দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

ঈদের সময় একই দিনে দুটি ট্রেন দুর্ঘটনা কোনো দৈব ব্যাপার নয়। এই সন্দেহ অমূলক নয় যে দুর্ঘটনাগুলো সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কর্তব্য পালনে অবহেলা ও গাফিলতির কারণেই ঘটে থাকবে। দুটি তদন্ত কমিটি গঠন আমাদের আশ্বস্ত করেনি। যদি সত্যিই এ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির সুনির্দিষ্ট তথ্য মানুষ জানতে পারে, তখনই আমরা শুধু আশ্বস্ত হতে পারি। তবে যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বাধীন একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটিকে রিপোর্ট দিতে তিন কার্যদিবস সময় বেঁধে দেওয়ার পরে আরেকটি নন–ক্যাডার কমিটিকে কোনো নির্দিষ্ট সময় বেঁধে না দিয়ে ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে’ রিপোর্ট দিতে বলা স্বাভাবিক ঘটনা নয়। অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা হলো, কমিটি গঠন করার মধ্যেই সত্য আড়ালের চেষ্টা থাকে। চার ঘণ্টার ব্যবধানে সীতাকুণ্ড ও পাহাড়তলী স্টেশনের অদূরে দুর্ঘটনা ঘটল। এর ফলে রেলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ১০ ঘণ্টার দীর্ঘ একটা অচলাবস্থা তৈরি হয়, যাত্রীরা ভোগান্তি ও হয়রানির কবলে পড়ে।
দুর্ঘটনার জন্য কারও বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ যেখানে প্রত্যাশিত ছিল, সেখানে কর্তৃপক্ষ দুটি কমিটি গঠন করেই দায়িত্ব শেষ করেছে। ঈদের সময় ট্রেনে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। সে ক্ষেত্রে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের আরও সজাগ ও সতর্ক থাকা উচিত ছিল। হয়তো ভাগ্যের জোরে দুটি দুর্ঘটনার কোনোটিতেই বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি। কিন্তু বড় ধরনের দুর্ঘটনা হতে পারত। এত দিন সরকারি মহল থেকে দাবি করা হচ্ছিল, রেলসেবার মানের ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করা হয়েছে। এটাই কি উন্নয়নের নমুনা? রেলওয়ে আমাদের জাতীয় প্রতিষ্ঠান। ব্যক্তি বা গোষ্ঠীবিশেষের খামখেয়ালিতে একে ধ্বংস হতে দেওয়া যায় না। এর ভেতরের কালো বিড়াল খুঁজে বের করতেই হবে। তদন্ত কমিটি সত্য উদ্‌ঘাটন করতে সক্ষম হবে এবং কর্তৃপক্ষ দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দিতে দ্বিধা করবে না, এটাই প্রত্যাশিত। কমিটির রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশ করা হোক।

No comments

Powered by Blogger.