প্রজেক্ট প্রোফাইল তৈরি করেই এক শ’ কোটি টাকা আত্মসাত!- টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প অনিশ্চিত ॥ জাইকা অর্থ ছাড় নাও করতে পারে by ফিরোজ মান্না

বিদেশী অর্থ নয় ছয় করার জন্য বিটিসিএলের একটি চক্র মরিয়া হয়ে উঠেছে। এই চক্র প্রজেক্ট প্রোফাইল তৈরি করেই এক শ’ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বিরাট অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার কারণে জাপানী দাতা সংস্থা জাইকা অর্থ ছাড় করতে নাও পারে।
এখন প্রকল্পটিই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট (টিএনডি) প্রকল্পটি আদৌ বাস্তবায়ন হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, জাপানী অর্থ সহযোগিতায় প্রায় ৮শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট (টিএনডি) প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখার আগেই এক শ’ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ও বিটিসিএল’র কয়েকজন কর্মকর্তা, প্রকল্পের পিডি মিলে প্রকল্প থেকে টাকা লুটের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্পের পিপিতে (প্রজেক্ট প্রপোজাল) দেড় শ’ কোটি টাকা বেশি দেখানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিটিসিএল’র এক কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দায়ের করেছেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক তদন্তে নেমেছে। দুদকের তদন্তও অনেক দূর এগিয়েছে।
এদিকে বিটিসিএল’র একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা বলেন, ৮শ’ কোটি টাকার জাইকা প্রকল্প বাস্তবায়নের আগেই দুর্নীতি হওয়ায় জাইকা অর্থ সহযোগিতা থেকে বিরত রয়েছে। আদৌ এই অর্থ জাইকা ছাড় করবে কিনা বলা যাচ্ছে না। প্রকল্প পরিচালকের নেতৃত্বে বিটিসিএল ও মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে ১৫০ কোটি টাকা লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
একটি গোয়েন্দা সংস্থা প্রায় আট মাস আগে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট আরও কয়েকটি দফতরে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাইকা প্রকল্পের লট-বিতে অবৈধভাবে একটি বিশেষ কোম্পানিকে কাজ পাইয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। এতে এক শ’ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণসহ দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের চিহ্নিতও করেছে তারা। জাইকার বাংলাদেশ অফিসের কর্মকর্তাদের মোবাইল ট্র্যাক করে গোয়েন্দা সংস্থাটি নিশ্চিত হয়ে ওই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এরপরও বহাল তবিয়তে প্রকল্প পরিচালক স্বপদেই রয়ে গেছেন। আবারও লট-এ এবং বি একই প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়ার উদ্দেশ্যে দরপত্রের শর্তাদির পরিবর্তন করে মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করেন। এখান থেকে আরও ৫০ কোটি টাকা লুটপাট করার ব্যবস্থা হচ্ছে। এই বিষয়ে খোদ জাপানী প্রতিষ্ঠান এনইসির অভিযোগে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে উঠে এসেছে। এমনকি দরপত্র মূল্যায়ন কমিটিতে বিটিসিএল‘র বাইরের তিন জন সদস্যই ভিন্ন মত পোষণ করলেও তাদের নোট অব ডিসেন্ট আমলে নেয়া হয়নি। তৎকালীন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রাজিউদ্দিন রাজুর মন্ত্রণালয় পরিবর্তনের পর, সাহারা খাতুন দুর্নীতি শক্ত হাতে দমন করবেন এমন আশা করা হয়েছিল। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের কতিপয় কর্মকর্তা সাহারা খাতুনকে ভুল বুঝিয়ে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের ব্যবস্থা করেছেন।
