কাঠমুণ্ডতে বিমান ছিনতাই নায়ক ॥ পাকি জঙ্গী আটক

 জঙ্গী সংগঠন জঈশ-ই-মোহাম্মদের আত্মঘাতী স্কোয়াডের সদস্য পাকিস্তানের আঞ্চলিক নেতাসহ ৫ জঙ্গীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন পরিচয়পত্র ও বৈদেশিক মুদ্রা উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা বাংলাদেশে নতুন করে জঙ্গীবাদ বিসত্মার ও নাশকতার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তারা হাল্কা অস্ত্র, ভারি ও নানা ধরনের বিস্ফোরক ব্যবহারে পারদর্শী। শনিবার রাতে ধানমন্ডির সুকন্যা টাওয়ার ও তার আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাকিসত্মানী নাগরিক রেজোয়ান আহম্মেদ (২৬), বাংলাদেশী নাগরিক ইমাদ উদ্দিন ওরফে মুন্না (১৮), আবু নাসের মুন্সী (২৮) ও সাদেক হোসেন ওরফে খোকা (২৯) ও নান্নু মিয়া ওরফে বেলাল ওরফে বিলস্নালকে (৩৫) গ্রেফতার করে। পাকিসত্মানী নাগরিক রেজোয়ানের পিতার নাম শফি উদ্দিন। বাড়ি পাকিসত্মানের করাচীর দিলস্নী কলোনিতে। ইতোপূর্বেও বাংলাদেশে পাকি জঙ্গী গ্রেফতার হয়েছে। এদেশে বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে জঙ্গীরা ঘাঁটি গেড়ে জঙ্গীবাদের উত্থান ঘটায়।
গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে পাসপোর্ট, বৈদেশিক মুদ্রাসহ নানা সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। তারা বহু ভাষায় পারদর্শী। তারা হাল্কা ও ভারি অস্ত্র চালনা ও চলনত্ম ট্রেনে বোমা হামলা চালাতে পারদর্শী। তারা দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশে জঙ্গী রিক্রুটের কাজ করে আসছিল। বাংলাদেশী জঙ্গী বেলাল ১৯৯৯ সালে নেপালের কাঠমন্ডুতে আইসি ৮১৪ বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় ভারতে গ্রেফতার হয়েছিল। এই জঙ্গীর বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন আদালতে চারটির অধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে। ৯০ দশকে পাকিসত্মানের আরেক জঙ্গী সংগঠন হরকত-উল-মুজাহিদীন থেকে একটি অংশ বের হয়ে জঈশ-ই-মোহাম্মদ গঠন করে। সংগঠনটি পাকিসত্মানে নিষিদ্ধ হলেও পৃথিবীর অনেক দেশেই এদের গোপন কার্যক্রম রয়েছে। ধৃতদের র্যাব ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করছে। ধৃত পাকিসত্মানী এই জঙ্গীর বাংলাদেশের অনেক জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। এমনকি বাংলাদেশ থেকে জঙ্গী সংগঠনগুলোকে নানাভাবে সহায়তা করে আসছিল। এদেশের জঙ্গীরা তাদের নানাভাবে সহযোগিতা করে আসছিল। গ্রেফতারকৃতরা বলেছে, একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতাও পেত তারা। গোয়েন্দারা ধারণা করছে, বাংলাদেশে পাকিসত্মানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বা, জঈশ-ই-মোহাম্মদসহ অনেক জঙ্গী সংগঠনের তৎপরতা রয়েছে।
এদিকে র্যাব কর্মকতর্া ক্যাপ্টেন ওয়ালিদ মোহাম্মদ সাইফুলস্নাহ রবিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে একজন পাকিসত্মানভিত্তিক জঙ্গী সংগঠন জঈশ-ই-মোহাম্মদের আঞ্চলিক নেতা।
এদের চারজনকে শনিবার রাতে ধানম-িতে ঢাকা কলেজের বিপরীত দিকের সুকন্যা টাওয়ার থেকে এবং একজনকে নিউমার্কেট এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন র্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান কর্নেল জিয়া আহসান।
র্যাব কর্মকর্তা জিয়া সাংবাদিকদের বলেন, রেজোয়ান ঢাকায় অবস্থান করে জঈশ-ই-মোহাম্মদের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালনসহ বাংলাদেশে জঙ্গী সংগ্রহের দায়িত্ব পালন করছিল বলে স্বীকার করেছে।
হিন্দী, উদর্ু, ইংরেজী ও বাংলা ভাষায় পারদশর্ী রেজোয়ান পিসত্মল, একে-৪৭, এলএমজি, এইচএমজি, আরপিজি-৮, স্নাইপার রাইফেল চালনাসহ বিস্ফোরক ব্যবহারে প্রশিণপ্রাপ্ত বলে দাবি করেছে র্যাব।
র্যাব কর্মকতর্ারা বলছেন, রেজোয়ান রেলস্টেশন অথবা চলনত্ম ট্রেনে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালাতে সম।
নান্নু মিয়া ১৯৯৯ সালে কাঠমন্ডুতে একটি বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় ভারতে গ্রেফতার হয়ে প্রায় ১০ বছর গুয়াহাটি কারাগারে বন্দী ছিলেন বলে র্যাব জানায়।
র্যাব কর্মকতর্ারা জানান, গ্রেফতারকৃত মুন্না ও খোকা সুকন্যা টাওয়ারের একটি ফ্যাটের মালিক মোঃ মহিউদ্দিনের ছেলে। মহিউদ্দিনের ভাতিজা হচ্ছে আবু নাসের।
গত শতকের '৯০-এর দশকে পাকিসত্মানের আরেক জঙ্গী সংগঠন হরকত-উল-মুজাহিদীন থেকে একটি অংশ বের হয়ে গঠন করে জঈশ-ই-মোহাম্মদ। সংগঠনটি পাকিসত্মানে নিষিদ্ধ হলেও তাদের গোপন তৎপরতা রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.