বাংলাদেশকে ১শ' কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা দেবে তুরস্ক by রাজু আহমেদ

 এইডসবিরোধী প্রচারণার ৰেত্রে সমলিঙ্গের মধ্যে অনিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়টি আড়ালে রয়ে যাচ্ছে। দেশে সমকামিতায় অভ্যস্ত প্রায় ১ কোটি নারী-পুরুষ মারাত্মক এইডস ঝুঁকিতে থাকলেও সরকারী-বেসরকারী কোন প্রচারণায়ই এ বিষয়টি সামনে আসছে না।
অথচ দেশে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে এ ধরনের প্রবণতা। সামাজিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে স্পর্শকাতর হওয়ায় সমকামিতার ইস্যুটি চাপা পড়ে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। ইন্ট্যারন্যাশনাল এইডস সোসাইটির 'বাংলাদেশে সমকামিতার ধরন : এইডস প্রতিরোধে পরামর্শ' শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে প্রায় ১ কোটি নারী-পুরম্নষ সমকামিতায় অভ্যসত্ম। প্রতিদিনই এ সংখ্যা বাড়ছে। ৮-৯ বছর বয়সেই অনেক শিশু সমকামিতায় অভ্যসত্ম হয়ে পড়ে। তবে ১৩-১৫ বছর বয়সীদের মধ্যে এ প্রবণতা উদ্বেগজনক। ১৭-২৪ বছর বয়সী তরম্নণরা কম বয়সীদের সঙ্গে এ সম্পর্ক গড়ে তুলছে। অল্প বয়সীদের কেউ কেউ স্বেচ্ছায় সমকামিতায় যুক্ত হলেও বেশিরভাগ ৰেত্রেই তাদের এ কাজে বাধ্য করা হয়।
জাতিসংঘের 'রিপোর্ট অন দ্য গেস্ন-াবাল এইডস এপিডেমিক ২০০৮' প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সমকামিতার প্রসার এবং এ ধরনের যৌন সম্পর্কের ঝুঁকি সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে এশিয়ায় পুরম্নষদের মধ্যে এইডস আক্রানত্মের হার তুলনামূলক বেশি।
গবেষণায় দেখা গেছে, পুরম্নষ সমকামীদের অধিকাংশই সমলিঙ্গের পাশাপাশি কোন না কোন নারীর সঙ্গেও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। এরমধ্যে বেশিরভাগই বিবাহিত এবং সনত্মানের পিতা। অনেকেই বিবাহবহিভর্ূত শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত। তবে স্ত্রী বা নারী সঙ্গীর কাছে সমকামিতার বিষয়টি সম্পূর্ণ গোপন থাকে। ফলে সমকামে অভ্যসত্ম ব্যক্তির পাশাপাশি তার নারী সঙ্গীও নিজের অজানত্মেই এইডস আক্রানত্ম হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।
ড. এস খানের 'যৌন সম্পর্কের গোপনীয়তা ও লজ্জা : ঢাকার সমকামী পুরম্নষদের যৌন স্বাস্থ্যের উন্নয়ন' শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে পুরম্নষ সমকামীদের মধ্যে ২৬ শতাংশ প্রতি মাসে গড়ে ১০ সঙ্গীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। এদের মধ্যে কোন একজন এইচআইভি আক্রানত্ম হলেই দ্রম্নত এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, অনেক পুরম্নষই বিয়ের আগে বা পরে স্ত্রীর কাছ থেকে দূরে থাকা অবস্থায় নারী যৌনকর্মী বা সঙ্গীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ককে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করে জৈবিক চাহিদা মেটাতে সমকামে অভ্যসত্ম হয়ে পড়ে। বিকল্প হিসেবে তারা ছেলে শিশু বা সমবয়সী পুরম্নষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী হয়। আবার অল্প বয়সে সমকামিতার শিকার হয়ে শেষ পর্যনত্ম কেউ কেউ পেশাদার সমকামী হয়ে ওঠে। সমকামী পুরম্নষদের অনেকেই এইডসপ্রবণ বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করায় তাদের মাধ্যমে জীবাণুু প্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে। সমলৈঙ্গিক শারীরিক সম্পর্কের ৰেত্রে কনডম বা ওয়াটার বেসড লুব্রিক্যান্টের প্রবণতা না থাকায় সমকামীদের মধ্যে এইডসসহ যৌনরোগ ছড়ানোর মারাত্মক ঝুঁকি রয়ে যাচ্ছে। সমকামিতার কারণে শিশুদের মধ্যে অল্প বয়সেই এইডসসহ যৌনরোগের ঝুঁকি বাড়ছে। ফলে এইডস আক্রানত্ম হওয়ার ৰেত্রে সমকামিতার বিপদ সম্পর্কে ব্যাপক প্রচারণা জরম্নরী।
এইডস প্রতিরোধের জন্য সারাদেশে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হলেও এতে সমকামিতার বিপদ এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। জাতীয় এইডস নীতিতে পুরম্নষ সমকামীদের উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় গবেষণার প্রয়োজনীয়তা উলেস্নখ করা হয়েছে। কিন্তু সমকামীদের চিহ্নিত করতে এখনও সরকারী পর্যায়ে কোন উদ্যোগই নেয়া হয়নি। এইডস নিয়ে প্রচুর কাজ হলেও হাতেগোনা দু'একটি এনজিওর সীমিত কাজ থাকলেও জাতীয়ভাবে উদ্যোগ না থাকায় এ বিষয়ে জনসচেতনতা গড়ে উঠছে না। প্রচারমাধ্যমে প্রচারিত বিজ্ঞাপনে এইডস ছড়ানোর সব কারণ সম্পর্কে প্রত্যৰ বা পরোৰ বক্তব্য থাকলেও সমকামিতার ঝুঁকি সম্পর্কে কোন কিছুই বলা হয় না। ফলে পুরো প্রচার কার্যক্রমেই বিষয়টি আড়ালে রয়ে যাচ্ছে। অথচ 'সমলিঙ্গের সঙ্গে শারীরিক সমর্্পক এইডস ছড়ায়'_এ বক্তব্য প্রচার করা কোনভাবেই বিব্রতকর হওয়ার কথা নয়।
জাতিসংঘের এইডস বিভাগের নির্বাহী পরিচালক পিটার পিয়টের মতে, সমকামিতাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে আইন প্রণয়ন না করে শত রকমের নীতি প্রণয়ন ও চর্চা করলেও এ মহামারী রোধ করা সম্ভব নয়।

No comments

Powered by Blogger.