কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিন্দুমাত্র ছাড় দেবেন না

রাজনাথ সিং
অশান্ত কাশ্মীর পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিন্দুমাত্র ছাড় না দিতে বলেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেই সঙ্গে বিক্ষুব্ধ নাগরিকদের ইট-পাথর ছোড়ার জবাবে একান্ত বাধ্য না হলে গুলি না চালানোরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব মহর্ষি ও গোয়েন্দাপ্রধানদের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার এক বৈঠকে রাজনাথ সিং এসব নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলায় সবচেয়ে বেশি বিক্ষোভ দেখা যাচ্ছে। এই জেলা মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির এলাকায়। রাজনৈতিকভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা চলছে। নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর সদস্যদের শুধু সাধারণ নাগরিকদের মৃত্যু বন্ধ নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে, গতকাল কাশ্মীরে টানা ৩৯তম দিন কারফিউ চলে। নিহত ব্যক্তির সংখ্যা ৭০ ছুঁই ছুঁই। আহত পাঁচ সহস্রাধিক। স্কুল, কলেজ, সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ। জনজীবন স্তব্ধ। গত সোমবার ভারতের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কাশ্মীরে সহিংসতার মাত্রা বাড়বে বলে আশঙ্কা ছিল। দিল্লিতে পাকিস্তানের হাইকমিশনার আবদুল বাসিতের গত রোববার করা মন্তব্যের পর সেই আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়। ওই দিন পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে বাসিত বলেছিলেন, পাকিস্তানের এই বছরের স্বাধীনতা দিবস কাশ্মীরের স্বাধীনতার আন্দোলনের প্রতি উৎসর্গ করা হচ্ছে। সেই আশঙ্কা সত্য প্রতিপন্ন হয় নয়জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে। এই সংকট নিরসনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভেঙ্কাইয়া নাইডু কংগ্রেসসহ সব রাজনৈতিক দলকেই বেলুচিস্তান, গিলগিট, পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরের ব্যাপারে এক সুরে কথা বলার আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে কংগ্রেস নেতা সালমান খুরশিদ, জয়রাম রমেশের অভিযোগ, কাশ্মীর নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তা থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। চলতি মাসের ২৫ ও ২৬ তারিখ ইসলামাবাদে সার্ক অর্থমন্ত্রীদের সম্মেলন। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সেই সম্মেলনে ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির পাকিস্তানে না যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সরকারি পর্যায়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো না হলেও বিভিন্ন সরকারি সূত্রের খবর, কদিন আগেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে যে ব্যবহার করা হয়েছে (পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মধ্যাহ্নভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েও নিজে যাননি, ফলে রাজনাথও ভোজ এড়িয়ে যান), তারপর অর্থমন্ত্রীর না যাওয়াই উচিত বলে ভারত মনে করছে। তাঁর বদলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসলামাবাদে যেতে পারেন।

No comments

Powered by Blogger.