চীনে চালু হলো দ্রুততম ট্রেনের দীর্ঘতম রেলপথ

দ্রুততম ট্রেনের জন্য বিশ্বের দীর্ঘতম রেলপথ চালু করল চীন। গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রতিষ্ঠাতা মাও সে তুংয়ের ১১৯তম জন্মদিনে গতকাল বুধবার দুই হাজার ২৯৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এ রেলপথ উদ্বোধন করা হয়।
রাজধানী বেইজিং থেকে দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংডং প্রদেশের রাজধানী গুয়াংঝু পর্যন্ত এ রেলপথ শুধু দৈর্ঘ্যের দিক থেকেই নয়, প্রযুক্তিগত দিক থেকেও অনেক উন্নত বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এ রেলপথ দিয়ে ট্রেন ছুটবে ঘণ্টায় ৩০০ কিলোমিটার বেগে। বেইজিং থেকে গুয়াংঝু যেতে আগে যেখানে ২২ ঘণ্টা লাগত, সেখানে এখন মাত্র আট ঘণ্টায় পৌঁছানো যাবে। যাত্রাপথে ট্রেনগুলো মোট ৩৫টি স্থানে থামবে।
বেইজিং ওয়েস্ট রেলওয়ে স্টেশন থেকে গতকাল সকাল ৯টায় প্রথম ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ার দৃশ্য ও ট্রেনের ভেতর থেকে সরাসরি প্রতিবেদন সম্প্রচার করেছে চায়না সেন্ট্রাল টেলিভিশন। আরেকটি ট্রেন সকাল ১০টায় গুয়াংঝু থেকে রাজধানীর উদ্দেশে রওনা হয়। এই রেলপথে ঝেংঝু থেকে উহান এবং উহান থেকে গুয়াংঝু পর্যন্ত অংশটি আগে থেকেই চালু রয়েছে।
চীনে দ্রুতগামী রেলব্যবস্থা প্রথম চালু হয় ২০০৭ সালে। বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানায়, দ্রুতগামী ট্রেনের জন্য বর্তমানে ৯ হাজার ৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথ চালু আছে। চায়না ডেইলিতে বুধবার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সাল নাগাদ এ রেলপথ সারা দেশে ৫০ হাজার কিলোমিটারে উন্নীত করা হবে। এগুলো হবে চার লেনবিশিষ্ট।
আগামী ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় চীনে নতুন চান্দ্রবছরের উৎসব শুরু হবে। ওই সময়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে ঘরেফেরা মানুষের চাপ সামাল দিতে এ ট্রেন সেবা বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দ্রুতগামী ট্রেনের এ ব্যবস্থাকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে এ নিয়ে সমালোচনারও কমতি নেই। ২০১১ সালের জুলাইতে পূবাঞ্চলীয় জিজিয়াং প্রদেশে এক ট্রেন দুর্ঘটনায় ৪০ জন নিহত হওয়ার পর এ প্রকল্পটি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। ২০০৮ সালের পর ওটাই ছিল সবচেয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। প্রশ্ন ওঠে, রেলপথকে বিস্তৃত করার দৌড়ে কর্তৃপক্ষ কি নিরাপত্তার ব্যাপারে আপস করছে?
নতুন রেলপথের ব্যবস্থাপনা, পর্যবেক্ষণ ও জরুরি সহযোগিতার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়নে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে রেল মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.