জাইকার অর্থে হাতে নেয়া প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) অশোক কুমার ম-ল জনকণ্ঠকে বলেন, প্রকল্পের কাজই শুরু হয়নি। এখানে অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটার সুযোগ নেই। প্রকল্পটি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে মাত্র। তবে ২০ কোটি টাকা প্রকল্পের পরামর্শক কাজে ব্যয় করা হয়েছে। কাওয়াবাতা নামের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটিও হচ্ছে জাপানী। জাইকা এখন পর্যন্ত প্রকল্পের অর্থ ছাড় করেনি। পিডি অশোক কুমার ম-লের বিরুদ্ধে দুদক তদন্ত করে সমস্ত অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে। অশোক কুমার ঘন ঘন বিদেশ যান। বিশেষ করে ভারতেই তিনি বেশি যান। কারণ তার পরিবার পরিজন সবাই ভারতের কলকাতায় অবস্থান করে। কখনও তিনি সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, নেপাল সফরের নাম করে আবার কখনও ভারতীয় ভিসা নিয়ে কলকাতায় যাতায়াত করেন। কলকাতায় তার ছেলেমেয়েরা ভাল ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে। অশোক কুমার ম-ল তার পরিবার পরিজন যে কলকাতায় থাকে স্বীকার করেছেন। তবে তিনি ঘন ঘন কলকাতায় যান না। সিঙ্গাপুরে দুই বার গিয়েছেন হার্টের এনজিও গ্রাম করাতে। সিঙ্গাপুর থেকে সরাসরি ভারতে যাওয়া যায় না বলে তিনি জানান। কলকাতায় বছরে এক দু’বার যাওয়া হয়। এটা অস্বীকার করার কিছু নেই।
সূত্র জানিয়েছে, জাইকা প্রকল্পে দরপত্রে দুটি লটের প্রতিটিতে এক শ’ কোটি টাকা অতিরিক্ত মূল্যে একটি বিশেষ কোম্পানিকে কার্যাদেশ দিয়ে অনৈতিক আর্থিক সুবিধা আদায়ের জন্য লট-এ তে কেটি-মারুবেনি জয়েন্ট ভেঞ্চার হিসেবে লট-বিতেও মারুবেনিকে সাবকন্ট্রাক্টর দেখিয়ে কোটি টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। প্রকল্প পরিচালক অশোক কুমার ম-লের নেতৃত্বে জাপানী পরামর্শক কাওয়াবাতা, পরিচালক (ক্রয়) মোঃ সাহাবুদ্দিনসহ কয়েকজন কর্মকর্তা জড়িয়ে পরেন এবং পর¯পর যোগসাজশে প্রাক্কলন থেকে শুরু করে ক্রয় কার্যক্রমের সকল ক্ষেত্রে আইন বহির্ভূত অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করেন। এ সকল কার্যক্রম এবং দায়ী কর্মকর্তাবৃন্দ গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক চিহ্নিত হয়েছে এবং তা তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখিত আছে। জাইকা প্রকল্পে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত জেটেক-এর সঙ্গে স¤পাদিত বিটিসিএল ২০১০ সালের ২৮ নবেম্বর স্বাক্ষরিত চুক্তিতে বলা হয়েছে, প্রকল্পের সকল ক্রয় কার্যক্রমে সুস্পষ্টভাবে বাংলাদেশের পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা-২০০৮-এর প্রাকযোগ্যতা বাধ্যতামূলকভাবে মানতে হবে। কিন্তু তা না মেনে জাপানী পরামর্শক প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে যোগসাজশে কোন ক্ষেত্রেই ক্রয় আইন ও বিধিমালার কোন তোয়াক্কা করেনি। জাপানী বিখ্যাত কো¤পানি এনইসি-এর পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী দায়েরকৃত অভিযোগপত্রে দেখা গেছে যে লট-এ এর আর্থিক মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রস্তুতকালে জাপানী পরামর্শক ও বিটিসিএল’র সাব-কমিটি দরপত্রের উল্লেখিত শর্তসমূহ পালন না করে ওই প্রতিষ্ঠানকে সর্বনিম্ন দরদাতা ঘোষণা করেন। বিটিসিএল’র একজন কর্মকর্তা জানান, কেটি-মারুবেনি জেভির দরপ্রস্তাব প্রকৃতপক্ষে আর্থিক মূল্যায়নে অযোগ্য ঘোষিত হওয়ার কথা ছিল। কারণ দরপত্রের শর্তানুযায়ী সকল আবশ্যিক ইকুইপমেন্টে সেবার দর প্রদান করেনি। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে স¤পূর্ণ ফাঁকা রেখে আর্থিক দরপ্রস্তাব দাখিল করেছে। পরামর্শক ও উপ-কমিটি অবৈধভাবে এই অযোগ্য দরপ্রস্তাবকে যোগ্যই ঘোষণা করেনি বরং তাদের মূল দরের সঙ্গে এসকল আবশ্যিক দ্রব্যাদির দর যোগ করে সম পর্যায়ে এনে দরপ্রস্তাবসমূহ মূল্যায়ন করার চেষ্টাও করেনি।
