ড. ইউনূসই গ্রামীণ ব্যাংক ধ্বংস করে যাবেন: by মুহিত

গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসই ব্যাংকটিকে ধ্বংস করবেন বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সচিবালয়ে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হকের সঙ্গে বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংকটাকে ধ্বংস করার সব ব্যবস্থা উনি (ইউনূস) করে রেখেছেন। যিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন, তিনিই এটাকে ধ্বংস করে যাবেন।’
মন্ত্রীর এ মন্তব্যের সময় গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘শুরুর দিকে মোজাম্মেল হক গ্রামীণ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ছিলেন। ১৯৮২ সালে যখন এটি একটি প্রকল্প ছিল মাত্র। ২০০৩ সালে তিনি অবসরে যান। এই ফাঁকে অন্য একটি প্রতিষ্ঠান দাঁড় করান। মোজাম্মেল হক এসেছিলেন মূলত এ নিয়ে কথা বলতে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তাঁকে বললাম, আরও আগে কেন আসেননি? তাহলে ক্ষুদ্রঋণ ব্যাংক হিসেবে গড়ে তুলে দিয়ে যেতে পারতাম।’
গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নিয়োগ বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি বাছাই কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু মুহাম্মদ ইউনূস তা আটকে রেখেছেন। মামলা করে বন্ধ করে রেখেছেন।’
ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক দখল করে বসে আছেন বলেও মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘উনি এটাকে নিয়ে কোনো কাজ করতে দেবেন না।’
একপর্যায়ে কিছুটা ক্ষুব্ধ কণ্ঠে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংকটাকে ধ্বংস করার সব ব্যবস্থা উনি করে রেখেছেন। যিনি ব্যাংকটা প্রতিষ্ঠা করেছেন, তিনিই এটাকে ধ্বংস করে যাবেন।’
অর্থমন্ত্রীর কথা শেষ হওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক। তিনি কিছু নতুন তথ্য জানান। চেয়ারম্যান বলেন, গ্রামীণফোনের লভ্যাংশ হিসেবে গ্রামীণ টেলিকমের ৩০ হাজার কোটি টাকার হদিস নেই। এ টাকা গ্রামীণ ব্যাংকের থাকার কথা ছিল। এ টাকার সুবিধাভোগী হওয়ার কথা গ্রামীণ ব্যাংক সদস্যদের।
মোজাম্মেল হক প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘এ টাকা কোথায় গেল? শোনা যাচ্ছে, গ্রামীণ টেলিকম আরেকটি সংস্থা করেছে। সেটি হচ্ছে গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্ট। এ টাকা হয়তো সেখানেই রয়েছে।’
তবে বিষয়টি গ্রামীণ ব্যাংক কমিশন খতিয়ে দেখছে বলে জানান মোজাম্মেল হক।
গ্রামীণ ব্যাংকের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে চেয়ারম্যান বলেন, ‘ব্যাংকের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। এর দুই হাজার ৫৬৭টি শাখা, ২৬ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। অথচ অবস্থা টালমাটাল হয়নি। কারও মধ্যে কোনো অস্থিরতা নেই। ২০১১ সালে মুনাফা ছিল ৮৫ কোটি টাকা। আর এবার হয়েছে ১৪০ কোটি টাকা।
মুহাম্মদ ইউনূসের বিদায়ের বিষয়টি উল্লেখ করে মোজাম্মেল হক আরও বলেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংকের যখন ৩০ বছর, তখন স্যার চলে গেছেন। তিনি একটি কাঠামো তৈরি করে রেখে গেছেন। এখন তা ধরে রাখতে পারলেই হলো।’

No comments

Powered by Blogger.