আফ্রিকার ৩৫ দেশে সেনা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-পাঠানো হচ্ছে গুপ্তচরও

আফ্রিকার ৩৫টি দেশে সেনা মোতায়েন করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৩ সালের মার্চ থেকে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সেনাদের প্রশিক্ষণ দেবে মার্কিন বাহিনী। আল-কায়েদা, আল-শাবাবসহ বিভিন্ন কট্টর ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে ওঠার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সেনাদের লড়াইয়ে প্রস্তুতিতেও সহায়তা করবে তারা।
আফ্রিকায় গুপ্তচরও পাঠাতে যাচ্ছে গোয়েন্দা সংস্থা_ডিফেন্স ইনটেলিজেন্স এজেন্সি (ডিআইএ)।
মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য, তাদের সেনারা আফ্রিকায় সামরিক কোনো অভিযানে অংশ নেবে না। তবে বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, সামরিক অভিযানে অংশ নেওয়ার কথা না থাকলেও দরকারে এ বিধান পরিবর্তন করা খুব কঠিন হবে না। ইউএস আর্মি ফোর্সেস কমান্ডের প্রধান জেনারেল ডেভিড রড্রিগেজ সম্প্রতি এপির কাছে সে কথা স্বীকার করে বলেন, 'সামরিক অভিযানে জড়ানোর ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর নির্বাহী একটি আদেশের দরকার হবে।'
আফ্রিকার দেশগুলোতে কট্টর ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর উপস্থিতি ক্রমশ জোরদার হচ্ছে। তাই ভবিষ্যতে যেকোনো সংকট যাতে মোকাবিলা করা যায়, এ জন্য স্থানীয় সেনাদের যথাযথভাবে প্রস্তুতি নেওয়া দরকার। মার্কিন সেনারা তাদের প্রস্তুতির ব্যাপারটি তদারকি করবে। এর মাধ্যমে সফলতা আসবে বলে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আশা।
প্রাথমিকভাবে মোতায়েন করা সেনা সংখ্যা হবে কম। তবে 'রিজিওনালি অ্যালাইনড ফোর্সেস' নামের একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সে অনুযায়ী, আগামী মার্চ থেকে বিশ্বের যেকোনো স্থানে দ্রুত সেনা মোতায়েন করতে সমর্থ হবে যুক্তরাষ্ট্র। সে ক্ষেত্রে দরকার হলে আফ্রিকাতেও সেনা বাড়ানো যাবে।
এপি জানিয়েছে, ইউনাইটেড স্টেটস আফ্রিকা কমান্ডের (সংক্ষেপে আফ্রিকম) অধীনে কানসাসের ফোর্ট রিলেভিত্তিক সেকেন্ড কমান্ড আগামী মার্চ থেকে আফ্রিকায় কাজ শুরু করবে।
আফ্রিকম হলো যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর ৯টি সমন্বিত যুদ্ধসেনা কমান্ডের (ইউনিফায়েড কমবাট্যান্ড কমান্ডস) একটি। মিসর ছাড়া আফ্রিকার ৫৩টি দেশে মার্কিন সেনা অভিযান ও সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক রক্ষার দায়িত্ব এই কমান্ডের। ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত আফ্রিকমের সদর দপ্তর জার্মানির স্টুডগার্ডে।
চলতি মাসের গোড়ার দিকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সূত্র ওয়াশিংটন পোস্টের কাছে স্বীকার করে, মালিতে মাথা চাড়া দেওয়া আল-কায়েদাসহ অন্যান্য কট্টর গোষ্ঠীগুলোকে প্রতিহত করতে শিগগির মার্কিন সেনারা সেখানে যাবে। তবে পেন্টাগনের সর্বশেষ খবর হলো, আগামী বছরে সেনা মোতায়েনের যে পরিকল্পনা করা হয়েছে, তাতে মালি হলো অনেকগুলো দেশের একটি। আল-কায়েদার সঙ্গে যোগসাজশ থাকা গোষ্ঠীগুলোকে মোকাবিলা করতে সুনির্দিষ্টভাবে লিবিয়া, সুদান, আলজেরিয়া ও নাইজারে যাবে মার্কিন সেনারা। অন্যদিকে সোমালিয়ায় ও কেনিয়ায় আল-শাবাবকে পরাস্ত করতে স্থানীয় সেনাদের প্রশিক্ষণ দেবে তারা।
ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিসের আফ্রিকাবিষয়ক বিশেষজ্ঞ রিচার্ড ডাউনি বলেন, 'আফ্রিকার অনেকগুলো বিষয় আছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উদ্বেগের কারণ; বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদের বিস্তার।' সূত্র : আরটি নিউজ, এনপিআর।

No comments

Powered by Blogger.