আমিরাতে সড়ক দুর্ঘটনা

সংযুক্ত আরব আমিরাতে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬ বাংলাদেশিসহ ২২ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২৪ জন। প্রকাশিত সংবাদ থেকে এ কথা জানা যায়।
আমিরাতে আল-আইন নগরীর জখির এলাকায় যাত্রীবাহী একটি বাসের সঙ্গে মালবাহী লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার। জানা গেছে, এরা সবাই পরিচ্ছন্নতা কর্মী।ঘটনাটি হৃদয়বিদারক। এই দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতদের পরিবারে এই খবরে যে শোকের মাতম আসবে তা বুঝতে কষ্ট হয় না। এ খবরটি সারাদেশে মানুষকে বেদনার্ত করেছে। বিদেশ-বিভুঁইয়ে কাজ করতে গিয়ে একী পরিণতি হলো তাদের। এর চেয়ে মর্মান্তিক আর কী হতে পারে!
আমাদের দেশের বহু তরুণ বিদেশে কাজ করেন। তারা কাজ করে দেশে টাকা পাঠান। তাদের পরিবারের লাভ হয়, দেশেরও উপকার হয়। দেশে এখনও চাকরির সঙ্কট। তাই বিদেশে চাকরির সন্ধানে ছোটা। নানা ধরনের কাজ নিয়ে বিদেশে যাচ্ছেন এদেশের তরুণরা। যাচ্ছে নিজের পরিবারে সচ্ছলতা আনতে, নিজেদের ভাগ্য ফেরাতে। তারা কাজ করতে যাবেন, আবার সুস্থভাবে সবাই ঘরে ফিরে আসবেন এটাই তাদের পরিবারের তো বটেই দেশবাসীর প্রত্যাশা।
কিন্তু সবার সেই প্রত্যাশা পূরণ হয় না যেমন এই ক্ষেত্রে। এর কিছুদিন আগে বাহরাইনে এক গৃহে অগ্নিকা-ে ১১ জন বাংলাদেশী শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন। এবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রাণ হারালেন এই হতভাগ্যরা। তাঁরা গিয়েছিলেন বিরাট এক আশা নিয়ে। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানোর ফলে সে আশা পূরণ হতে পারল না। এদের পরিবারেও ছিল বিরাট প্রত্যাশা। সে প্রত্যাশা যাতে কোনভাবেই ব্যর্থ হয়ে না যায়, সেটা সরকারকে দেখতে হবে। প্রথমত যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের মৃতদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এবং তাঁদের পরিবারের জন্য আর্থিক সহায়তার কোন ব্যবস্থা ওই দেশের সরকার বা তাদের কর্মস্থল থেকে পাওয়া যায় কিনা সেটা নিশ্চিত করা দরকার।
এ ছাড়া আমাদের সরকারী তরফে তাঁদের পরিবারের সহায়তার জন্য কিছু করা যায় কিনা তাও বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা দরকার।
যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা জরুরী। সে চিকিৎসা তাঁরা সেখানে পাচ্ছে কিনা সেটা দেখা দরকার। এ ব্যাপারে সে দেশে আমাদের দূতাবাসকে বিশেষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.