ক্ষুধার জ্বালায় সন্তানের মাংস ভক্ষণ!

উত্তর কোরিয়ায় ‘নীরব দুর্ভিক্ষ’ চলছে। এতে মারা গেছে ১০ হাজারের বেশি মানুষ। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ, মানুষ নরখাদক হয়ে উঠেছে। কেউ কেউ মৃত মানুষের মাংস খেয়েছে। এমনকি নিজের সন্তানকে হত্যা করে মাংস খাওয়ার মতো বর্বর ঘটনাও ঘটছে।
জাপানের ওসাকাভিত্তিক বিশেষায়িত সংবাদ সংস্থা এশিয়া প্রেসের বরাত দিয়ে সানডে টাইমস-এর খবরে এসব ভয়াবহ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এসব খবর বিশ্বাসযোগ্য বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। দুর্ভিক্ষে মানুষের প্রাণহানির খবরের সত্যতা উত্তর কোরিয়ার কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেনি, আবার অস্বীকারও করেনি।
সানডে টাইমস-এর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, উত্তর কোরিয়ার কৃষিপ্রধান উত্তর ও দক্ষিণ ওয়াংহে প্রদেশে ‘নীরব দুর্ভিক্ষ’ চলছে। ইতিমধ্যে ওই অঞ্চলে ১০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে।
উত্তর কোরিয়ার দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জের ধরে সম্প্রতি জাতিসংঘ দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করে। এমন পরিস্থিতিতে দেশটি সম্পর্কে এসব খবর প্রকাশিত হলো।
সানডে টাইমস জানায়, উত্তর কোরিয়ার ভেতরে তারা ‘নাগরিক সাংবাদিক’-এর একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে। এই নেটওয়ার্ক সেখানকার বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে তাদের তথ্য দিচ্ছে।
দক্ষিণ ওয়াংহে প্রদেশের এমন একজন ‘নাগরিক সাংবাদিক’ গণমাধ্যমকে জানান, ‘গত মে মাসে আমার গ্রামে এক ব্যক্তি তাঁর দুই সন্তানকে হত্যা করে মাংস খাওয়ার চেষ্টা করেন। এ অপরাধে তাঁকে ফায়ারিং স্কোয়াডে নিয়ে হত্যা করা হয়।’
ওই সাংবাদিক জানান, ঘটনার দিন ওই ব্যক্তির স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না। এই সুযোগে তিনি তাঁর বড় মেয়েকে হত্যা করেন। বিষয়টি দেখে ফেলে তাঁর ছোট ছেলে। ফলে তাকেও হত্যা করেন তিনি। যখন তাঁর স্ত্রী বাড়িতে আসেন, তিনি সেই মাংস তাঁকেও খাওয়ার প্রস্তাব দেন। তবে সন্দেহ হওয়ায় তিনি গণনিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে খবর দেন। পরে নিরাপত্তাকর্মীরা তল্লাশি চালিয়ে ঘরের ছাদ থেকে সন্তানদের দেহাবশেষ উদ্ধার করেন।
গু ওয়াং-হো নামের আরেক সাংবাদিক জানান, তাঁদের এলাকায় এক ব্যক্তি খাওয়ার জন্য তাঁর নাতির মৃতদেহ কবর থেকে তুলে আনেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন তিনি।
ক্ষমতাসীন কোরিয়ান ওয়ার্কার্স পার্টির একজন মধ্যম সারির নেতা জানান, চোংডান কাউন্টির এক বাসিন্দা ক্ষুধার জ্বালায় নিজ সন্তানকে হত্যা করে সেই মাংস সেদ্ধ করে খান। এ ঘটনায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া।

No comments

Powered by Blogger.