মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার-‘সাঈদী বোরকা পরে গরুর গাড়িতে করে পালান’
মুক্তিযোদ্ধাদের ভয়ে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী যশোরের বাঘারপাড়ার রওশন আলীর বাড়ি থেকে বোরকা পরে গরুর গাড়িতে করে পালিয়ে যান বলে জবানবন্দিতে জানিয়েছেন জুলফিকার আলী (৫৯)। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সাঈদীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তিনি রাষ্ট্রপক্ষের ১৬তম সাক্ষী।
জুলফিকার গতকাল বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, তিনি মুক্তিযোদ্ধা। মুুক্তিযুদ্ধ শেষে তিনিসহ বাঘারপাড়ার অন্য মুক্তিযোদ্ধারা এলাকায় রাজাকারদের খোঁজার একপর্যায়ে জানতে পারেন, রওশন আলীর বাড়িতে একজন লোক আশ্রয় নিয়েছেন। একদিন ওই লোককে তাঁরা রওশনের সঙ্গে বাঘারপাড়া বাজারে দেখেন। স্থানীয় মানুষ জানায়, ওই লোক রওশনের বাড়িতে আত্মগোপন করে আছেন। বাঘারপাড়ার মুক্তিযোদ্ধাদের কমান্ডার সোলায়মানের (বর্তমানে মৃত) সঙ্গে আলোচনা করে তাঁরা ওই লোককে ধরে আনবেন বলে ঠিক করেন। পরে তাঁরা রওশনের বাড়ি ঘেরাও করলেও ওই লোককে পাননি। জিজ্ঞাসাবাদে রওশন জানান, ওই লোকের নাম দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী এবং বাড়ি পিরোজপুরে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি তাঁর এলাকায় অত্যাচার-নির্যাতন করেছিলেন, সে জন্য তাঁর (রওশন) বাড়িতে আত্মগোপন করেন। পরে খবর নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা জানেন, সাঈদী গরুর গাড়িতে করে বোরকা পরে তালবাড়িয়া গ্রামের দিকে পালিয়েছেন।
জুলফিকার আরও বলেন, ২০০৫ অথবা ২০০৬ সালে বাঘারপাড়ায় চারদলীয় জোটের এক সভায় তিনি আবার সাঈদীকে দেখেন। ওই সভায় সাঈদী বলেন, ‘রওশন ভাই না থাকলে আমি বাঁচতাম না।’ এরপর রওশন মঞ্চে উঠে সাঈদীর পাশে বসেন।
বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে বেলা সোয়া একটার দিকে জুলফিকারের জবানবন্দি শেষ হয়। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হলে রাষ্ট্রপক্ষের ১৫তম সাক্ষী মো. সোলায়মান হোসেনকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম। সোলায়মান গত মঙ্গলবার জবানবন্দি দেন।
জেরায় এক প্রশ্নের জবাবে সোলায়মান বলেন, তিনি বাঘারপাড়া থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। একপর্যায়ে মিজানুল বলেন, সাক্ষী দুবার দুর্নীতির অভিযোগে হাজত খেটেছেন। জবাবে সাক্ষী বলেন, তিনি রাজনৈতিক কারণে হাজত খেটেছেন, দুর্নীতির কারণে নয়। ট্রাইব্যুনাল এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইলে তিনি বলেন, তিনি মোট চারবার হাজত খেটেছেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর, ১৯৮৭ সালে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় এবং ১৯৯৫ ও ২০০৪ সালে। প্রতিবারই তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সোলায়মানের জেরা শেষ হলে জুলফিকার জবানবন্দি দেন। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর কার্যক্রম আবার শুরু হলে জুলফিকারকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ও কফিলউদ্দিন চৌধুরী। মিজানুলের এক প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী বলেন, তিনি বর্তমানে বাঘারপাড়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আগে থেকেই তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। একপর্যায়ে মিজানুল প্রশ্ন করেন, চারদলীয় জোটের ওই সভায় সাঈদী একাত্তরের ৭ মার্চের পরে কাবুলিওয়ালা হত্যাকাণ্ড, ঝুমঝুমপুরের হত্যাকাণ্ড এবং শেখ মুজিবুর রহমানের অসহযোগ আন্দোলনের সময় রওশনের বাড়িতে থাকার কথা বলেছিলেন কি না? জবাবে সাক্ষী বলেন, এটা তাঁর জানা নেই।
রওশন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে না বিপক্ষে ছিলেন—মিজানুলের এ প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী বলেন, রওশন কোনো পক্ষে ছিলেন না। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রওশন যশোর এলাকায় সাঈদীর সঙ্গে ওয়াজ মাহফিল করতেন কি না, তা তাঁর জানা নেই। রওশন এখনো জীবিত।
পরে জেরায় আইনজীবী কফিলউদ্দিন বলেন, ৪০ বছর ধরে সংবাদ পত্রিকার যশোর প্রতিনিধি সাংবাদিক রোকনউদ্দৌলার মুক্তিযুদ্ধে যশোর বইয়ে রাজাকারের তালিকায় সাক্ষীর (জুলফিকার) নাম আছে, এটা কি তিনি জানেন? এ সময় সাক্ষী উত্তেজিত হয়ে বলেন, মিথ্যাভাবে তাঁর নাম দেওয়া হয়েছে। একজন সাংবাদিক লিখে দিলেই কেউ রাজাকার হয়ে যায় না। এক সপ্তাহ রাজাকারদের সঙ্গে যুদ্ধের পর তিনি ধরা পড়ে কারাগারে যান। সেখানে রাজাকাররা তাঁকে নির্যাতন করে, শরীরের নানা জায়গায় চামড়া কেটে ফেলে। আইনজীবী ওই রাজাকারদের হালাল করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
ট্রাইব্যুনাল সাক্ষীকে শান্ত হতে বলেন। পরে কফিলউদ্দিন প্রশ্ন করেন, সাক্ষীর ছেলে তুহিন বর্তমান সরকারের আমলে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে চাকরি পেয়েছেন কি না? জবাবে জুলফিকার হ্যাঁ-সূচক জবাব দিয়ে বলেন, মুক্তিযোদ্ধার ছেলে চাকরি পাবে না?