অপরদিকে, এনইসি তাদের দর প্রস্তাবে অনেক ঐচ্ছিক ইকুইপমেন্টে সেবার দর দাখিল করেছে যা বাদ দিয়ে আর্থিক মূল্যায়নের কথা থাকলেও ইচ্ছা করে মূল দরের সঙ্গে রেখে দেয়া হয়েছে। এতে আপাত দৃষ্টিতে মূল্যায়ন সঠিক মনে হবে। এমন সব অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে কেটি-মারুবেনি জেভিকে সর্বনিম্ন দেখানো হয়েছে যা ক্রয় আইনের স¤পূর্ণ পরিপন্থী। দরপ্রস্তাব দাখিলের দিন ১ ডলার সমান ৮০ ইয়েন ছিল বর্তমানে এটি প্রায় ৯০ ইয়েনে দাঁড়িয়েছে। এনইসি প্রায় ৩ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন জাপানী ইয়েন এবং ৪৫ কোটি টাকায় দরপ্রস্তাব দাখিল করেছে। মারুবেনি জেভি প্রায় ৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে দরপত্র দাখিল করেছিল। বর্তমান ডলার-ইয়েন দরে এনইসির দরপ্রস্তাব প্রায় ৪ শ’ মিলিয়ন ইয়েন কম। প্রকল্পটির খরচ জাইকার জাপানী ইয়েনের ঋণে পরিশোধিত হবে। এই কাজে কার্যাদেশ প্রদান করলে অতিরিক্ত প্রায় ৫০ কোটি টাকা সরকারের ক্ষতি হবে।
জানা গেছে, আট সদস্য বিশিষ্ট দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির আহ্বায়ক মোঃ আজিজুল ইসলাম প্রথমে ব্যাখ্যা গ্রহণের মাধ্যমে সঠিক মূল্যায়নে উপনিত হওয়ার চেষ্টা করলেও, পরে তৎকালীন মন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপে এবং কমিটির বিটিসিএল অন্যান্য কর্মকর্তা সদস্যদের চাপে কোনরকম যাচাই বাছাই ছাড়াই সাব-কমিটির ঐ প্রতিবেদনকে সমর্থন করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বাধ্য হয়। দরপত্র মূল্যায়ন প্রতিবেদনের সঙ্গেও ওই পাঁচ পৃষ্ঠার ভুয়া মূল্যায়নের নির্ণায়ক জালিয়াতির মাধ্যমে সংযুক্ত করা হয় কিন্তু সংযুক্তিতে, পরিচালক (ক্রয়) ব্যাতীত আর বাকি সাত সদস্যের কার কোন স্বাক্ষর নেই। মোঃ আমিনুল হাসানকে মহাব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) হিসেবে নিয়োগ দিয়ে এই প্রাক্কলন অনুমোদনের ব্যবস্থা করা হয়। তৎকালীন সদস্য (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন), মোঃ আজিজুল ইসলাম কর্তৃক নথিতে উপস্থাপিত আপত্তি উপেক্ষা করে, তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সাইদ খান, প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে যোগসাজশে তা অনুমোদন করেন।
সূত্র জানিয়েছে, পরিচালনা পর্যদের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে প্রকল্প পরিচালকের প্ররোচনায় ২১ মার্চের পরিচালনা পর্ষদের সভার সিদ্ধান্ত, ৪ এপ্রিলের সভায় নিশ্চিতকরণ, ১৮ মার্চের মন্ত্রণালয়ের আদেশ ও ৩ মে আর্থিক প্রস্তাব খোলার তথ্য গোপন রেখে বিটিসিএল ৭ মে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে গিয়ে নেটাসের পক্ষে দেয়া রিভিউ প্যানেলের সিদ্ধান্তকে অকার্যকর করার জন্য রিট আবেদন করে।
