল্পসচিব শোয়েব আহমেদ আসামি পক্ষের জেরার সময় এ কথা বলেন।
গতকাল বেলা ১২টার দিকে শোয়েব আহমেদের সাক্ষ্য নেওয়া শুরু হয়। ২০১০ সালের ৭ অক্টোবর শোয়েব মহানগর হাকিম আদালতে ১৬৪ ধারায় যে জবানবন্দি দেন, সেটাই তাঁর মূল বক্তব্য বলে আদালতকে জানান। এ পর্যায়ে তাঁকে পর্যায়ক্রমে আসামি মতিউর রহমান নিজামী, লুৎফুজ্জামান বাবর, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী ও সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহসীনউদ্দিন তালুকদারের আইনজীবীরা জেরা করেন।
জেরার মুখে শোয়েব আহমেদ বলেন, ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল গভীর রাতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন চট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানার (সিইউএফএল) জেটিতে খালাসের সময় ১০ ট্রাক অস্ত্র আটক করা হয়। ৪ এপ্রিল রোববার সকালে তিনি শিল্পমন্ত্রী নিজামীর কক্ষে গিয়ে অস্ত্র আটকের কথা তোলেন। তিনি বলেন, ‘আমি বলি, শুক্রবার ইমামুজ্জামান সাহেব ফোন করেছিলেন। তিনি আমাকে সিইউএফএল ঘাটে অস্ত্র আটকের ব্যাপারে জানিয়েছেন। আমার কথা শেষ করতে না করতেই মন্ত্রী বলেন, তিনি এ বিষয়ে সবকিছু অবগত আছেন।’
শোয়েব বলেন, ‘আমি মন্ত্রী মহোদয়কে বলি, “আমি ইমামুজ্জামান সাহেবকে নির্দেশ দিয়েছি সিইউএফএলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংশ্লিষ্টতা থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। তাঁকে এটাও নির্দেশ দিয়েছি যেন গৃহীত ব্যবস্থা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেন।” মন্ত্রী মহোদয় আমাকে বলেন, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। সিইউএফএলের কেউ জড়িত কি না তা তারাই বের করতে পারবে। শিল্প মন্ত্রণালয়কে আলাদাভাবে কিছু করতে হবে না।”’
গতকাল আসামির আইনজীবীরা সাক্ষীকে জেরা করার সময় কী নথিভুক্ত করা হচ্ছে তা বিচারকের কাছে জানতে চান। বিচারক বলেন, ‘আমি আপনাদের সম্মান করি আর আপনারা আমার সঙ্গে খেলা করেন। বিচারক কী লিখছেন তা কৌঁসুলিকে দেখাতে বাধ্য নন। প্রয়োজন হলে এর সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করা যাবে।’ এ পর্যায়ে কয়েকজন আইনজীবী বিচারকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন।
জেরা শেষ হওয়ার পর ট্রাইব্যুনালের বিচারক এস এম মজিবুর রহমান আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি রাখার আদেশ দেন।

No comments

Powered by Blogger.