মালয়েশিয়ার জন্য লটারিতে ১১,৭৫৮ জন চূড়ান্ত নির্বাচিত

সরকারিভাবে প্রথম দফায় মালয়েশিয়ায় পাঠানোর জন্য ১১ হাজার ৭৫৮ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে। এই সৌভাগ্যবানদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের তিন হাজার ৬৪৬ জন, চট্টগ্রামের দুই হাজার ২৮৭ জন, রাজশাহীর এক হাজার ৫৫১ জন, খুলনার এক হাজার ২৭৯ জন, সিলেটের ৮৭৩ জন, রংপুরের এক হাজার ৩৬১ জন ও বরিশালের ৭৬১ জন রয়েছেন।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লটারির মাধ্যমে তাঁদের নির্বাচিত করা হয়। প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ সময় বলেন, নির্বাচিত ব্যক্তিদের মুঠোফোন নম্বরে প্রয়োজনীয় বার্তা পৌঁছে যাবে। তাঁদের কোন কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে (টিটিসি) যেতে হবে, বার্তায় তা উল্লেখ থাকবে। টিটিসিতে নির্বাচিত ব্যক্তিদের যাচাই-বাছাই ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে। এরপর তাঁদের ১০ দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব জাফর আহমেদ খান, যুগ্ম সচিব আবু হেনা মোস্তফা কামাল, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক বেগম শামসুন্নাহার, পরিচালক মোহসিন চৌধুরী, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজির (আইআইসিটি) পরিচালক সাইফুল ইসলাম, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের শ্রম কাউন্সিলর মন্টু কুমার ঘোষসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য সারা দেশে মোট ১৪ লাখ ৪২ হাজার ৭৭৬ জন নাম নিবন্ধন করেছিলেন। তাঁদের মধ্য থেকে ৩৬ হাজার ৩৮ জনকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করা হয়। তাঁরা সবাই মালয়েশিয়ায় যাওয়ার সুযোগ পাবেন। তবে প্রথম দফায় বনায়ন খাতে যেতে পারবেন ১০ হাজার কর্মী। এ জন্যই গতকাল ১১ হাজার ৭৫৮ জনকে নির্বাচিত করা হয়।
প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে বা মার্চের শুরুতে কর্মীরা মালয়েশিয়ায় যাওয়া শুরু করবেন। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত ব্যক্তিরা সবাই লটারির ক্রম অনুযায়ী মালয়েশিয়ায় যাওয়ার সুযোগ পাবেন। তাই তাঁদের কাছে অনুরোধ, যাওয়ার জন্য তদবির করতে বা কোনো ধরনের প্ররোচনায় তাঁরা যেন কাউকে টাকা না দেন। কারণ, টাকা দিয়ে কিংবা কারও সুপারিশে এই পদ্ধতিতে কারও মালয়েশিয়ায় যাওয়ার সুযোগ নেই।
চার বছর বন্ধ থাকার পর মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে গত ২৬ নভেম্বর দুই দেশের সরকারের মধ্যে চুক্তি হয়। তবে এবার সরকারিভাবে কর্মী নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ৩০ ডিসেম্বর মালয়েশিয়া প্রথম দফায় বনায়ন খাতে ১০ হাজার কর্মীর চাহিদাপত্র পাঠায়। এরপর ১৩ থেকে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে আগ্রহী ব্যক্তিদের নাম নিবন্ধন শুরু হয়।
বুয়েটের আইআইসিটির সহায়তায় বিএমইটি এই নিবন্ধন সম্পন্ন করে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন এক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্পের অধীনে সারা দেশের ইউনিয়ন তথ্যসেবাকেন্দ্রে এই নিবন্ধন হয়।
যৌথ কমিটির বৈঠক আজ: এদিকে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল (পলিসি ও ইন্টারন্যাশনাল) মোহাম্মদ সাহার বিন দারুসমানের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল গতকাল রাতে ঢাকায় এসেছে। প্রতিনিধিদলে দেশটির পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, মানবসম্পদ, শ্রম, তথ্য ও প্রযুক্তি এবং প্লান্টেশন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। তাঁরা সরকারিভাবে জনশক্তি রপ্তানির নানা বিষয় নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের ১৪ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

No comments

Powered by Blogger.