বিকেল সোয়া চারটার দিকে জুলফিকারকে জেরা শেষ হলে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
জুলফিকার আরও বলেন, ২০০৫ অথবা ২০০৬ সালে বাঘারপাড়ায় চারদলীয় জোটের এক সভায় তিনি আবার সাঈদীকে দেখেন। ওই সভায় সাঈদী বলেন, ‘রওশন ভাই না থাকলে আমি বাঁচতাম না।’ এরপর রওশন মঞ্চে উঠে সাঈদীর পাশে বসেন।
বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে বেলা সোয়া একটার দিকে জুলফিকারের জবানবন্দি শেষ হয়। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হলে রাষ্ট্রপক্ষের ১৫তম সাক্ষী মো. সোলায়মান হোসেনকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম। সোলায়মান গত মঙ্গলবার জবানবন্দি দেন।
জেরায় এক প্রশ্নের জবাবে সোলায়মান বলেন, তিনি বাঘারপাড়া থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। একপর্যায়ে মিজানুল বলেন, সাক্ষী দুবার দুর্নীতির অভিযোগে হাজত খেটেছেন। জবাবে সাক্ষী বলেন, তিনি রাজনৈতিক কারণে হাজত খেটেছেন, দুর্নীতির কারণে নয়। ট্রাইব্যুনাল এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইলে তিনি বলেন, তিনি মোট চারবার হাজত খেটেছেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর, ১৯৮৭ সালে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় এবং ১৯৯৫ ও ২০০৪ সালে। প্রতিবারই তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সোলায়মানের জেরা শেষ হলে জুলফিকার জবানবন্দি দেন। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর কার্যক্রম আবার শুরু হলে জুলফিকারকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ও কফিলউদ্দিন চৌধুরী। মিজানুলের এক প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী বলেন, তিনি বর্তমানে বাঘারপাড়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আগে থেকেই তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। একপর্যায়ে মিজানুল প্রশ্ন করেন, চারদলীয় জোটের ওই সভায় সাঈদী একাত্তরের ৭ মার্চের পরে কাবুলিওয়ালা হত্যাকাণ্ড, ঝুমঝুমপুরের হত্যাকাণ্ড এবং শেখ মুজিবুর রহমানের অসহযোগ আন্দোলনের সময় রওশনের বাড়িতে থাকার কথা বলেছিলেন কি না? জবাবে সাক্ষী বলেন, এটা তাঁর জানা নেই।
রওশন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে না বিপক্ষে ছিলেন—মিজানুলের এ প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী বলেন, রওশন কোনো পক্ষে ছিলেন না। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রওশন যশোর এলাকায় সাঈদীর সঙ্গে ওয়াজ মাহফিল করতেন কি না, তা তাঁর জানা নেই। রওশন এখনো জীবিত।
পরে জেরায় আইনজীবী কফিলউদ্দিন বলেন, ৪০ বছর ধরে সংবাদ পত্রিকার যশোর প্রতিনিধি সাংবাদিক রোকনউদ্দৌলার মুক্তিযুদ্ধে যশোর বইয়ে রাজাকারের তালিকায় সাক্ষীর (জুলফিকার) নাম আছে, এটা কি তিনি জানেন? এ সময় সাক্ষী উত্তেজিত হয়ে বলেন, মিথ্যাভাবে তাঁর নাম দেওয়া হয়েছে। একজন সাংবাদিক লিখে দিলেই কেউ রাজাকার হয়ে যায় না। এক সপ্তাহ রাজাকারদের সঙ্গে যুদ্ধের পর তিনি ধরা পড়ে কারাগারে যান। সেখানে রাজাকাররা তাঁকে নির্যাতন করে, শরীরের নানা জায়গায় চামড়া কেটে ফেলে। আইনজীবী ওই রাজাকারদের হালাল করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
ট্রাইব্যুনাল সাক্ষীকে শান্ত হতে বলেন। পরে কফিলউদ্দিন প্রশ্ন করেন, সাক্ষীর ছেলে তুহিন বর্তমান সরকারের আমলে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে চাকরি পেয়েছেন কি না? জবাবে জুলফিকার হ্যাঁ-সূচক জবাব দিয়ে বলেন, মুক্তিযোদ্ধার ছেলে চাকরি পাবে না?
বিকেল সোয়া চারটার দিকে জুলফিকারকে জেরা শেষ হলে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
No comments