ইতিহাসবিষয়ক সেমিনারে বক্তারা- তরুণ প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে

ইতিহাস বিকৃতিসহ রাষ্ট্রের নানামাত্রিক অবহেলায় দেশের ইতিহাসচর্চায় সৃষ্টি হয়েছে হতাশাব্যঞ্জক পরিস্থিতি। তাই ইতিহাস অধ্যয়নে অনীহা রয়েছে তরুণ প্রজন্মের।
এ পরিস্থিতিতে দেশের আগামী প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে হলে দেশের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে। দেশের পাঠ্যক্রমে ইতিহাসচর্চার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে শিক্ষাবিদ ও গবেষকেরা এ মন্তব্য করেছেন। গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাঠ্যক্রমে ইতিহাসচর্চার বিষয়ে এ সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনী।
সেমিনারের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী বক্তব্যের শুরুতে ইতিহাসচর্চার শোচনীয় চিত্র জেনে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সেমিনারে ‘মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক কারিকুলাম: প্রসঙ্গ ইতিহাস’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক মোহাম্মদ সেলিম।
গওহর রিজভী ইতিহাসচর্চার হতাশাব্যঞ্জক পরিস্থিতির জন্য পঁচাত্তর-পরবর্তী সরকারগুলোকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি হচ্ছে ইতিহাসের বিকৃতি। পঁচাত্তরের পর যে সরকারগুলো এসেছে, তারা কখনো বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধকে গ্রহণ করেনি।’
সভাপতির বক্তব্যে ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘ভবিষ্যতে সঠিকভাবে ইতিহাস পড়ানো না হলে পরবর্তী প্রজন্মকে পাকিস্তানমুখী করানো হবে। তাই তাদের মাঝে দেশপ্রেমের চেতনা জাগ্রত করতে হলে দেশের ইতিহাস জানাতে হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক মেজবাহ কামাল বলেন, ‘রাষ্ট্রের কারণেই ইতিহাসের এ মরণদশা তৈরি হয়েছে। দেশের ৩৪টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মাত্র পাঁচটিতে ইতিহাস পড়ানো হয়। ৫৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটিতেও ইতিহাস পড়ানো হয় না। আমাদের রাষ্ট্র মৌলবাদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কাজ করছে।’
অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, লেখক ও সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির বলেন, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

No comments

Powered by Blogger.