তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন-নাশিদ স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন

মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ কোনো অভ্যুত্থানের কারণে পদত্যাগ করেননি। কমনওয়েলথ সমর্থিত এক তদন্ত কমিশন গতকাল বৃহস্পতিবার এই দাবি করেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট নাশিদের বিতর্কিত পদত্যাগের মূল কারণ অনুসন্ধানের জন্য কমিশন অব ন্যাশনাল ইনকোয়ারি গঠন করা হয়েছিল।


২০০৮ সালে দেশের ইতিহাসের প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে জয়ী হয়ে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের পদে আসেন মোহাম্মদ নাশিদ। রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার ও দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে ফৌজদারি আদালতের প্রধান বিচারক আবদুল্লাহকে গ্রেপ্তার করতে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দেন তিনি। বিচারককে আটকের পর দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তাল হয়ে ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ ফেব্রুয়ারি তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। তবে পদত্যাগের পর নাশিদ অভিযোগ করেন, সেনা ও পুলিশি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাঁকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা হয়েছে। মালদ্বীপের সংবিধান অনুযায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ওয়াহিদ প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন। তবে নাশিদের পদত্যাগের কারণ অনুসন্ধানের জন্য কমনওয়েলথের সমর্থনে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়। মালদ্বীপের রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনীত চারজন সদস্য ও কমনওয়েলথ মনোনীত সিঙ্গাপুরের এক বিচারককে নিয়ে মোট পাঁচ সদস্যের কমিশন গঠিত হয়।
কমিশন অব ন্যাশনাল ইনকোয়ারি (সিওএনআই) গতকাল ৬২ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, 'নাশিদ নিজের ইচ্ছাতেই এবং স্বাধীন মতেই প্রেসিডেন্টের পদে ইস্তফা দিয়েছেন। তাঁকে পদত্যাগে বাধ্য করা বা ভয় দেখানোর কোনো কারণ ছিল না। আইনি ও সাংবিধানিক উপায়েই প্রেসিডেন্টের পদে পরিবর্তন এসেছে।' নাশিদের পদত্যাগের সময় তিন দিনব্যাপী 'রাজনৈতিক অস্থিরতার' যেসব ঘটনা ঘটেছিল, সেই ব্যাপারে নতুন করে তদন্ত শুরু করার সুপারিশ করেছেন সিওএনআই সদস্যরা। তদন্ত কমিশনে নাশিদের মনোনীত সদস্য আহমেদ সায়িদ এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন। গত বুধবার নিজের সমর্থকদের প্রতি নাশিদ আহ্বান জানিয়েছিলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে যদি তাঁর দাবি প্রত্যাখ্যান করা হয়, তাহলে গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে উৎখাত করতে হবে। গতকাল নাশিদের দল মালডিভিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি (এমডিপি) সিওএনআইয়ের প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে। এমডিপির মুখপাত্র হামিদ আবদুল গাফুর বলেন, 'তদন্ত প্রতিবেদনে বাস্তবতার কোনো প্রতিফলন নেই। আমাদের নির্বাহী পরিষদ ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবে।' সূত্র : এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.