সুন্দরবন দিবস আজ, স্লোগান সুন্দরবনকে ভালবাসুন by বাবুল সরদার

বিশ্ব ভালবাসা দিবসে সুন্দরবনকে ভালবাসুন_একে রায় এগিয়ে আসুন_এ আহ্বানে আজ রবিবার ১৪ ফেব্রুয়ারি ৯ম সুন্দরবন দিবস। এ দিবসকে সামনে রেখে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন ও জীববৈচিত্র রায় পরিবেশ আন্দোলনের আওতায় ঘোষিত 'খুলনা ঘোষণার ১৮' দফা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন পরিবেশবাদী সংগঠন ও সুন্দরবন সুরায় নিয়োজিত সুন্দরবন একাডেমীসহ এ অঞ্চলের মানুষ।
বনখেকোরা এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যার ফলে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন আজ হুমকির মুখে পড়েছে। সুন্দরবনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে রয়েছে দণি-পশ্চিমাঞ্চলসহ সমগ্র দেশের পরিবেশ-প্রতিবেশ। দণি-পশ্চিমাঞ্চলের ২ কোটি মানুষের অর্থনৈতিক, সামাজিক অবস্থাও সুন্দরবনের ওপর কম-বেশি নির্ভরশীল। সুতরাং আগামী প্রজন্মকে সুস্থ পরিবেশ সম্পন্ন দেশ উপহার দিতে এবং সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটন এবং বনজ ও মৎস্য সম্পদের মাধ্যমে বছরে হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের পথ সুগম করতে সুন্দরবনকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। সুন্দরবনের সুষ্ঠু পরিবেশ-প্রতিবেশ রা করে পর্যটন শিল্প সমপ্রসারণ ও বনজ-মৎস্য সম্পদের মাধ্যমে বছরে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের পথ সুগম করারও দাবি উপকূলীয় অঞ্চলের সাড়ে তিন কোটি মানুষের।
২০০১ সালের ১৪ ফেব্রম্নয়ারি বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের আওতায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রূপানত্মর ও পরশের উদ্যোগে এবং দেশের আরও ৭০টি পরিবেশবাদী সংগঠনের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলনে ঘোষিত 'সুন্দরবন দিবসকে' সরকারীভাবে পালনের দাবি এ অঞ্চলের গণমানুষের দাবিতে পরিণত হয়েছে। এ সম্মেলনে পরিবেশবাদীদের প থেকে সুন্দরবন ও এর জীববৈচিত্র রায় সমন্বিতভাবে ১৮ দফা প্রসত্মাবনা ঘোষণা বাসত্মবায়নের জন্য কার্য়কর পদপে গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। ১৮ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- সুন্দরবন ও বনের জীববৈচিত্র্য সংরণের ল্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে হবে, জাতির প্রতীক হিসাবে চিহ্নিত রয়েল বেঙ্গল টাইগার রার জন্য অনতিবিলম্বে বাঘ-হরিণসহ সুন্দরবনের সকল প্রকার প্রাণি হত্যা বন্ধসহ যাবতীয় বেআইনী কার্যকলাপ বন্ধ, সুন্দরবনের পাশর্্ববতী এলাকাসমূহের উন্নয়ন প্রকল্পে যে কোন পদপে গ্রহণের পূর্বে সংশিস্ন-ষ্ট বিশেষজ্ঞ এবং স্থানীয় জনগণের মতামত নিতে হবে, জীববৈচিত্র্য সংরণ-নবায়ন ও উন্নয়নের ল্যে যথোপযুক্ত পদপে গ্রহণ করতে হবে, তেল-গ্যাস আবিষ্কারের জন্য অনুসন্ধানী উদ্যোগ বন্ধ, আইনানুগ সম্পদ আহরণকারীদের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত, বন ও বন্যপ্রাণী আইনকে আরও যুগোপযোগী এবং প্রয়োজনে পৃথক বন আইন, বনের ভিতর ও পাশ দিয়ে প্রবাহিত নদীসমূহের সংস্কার বিশেষ করে গোরাই নদী শাসনের ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো, সুন্দরবন এলাকায় চিংড়ি পোনা ধরার কারণে মাছসহ জলজ সম্পদের যে তি হচ্ছে তা রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এছাড়া সুন্দরবনে জাতীয় ও আনত্মর্জাতিক টুরিস্ট স্পট গড়ে তোলা, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান-দতা ও আগ্রহ বিবেচনা করে সুন্দরবন বিষয়ক গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশেষ ভূমিকা রাখার সুযোগ প্রদান করা, সুন্দরবনের ব্যবস্থাপনা বিশেষ করে সম্পদ ব্যবস্থাপনা-নবায়ন ও সংরণে জনগণ ও সুশীল সামাজের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, জীববৈচিত্র্যের বিশেষ অাঁধারের বিভিন্ন উপাদানের সঙ্গে জাতিকে পরিচিত করানোর জন্য জনগণের পরিধি বিসত্মৃত করা, বন ও বনের জীববৈচিত্র্য রায় গণসচেতনতা সৃষ্টি, জীববৈচিত্র্য রা-প্রজনন-রোগবালাইসহ যে কোন কারণে গবেষণার পদপে, সুন্দরবনের অবয় রোধকল্পে বনবিদ-শিাবিদ-গবেষক-পরিবেশবিদ এবং জাতীয় ও স্থানীয় এনজিও, সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও জনপ্রতিনিধি সমন্বয়ে নির্বাহী মতাসম্পন্ন সুন্দরবন ওয়াচ গ্রম্নপ বা সুন্দরবন পর্যবেণ দল গঠন ও সুন্দরবনের বিতর্কিত বিষয়ে অধিকতর মতবিনিময়ের ব্যবস্থা করাসহ ১৮দফা দাবি 'সমন্বিত খুলনা ঘোষণায়' উপস্থাপন করা হয়। এছাড়া সুন্দরবনের ৫ হাজার প্রজাতির সম্পূরক উদ্ভিদ, ১৯৮ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ১২৪ প্রজাতির সরীসৃপ, ৫৭৯ প্রজাতির পাখি, ১২৫ প্রজাতির সত্মন্যপায়ী প্রাণী ও ৩০ প্রজাতির চিংড়ি মাছ রয়েছে। যা যথাযথভাবে সংরণেরও দাবি জানানো হয়। পরিবেশবাদীদের এ দাবি আজও বাসত্মবায়ন হয়নি। বিশ্ব ভালবাসা দিবসের প্রাক্কালে তাই সুন্দরবনকে ভালবেসে একে রায় সরকারী ও বেসরকারী সকল মহল এগিয়ে আসবেন এ আশাবাদ এ অঞ্চলের সর্বসত্মরের মানুষের। এ দিবস উপল েসুন্দরবন একাডেমীর সহায়তায় সুন্দরবন দিবস উদযাপন পর্ষদ বাগেরহাটের উদ্যোগে র্যালি, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিশ্ব সপ্তমাশ্চর্য নির্বাচনে ভোটিং কার্যক্রম কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছে ।

No comments

Powered by Blogger.