নতুন সংবিধান পেল মিসর-ঐক্যের ডাক মুরসির 'লড়াই অব্যাহত' রাখবে বিরোধীরা

মিসরে খসড়া সংবিধান গণভোটে পাস হয়েছে। গত মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত ফল অনুযায়ী ৬৩ দশমিক ৮ শতাংশ ভোটার সংবিধানের পক্ষে 'হ্যাঁ' ভোট দিয়েছে। ফল ঘোষণার পর প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ইতিমধ্যে সংবিধানে সইও করেছেন তিনি। গতকাল স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষন দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশের মাধ্যমে খসড়া সংবিধানটি স্বীকৃতি পেল। ইসলামপন্থীরা একে স্বাগত জানিয়েছে। তবে বিরোধীরা আবারও ফল প্রত্যাখ্যানের কথা জানিয়েছে। 'দেশের মানুষের অধিকার আদায়ে লড়াই অব্যাহত রাখার' ঘোষণা দিয়েছে তারা। বিতর্কিত এ খসড়া সংবিধানকে কেন্দ্র করে মিসরবাসীর মধ্যে সৃষ্ট 'বিভক্তি দূর' করার লক্ষ্যে কাজ করতে প্রেসিডেন্ট মুরসির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিরোধীরা এ সংবিধানকে 'ইসলামপন্থী' আখ্যা দিয়েছে। তবে মুরসির ইসলামপন্থী সমর্থকদের দাবি, নতুন সংবিধান গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতা সংহত করবে।
গত ১৫ ও ২২ ডিসেম্বর দুই দফায় খসড়া সংবিধানের ওপর গণভোট নেওয়া হয়। আগেই প্রকাশিত বেসরকারি ফলাফলে প্রায় ৬৪ শতাংশ মানুষের সংবিধানের পক্ষে রায় দেওয়ার কথা জানা যায়। তবে বিরোধী জোট ন্যাশনাল স্যালভেশন ফ্রন্ট (এনএসএফ) ভোটে কারচুপির অভিযোগ তোলায় আনুষ্ঠানিক ফল প্রকাশের দিনক্ষণ পিছিয়ে দেয় কমিশন। তদন্ত শেষে মঙ্গলবার বিরোধীদের সব অভিযোগ নাকচ করেন নির্বাচন কমিশনের প্রেসিডেন্ট সামির আবুল মাতি। তিনি জানান, দুই দফায় গড়ে ভোটার উপস্থিতির হার ছিল ৩২ দশমিক ৯ শতাংশ।
প্রধানমন্ত্রী হিশাম কানদিল বলেন, 'গণভোটে কেউ হারেনি। এ সংবিধান দেশের সবার জন্য।' অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সহযোগিতা করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি। মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতা মোহাম্মদ বাদাই বলেন, 'মিসরের জন্য নতুন সংবিধান সমর্থন করায় দেশবাসীকে আমি অভিনন্দন জানাই।' দেশ গড়ার কাজে নারী-পুরুষ, মুসলিম-খ্রিস্টান_সবার এগিয়ে আসা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। তাঁর দাবি, গণভোটের মাধ্যমে মিসরের 'পুনর্জন্ম' হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসলামপন্থীদের সহায়তা করবে এ সংবিধান। এটি সাবেক শাসক হোসনি মুবারকবিরোধী গণবিপ্লবের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। প্রায় তিন দশকের শাসনের পর গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হন মুবারক।
এদিকে মঙ্গলবার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন যোগাযোগমন্ত্রী হানি মাহমুদ।
এর কয়েক দিন আগেই পদত্যাগ করেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহমুদ মেক্কি। রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা এমইএনএ-কে যোগাযোগমন্ত্রী বলেন, 'দেশের স্বার্থে পদত্যাগ করেছি।'
সূত্র : এএফপি, বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.