ট্রাইব্যুনালের মন্তব্য-পাকিস্তান রক্ষায় বাহিনী গড়ে জামায়াত

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান রক্ষায় জামায়াতে ইসলামী প্যারামিলিটারির ভূমিকা পালন করে। দলটি পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা দিতে নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলে। জামায়াত রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনী গঠন করে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করেছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ অপারেশন সার্চলাইট নামে নিধনযজ্ঞ শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় নিরস্ত্র মানুষ, হিন্দু সম্প্রদায়, আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক, বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অপকর্মের সঙ্গে সহযোগী বাহিনী হিসেবে জামায়াতের গড়া রাজাকার, আলবদর ও আলশামস মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকে। গতকাল সোমবার সাবেক জামায়াত নেতা মাওলানা আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে দায়ের করা মামলার রায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ মন্তব্য করেন।
ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিরা রায় শুনে প্রতিক্রিয়ায় জানান, জামায়াত এত দিন যেসব অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে, এ রায়ের মাধ্যমে তার অবসান হয়েছে। আজ এ কথা প্রমাণিত যে তৎকালীন জামায়াত সদস্যরা রাজাকার ছিলেন। তাঁরা পাকিস্তানের দোসর।
রায়ের এক স্থানে বলা হয়, পাকিস্তানি সেনাদের নৈতিক সমর্থন দিয়েছে জামায়াত। তাদের সহযোগিতা করেছে। এ জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় মিলিশিয়া বাহিনী গঠন করা হয়েছিল।
এই রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনী পাকিস্তানের সঙ্গে ও পৃথকভাবে বাঙালি নারী-পুরুষের ওপর নির্যাতন করে। হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগি্নসংযোগে সহযোগিতা করে। আবার নিজেরাও এসব কাজ করে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দেশত্যাগে এবং ধর্মান্তরিত হতে বাধ্য করে। রাজি না হলে হত্যা ও নির্যাতন করে।
রায়ের এক স্থানে আরো বলা হয়, আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার ফরিদপুর এলাকায় রাজাকার বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি আলবদর বাহিনীও গঠন করেন। এ সময় জামায়াতের আরেক নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল। তাঁরা উভয়েই রাজাকার বাহিনীর সদস্য ছিলেন বলে সাক্ষীদের জবানবন্দিতে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাঁদের কোনো কোনো সাক্ষী পাকিস্তানি সেনা ক্যাম্পে দেখেছেন বলেও এ মামলায় উঠে এসেছে।

No comments

Powered by Blogger.