এডিপি কাটছাঁট করে ২৮ হাজার ৫শ' কোটি টাকা চূড়ান্ত- মঙ্গলবার এনইসি বৈঠকে অনুমোদন by জাফর আহমেদ

 চলতি ২০০৯-১০ অর্থবছরের মূল বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) থেকে সাড়ে ৬ শতাংশ কাটছাঁট করে ২৮ হাজার ৫শ' কোটি টাকায় চূড়ানত্ম করা হয়েছে।
এই সংশোধিত এডিপিতে দেশীয় সম্পদের যোগান নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭ হাজার ২শ' কোটি টাকা বা ৫৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আর বৈদেশিক সম্পদের যোগান ১১ হাজার ৩শ' কোটি টাকা বা ৩৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, দারিদ্র্যবিমোচন এবং পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মূল ধারণাকে বিবেচনায় রেখে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় আইলায় তিগ্রসত্মদের পুনর্বাসন প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দিয়ে এবারের এডিপি সংশোধন করা হয়েছে। এ ছাড়াও এবারের সংশোধনীতে তথ্যপ্রযুক্তি উন্নয়ন প্রকল্পগুলোকেও অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে, যাতে এসব প্রকল্প বাসত্মবায়নের মাধ্যমে সরকারের অন্যতম প্রধান নির্বাচনী ইশতেহার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া যায়।
এই সংশোধিত এডিপি আগামী মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় (এনইসি) অনুমোদন দেয়া হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের জন্য সংশোধিত এডিপি হিসেবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম বিভাগ ২৮ হাজার ৫শ' কোটি টাকার যে প্রসত্মাব চূড়ানত্ম করেছে তাতে দেশীয় সম্পদের যোগান ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ২শ' কোটি টাকা, যা মূল এডিপি থেকে ৪শ' ৫৫ কোটি টাকা কম। মূল এডিপিতে স্থানীয় সম্পদের যোগান ধরা হয়েছিল মোট ১৭ হাজার ৬শ' ৫৫ কোটি টাকা বা ৫৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ। পাশাপাশি মূল এডিপিতে বৈদেশিক সম্পদ আহরণের ল্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১২ হাজার ৮শ' ৪৫ কোটি টাকা। সংশোধনীতে এ ল্যমাত্রা ১ হাজার ৫শ' ৪৫ কোটি টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার ৩শ' কোটি টাকায়।
জানা যায়, বৈদেশিক সহায়তার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সম্প্রতি একটি সংশোধনীতে বৈদেশিক সহায়তার সংশোধিনীতে মূল ল্যমাত্রা ১২ হাজার ৮শ' ৪৫ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ১২ হাজার কোটি টাকায় নির্ধারণ করা হলেও সেই সংশোধনীকেও সংশোধন করেছে কার্যক্রম বিভাগ। এ বিভাগের সংশোধনীতে এবার বৈদেশিক সম্পদ আহরণের ল্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে মাত্র ১১ হাজার ৩শ' কোটি টাকা।
সূত্র জানায়, কার্যক্রম বিভাগের প থেকে ১৭টি মন্ত্রণালয়ের জন্য যে প্রসত্মাব করা হয়েছে তা হচ্ছে, কৃষি মন্ত্রণালয় ১ হাজার ৭শ' ৯৯ কোটি যার মূল বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৬শ' ৯৭ কোটি টাকা। পলস্নী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় প্রসত্মাবিত ৩ হাজার ৮শ' ২৬ কোটি টাকা যার মূল বরাদ্দ ছিল ৩ হাজার ৬শ' ২৮ কোটি টাকা প্রায়। