অ্যাসিডদগ্ধ ছাত্রীর দ্বিতীয় দফায় অস্ত্রোপচার- প্রধান আসামি মনির রাঙামাটিতে গ্রেপ্তার

রাজধানীর ইডেন কলেজের ছাত্রীকে অ্যাসিডদগ্ধ করার মামলার প্রধান আসামি মনিরউদ্দিনকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাঙামাটি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সকালে বরকল উপজেলার দুর্গম কুরকুটিছড়ি থেকে আনসার সদস্যদের সহায়তায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ওই ছাত্রীর দ্বিতীয় দফা অস্ত্রোপচার গতকাল সম্পন্ন হয়েছে।
মনিরকে গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনাকারী দলের প্রধান ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, মনিরের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে চার দিন আগে তাঁরা রাঙামাটিতে অবস্থান নেন। আনসার সদস্যদের নিয়ে ডিবি পুলিশ গতকাল মনিরকে গ্রেপ্তার করে। রাতে তাঁকে নিয়ে ডিবির দলটি ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছে।
বরকলের ২৭ আনসার ব্যাটালিয়নের কুসুমছড়ি ক্যাম্পের মো. আবু বকর সিদ্দিক মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘অপরিচিত এক ব্যক্তি কুরকুটিছড়ির রঙ্গু মিয়া চৌধুরীর বাড়িতে অবস্থান করছেন বলে খবর পাওয়া যায়। সকাল ১০টার দিকে ডিবি পুলিশ ১০-১২ আনসার সদস্যকে নিয়ে ওই বাড়ি ঘিরে ফেলে মনিরকে গ্রেপ্তার করে।’ ওই অভিযানে থাকা আনসারের নায়েক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে মনির অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর হাতে কাটা দাগ ও শরীরে কয়েকটি স্থানে অ্যাসিডে পুড়ে যাওয়ার চিহ্ন রয়েছে।’
বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ১৫ জানুয়ারি রাজধানীর চানখাঁরপুলের এক কাজি অফিসে ওই ছাত্রীকে অ্যাসিডদগ্ধ ও ছুরিকাঘাত করা হয়। তাঁর ভাই এ ব্যাপারে মনির ও সহযোগী মাসুমকে আসামি করে বংশাল থানায় মামলা করেন।
এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০ জানুয়ারি আসামিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। গত বুধবার মনির ও মাসুমকে গ্রেপ্তারে ৪৮ ঘণ্টার সময় দেন হাইকোর্ট। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে র‌্যাবের মহাপরিচালক ও গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়। মাসুম এখনো গ্রেপ্তার হয়নি।
দ্বিতীয় দফায় অস্ত্রোপচার: ওই ছাত্রীর চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান সমন্বয়কারী সামন্ত লাল সেন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বেলা একটা থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী ওই ছাত্রীর দ্বিতীয় দফা অস্ত্রোপচার হয়। এবার তাঁর মুখ ও হাতের ক্ষতিগ্রস্ত চামড়া ফেলে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘তাঁর শরীরে এখনো অনেক ক্ষতিগ্রস্ত চামড়া রয়েছে। আমরা ধারাবাহিকভাবে অস্ত্রোপচার করে এসব ফেলে দিয়ে নতুন চামড়া প্রতিস্থাপন করব। এ জন্য আরও অন্তত পাঁচবার অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে।’
ওই ছাত্রীর প্রথম দফা অস্ত্রোপচার হয় গত সোমবার।
এদিকে ওই ছাত্রীর বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদন করেছে পরিবার। ছাত্রীর ভাই প্রথম আলোকে গতকাল বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

No comments

Powered by Blogger.