এদিকে, দুদক গত বছরের মে মাসে এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করে। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত চিহ্নিত কর্মকর্তাসহ মূল্যায়ন কমিটির সদস্যবৃন্দকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদক তলবি পত্র প্রেরণ করে। বিটিসিএল গোয়েন্দা সংস্থা এবং দুদক-এর কাছে বিষয়টি বিচারাধীন দেখিয়ে তদন্ত কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য বিভিন্ন অজুহাতে বেঞ্চ পরিবর্তন করে শুনানি পেছানোর চেষ্টা করতে থাকে। অবশেষে একটি বেঞ্চে শুনানি ধার্য্য হয় এবং হাইকোর্ট পূর্ণ শুনানি শেষে গত বছরের ৮ আগস্ট বিটিসিএল’র দায়েরকৃত রিট খারিজ করে দেয় এবং নেটাসের দায়েরকৃত রিট আবেদন মঞ্জুর করে। দুদককে বিষয়টি এখনও বিচারাধীন দেখিয়ে তদন্ত কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য হাইকোর্টের পুর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের আগেই পরিচালনা পর্যদের অনুমতি ছাড়াই প্রকল্প পরিচালক নানা কৌশলে হাইকোর্টের রায়ের স্থগিতাদেশ চেয়ে ২৩ আগস্ট আপীল আবেদন করান। কিন্তু, আদালত স্থগিতাদেশ দেয়নি বরং কোর্টের অবকাশ শেষ হওয়ার ২ সপ্তাহের মধ্যে ১৩ অক্টোবরের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে লিভ টু আপীল আবেদনের জন্য সময় বেঁধে দেয়। বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে লিভ টু আপীল আবেদন না করতে পারলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল বলে গণ্য হবে। এর মধ্যে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় জারি হয়। রায়ে ২ সপ্তাহের মধ্যে রিভিউ প্যানেলের সিদ্ধান্ত প্রতিপালন করতে বিটিসিএলকে নির্দেশ দেয়া হয়। এছাড়াও রায়ে বিটিসিএল কর্তৃক রিট দায়েরকালে তথ্য গোপন করা, কোর্টের কাছে পরিষ্কার হাতে না আসা, ব্যবস্থাপনা পরিচালকের এসটোপেলের কারণে রিট আবেদন করার অধিকার না থাকা ইত্যাদি উল্লেখ রয়েছে। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করার পর গত বছরের ২৩ আগস্ট বিটিসিএল’র ৭৯তম বোর্ড সভায় লিভ টু আপীল করার ভূতাপেক্ষ অনুমোদন চাওয়া হয়। সভায় পরিচালনা পর্যদ থেকে জানানো হয় বিটিসিএল তাদের এখতিয়ার এবং কো¤পানি আইন অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বিটিসিএল ও মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত বছরের ৪ অক্টোবর ৮১তম বোর্ড সভায় বিটিসিএল’র নেয়া আইনী ব্যবস্থা স¤পর্কে সাবধান করা হয়। ১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ৮২তম বোর্ড সভায় স্পষ্টভাবে বলা হয়, যেহেতু পরিচালনা পর্যদের কোন নির্দেশনার কারণে এহেন পরিস্থিতির উদ্ভব হয়নি, কাজেই এ ব্যাপারে পরিচালনা পর্যদ কোন দায়দায়িত্ব গ্রহণ করবে না। অথচ আইনজীবী আনিসুল হকের চেম্বার থেকে অক্টোবরে বিটিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবরে বিল পরিশোধ বিষয়ে চিঠি পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, পাঁচ লাখ টাকা আগে সমন্বয় করা হয়েছে। বকেয়া ছয় লাখ টাকা সমন্বয় করতে বলা হয়।
জাইকা প্রকল্পে অবৈধ এক শ’ কোটি টাকা প্রাক্কলন বৃদ্ধির বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আনার পর তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) এবং সদস্যকে (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) নানা প্রতিকূল অবস্থায় পড়তে হয়েছে। দুর্নীতিতে সহযোগিতা না করায় তাকে তাৎক্ষণিকভাবে বদলি হতে হয়েছে। সদস্য (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পরবর্তীতে তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। এই সময়েও তিনি প্রকল্পের লট-বির পর লট-এতেও দুর্নীতিতে সাহায্য করতে রাজি হননি। পরে তাঁকে ওএসডি করা হয়। পরিচালনা পর্যদ সভার আগেই আস্থাভাজন মোঃ কলিমুল্লাহকে তার দায়িত্বের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব দেয়া হয়। জাইকা প্রকল্পের প্রমাণিত এক শ’ কোটি টাকা দুর্নীতি এবং অবৈধ ভিওআইপি কলের বিষয়ে মোঃ কলিমুল্লাহকে দুদক জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

No comments

Powered by Blogger.