জামায়াতের উদ্বেগ- বিচারের নামে দলীয় ‘এজেন্ডা’ বাস্তবায়ন বিএনপি চায় না

বিএনপির সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধার দল হিসেবে বিএনপি একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার পূর্ণভাবে সমর্থন করে। তবে বিচারের নামে কোনো রাজনৈতিক দলের ‘এজেন্ডা’ বাস্তবায়িত হোক, সেটা বিএনপি চায় না।
গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত আলোচনা সভায় তরিকুল এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৭৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনার আয়োজন করা হয়।
এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গতকাল আবুল কালাম আযাদের মামলায় জামায়াতে ইসলামী ও দলের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে জড়িয়ে যে রায় দিয়েছেন, তাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দলটি।
বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ‘৪০ বছর পর আজ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হচ্ছে। সেই বিচার প্রশ্নবিদ্ধ না হোক, কোনো দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন না হোক; সেটাই চায় বিএনপি।’ তিনি বলেন, ‘এই বিচার স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক মানের হোক, সেটা আমরা প্রত্যাশা করি। বিএনপি চায় মানবতাবিরোধী অপরাধ তখন যারা করেছে, এখন যারা করছে, সবার বিচার হোক।’
তরিকুল বলেন, স্বাধীনতার পর ৪০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা প্রগতিশীল যুবককে রক্ষীবাহিনী ধরে নিয়ে হত্যা করে। আজ এই মঞ্চ থেকে বিএনপি সেই ৪০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা হত্যার বিচার চায়। বিএনপি আজ সিরাজ শিকদার হত্যার বিচার চায়।
আবুল কালাম আযাদের মৃত্যুদণ্ডাদেশের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান বিবিসিকে বলেন, ‘বিচার যদি স্বচ্ছ হয়ে থাকে, যিনি অভিযুক্ত তাঁকে ডিফেন্ড করার জন্য যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে আদালত যে রায় দিয়েছেন, তাকে আমি শ্রদ্ধা জানাব।’
জামায়াতের উদ্বেগ: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গতকাল ‘মাওলানা আবুল কালাম আযাদের মামলায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও দলের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে জড়িয়ে যে রায় দিয়েছেন’ তাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দলটি।
গতকাল সোমবার রাতে রায়ের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান দাবি করেন, কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার বক্তব্য না শুনে তাঁর (মুজাহিদ) বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত প্রদান সম্পূর্ণ বেআইনি ও অযৌক্তিক। এ রায়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের প্রকাশ ঘটেছে। জাতি এই রায় প্রত্যাখ্যান করেছে।
বিবৃতিতে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে বিচারকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে দাবি করে বলা হয়, ‘অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, আইন অনুযায়ী যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর বিষয়েই রায় প্রদান স্বাভাবিক। কিন্তু ব্যক্তির অপরাধের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীকে টেনে আনা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আশা করব, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার উদ্দেশ্যে পরিচালিত বিচারের নামে এ প্রহসন বন্ধ করে সরকার দেশকে বিভেদের হাত থেকে রক্ষা করবে।’

No comments

Powered by Blogger.