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় প্রসত্মাবিত ১ হাজার ৮৫ কোটি টাকা আর মূল বরাদ্দ ছিল ৮ শ' ৮৬ কোটি টাকা। শিল্প মন্ত্রণালয় প্রসত্মাবিত ৪শ' ৭৫ কোটি টাকা যার মূল বরাদ্দ ছিল ৫শ' ২৯ কোটি টাকা প্রায়। বিদু্যত মন্ত্রণালয় প্রসত্মাবিত ২ হাজার ৫শ' ২৯ কোটি টাকা আর মূল বরাদ্দ ছিল ৩ হাজার ৫শ' ৭৪ কোটি টাকা। তেল গ্যাস ও প্রকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয় প্রসত্মাবিত ১ হাজার ৮০ কোটি টাকা যার মূল বরাদ্দ ছিল ৭শ' ৪ কোটি টাকা। পরিবহন মন্ত্রণালয় প্রসত্মাবিত ৩হাজার ৬শ' ৫০ কোটি টাকা, যার মূল বরাদ্দ ছিল ৪ হাজার ৬শ' ৭১ কোটি টাকা। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রসত্মাবিত ৩শ' ২৯ কোটি টাকা যার মূল বরাদ্দ ছিল ৩শ' ৮৪ কোটি টাকা। ভৌত পরিকল্পনা ও পানি সরবরাহ বিভাগের জন্য প্রসত্মাব করা হয়েছে ২ হাজার ৮শ' ৪২ কোটি টাকা, যার মূল বরাদ্দ ছিল ৩ হাজার ৬শ' ১৯ কোটি টাকা। শিা ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জন্য প্রসত্মাব করা হয়েছে ৪ হাজার ২শ' ৭২ কোটি টাকা যার মূল বরাদ্দ ছিল ৪ হাজার ১শ' ৫২ কোটি টাকা। ক্রীড়া ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের জন্য প্রসত্মাব করা হয়েছে ১শ' ৮০ কোটি টাকা, যার মূল বরাদ্দ ছিল ১শ' ৪২ কোটি টাকা। স্বাস্থ্য পুষ্টি, জনসংখ্যা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জন্য প্রসত্মাব ২ হাজার ৯শ' ৮১ কোটি টাকা, যার মূল বরাদ্দ ছিল ৩ হাজার ২শ' ৩৪ কোটি টাকা। গণসংযোগ বিভাগের জন্য প্রসত্মাব করা হয়েছে প্রায় ৭৩ কোটি টাকা এর মূল বরাদ্দ ছিল ৬৪ কোটি টাকা। সমাজ কল্যাণ, মহিলা বিষয়ক ও যুব উন্নয়ন মন্ত্রণালয় প্রসত্মাবিত ২শ' ৮২ কোটি টাকা, যার মূল বরাদ্দ ৩শ' ৭০ কোটি টাকা। জনপ্রশাসন বিভাগ প্রসত্মাবিত ৮শ' ৬২ কোটি টাকা, মূল ছিল ৮শ' ৭৬ কোটি টাকা। বিজ্ঞান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জন্য প্রসত্মাব করা হয়েছে ১শ' ৮৬ কোটি টাকা যার মূল বরাদ্দ ছিল ১শ' ৭৬ কোটি টাকা। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জন্য প্রসত্মাব করা হয়েছে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা, যার মূল বরাদ্দ ছিল ২৩ কোটি টাকা। মোট এই ১৭ মন্ত্রণালয়ের জন্য কার্যক্রম বিভাগ মোট ২৬ হাজার ৪শ' ৮৪ কোটি টাকা প্রসত্মাব করেছে। এসব মন্ত্রণালয়ের জন্য বাজেটে মূল বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল প্রায় ২৮ হাজার ৭শ' ৩১ কোটি টাকা।
সূত্র জানায়, এ ছাড়াও প্রসত্মাবিত সংশোধনীতে কার্যক্রম বিভাগ আরো ১০টি বিভাগের জন্য উন্নয়ন সহায়তা হিসেবে প্রায় ২ হাজার ১৬ কোটি টাকার প্রসত্মাব করেছে। এসব বিভাগের জন্য বাজেটে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল ১ হাজার ৬শ' ৩৩ কোটি টাকা।
সূত্র জানায়, চলতি ২০০৯-১০ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে দারিদ্র্যবিমোচন এবং পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মূূল ধারণাকে বিবেচনায় রেখে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় আইলায় তিগ্রসত্মদের পুনর্বাসন প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দিয়ে এবারের এডিপি সংশোধন করা হয়েছে। এ ছাড়াও এবারের সংশোধনীতে তথ্যপ্রযুক্তি উন্নয়ন প্রকল্পগুলোকেও অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে, যাতে এসব প্রকল্প বাসত্মবায়নের মাধ্যমে সরকারের অন্যতম প্রধান নির্বাচনী ইশতেহার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া যায়।

No comments

Powered by Blogger.