প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে সঠিক সিদ্ধান্ত অপরিহার্য by মো. ফজলুল হক

এ দেশে ১৯৪৭ সালে সমন্বিত কোর্স কারিকুলাম নিয়ে ভেটেরিনারি শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। প্রাণিসম্পদ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত এবং জিডিপিতে এর অবদান প্রায় ২.৫৭ (২০১০-২০১১) শতাংশ। তা ছাড়া প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল প্রায় ৭০ শতাংশ- অর্থাৎ প্রায় ১১ কোটি মানুষ।
সরকার এ সেক্টরের উন্নতির জন্য সচেষ্ট হলেও স্বার্থান্বেষী মহল অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণে অন্তরায়। এর মূল কারণ, ১৯৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহে; বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) একটি পূর্ণাঙ্গ 'বিএসসি ভেট সায়েন্স অ্যান্ড এএইচ' নামের সমন্বিত ডিগ্রির ভেটেরিনারি সায়েন্সকে দ্বিধাবিভক্ত করে ৬৯-৭০ শতাংশ কোর্স নিয়ে ডিভিএম (ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন) ডিগ্রি এবং ২০-২৩ শতাংশ কোর্স নিয়ে বিএসসি (এএইচ) ডিগ্রি প্রবর্তনই প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে মূল প্রতিবন্ধকতা। ফলে ভেটেরিনারি পেশার শিক্ষা, গবেষণা, প্রশাসন ও মাঠ পর্যায়ের কর্মক্ষেত্রে দুটি প্রতিপক্ষ সৃষ্টির মাধ্যমে শুধু দ্বন্দ্বই সৃষ্টি করা হয়নি, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা, গবেষণা ও কর্মক্ষেত্রকে কলুষিত করে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ভেটেরিনারি পেশাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মরত ভেটেরিনারি এবং এএইচ গ্র্যাজুয়েটরা একে অপরের চির প্রতিপক্ষ, যা প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে বাধার মূল কারণ। ভেটেরিনারি অনুষদ থেকে ডিভিএম ডিগ্রিধারী ভেটেরিনারি ডাক্তাররা প্রাণীর চিকিৎসা, প্রাণীর উৎপাদন, রোগ দমন, গবেষণা, বাসস্থান ব্যবস্থাপনা এবং জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে সক্ষম। কিন্তু এএইচ গ্র্যাজুয়েটদের চিকিৎসা বিষয়ে নূ্যনতম জ্ঞান না থাকায় প্রাণী পালনকারী খামারিরা বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রতারিত হচ্ছে। বিএসসি (এএইচ) নামকরণের ডিগ্রিটি এককভাবে প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের মানদণ্ডে অকার্যকর, যার জ্বলন্ত প্রমাণ হলো- বাকৃবিতে ভেটেরিনারি সায়েন্স অনুষদের ডিভিএম প্রথম বর্ষে Animal and Poultry Hygiene and Management (VMH 311) নামের কোর্স পড়ানো হয়; কিন্তু একই কোর্স এএইচ অনুষদের প্রথম বর্ষে তিনটি কোর্সে ভাগ করে পড়ানো হয়। যেমন- (1) : Animal Science (AS-119), (2) Elementary Dairy Science (DS-213), (3) Elementary Poultry Science, (PS-123) অর্থাৎ চারটি কোর্সে একই বিষয়বস্তু পড়ানো হয়, যা এ যুগে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে একটি একাডেমিক অপরাধ। এ ধরনের মিশ্র সমস্যার মধ্য দিয়েই প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ বছর ধরে। ফলে এ পেশার সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও বিজ্ঞজন তাঁদের বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে বাকৃবি ও পবিপ্রবির এএইচ অনুষদ বন্ধ করে তা নিজ নিজ ভেটেরিনারি অনুষদের সঙ্গে পুনরেকত্রীকরণের প্রস্তাব করেন। যেমন- ১৯৬৯ সালে শিক্ষা সম্পর্কিত মূল্যায়ন কমিটি, ১৯৭৪ সালে কৃষি প্রতিমন্ত্রী শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাতের নেতৃত্বাধীন কমিটি, ১৯৭৬ সালে দেশি-বিদেশি সংস্থা যেমন- FAO, ADB, World Bank, UGC- সহ বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ মহলের মতামত অনুযায়ী প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ড. মো. আলাউদ্দীন কর্তৃক প্রেরিত সুপারিশ, ১৯৭৭ সালে সিএমএলএ কর্তৃক নির্দেশিত ভাইভ নম্বর-৪০৫/১৫, তারিখ ২৩-০৩-১৯৭৭-এর সুপারিশ, ১৯৮২ সালে ব্রিগেডিয়ার এনাম কমিটি, ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ সরকারের পশুসম্পদ উন্নয়ন শিক্ষানীতি মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয় ৫, ৪, ১ শিক্ষা এবং ১৯৯৫ সালে মান্নান ভূঁইয়া কমিটির সুপারিশসহ সবাই বাকৃবির এএইচ অনুষদ বন্ধ ও ভেটেরিনারি সায়েন্স অনুষদের সঙ্গে পুনরেকত্রীকরণের পক্ষে মতামত দেন। বর্তমানে আটটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত কোর্সে পূর্ণাঙ্গ ডিভিএম ডিগ্রি দেওয়া হচ্ছে, যেটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। বাংলাদেশের সব সরকারই সমন্বিত ডিভিএম ডিগ্রির পক্ষে রায় প্রদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৬, ১৯৯৭, ২০০২ ও ২০০৩ সালে দেশে চারটি সরকারি ভেটেরিনারি কলেজ (চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল ও দিনাজপুর) প্রকল্প গ্রহণ করেন। বর্তমানে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষদ হিসেবে রয়েছে। ঝিনাইদহ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজে ছাত্রছাত্রী ভর্তির অপেক্ষায়। সিরাজগঞ্জের একটি সরকারি ভেটেরিনারি কলেজ প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন। সরকার চাচ্ছে, সমন্বিত কোর্সের ডিভিএম ডিগ্রির গ্র্যাজুয়েট তৈরি করে কম খরচে ও দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে সেবা প্রদান করতে; কিন্তু এক শ্রেণীর ২৩ শতাংশ কনডেনস কোর্সের এএইচ গ্র্যাজুয়েট এ দেশের ঘাম ঝরানো মেহনতি মানুষের অর্থের অপচয়কল্পে ব্যক্তিস্বার্থে রাতের অন্ধকারে ইউজিসির বাধা উপেক্ষা করে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ ডিভিএম ডিগ্রির পাশাপাশি এএইচ খুলে গরিব ও মেধাবী ছাত্রদের ভর্তি করে সর্বনাশ ডেকে আনা হচ্ছে। শিক্ষার মান আজ কোন পর্যায়ে? অকার্যকর বিএসসি (এএইচ) অনুষদ খোলার নামে কোটি কোটি টাকা কার স্বার্থে ব্যয় হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। মেডিক্যাল ও ভেটেরিনারি পেশার মূল বিষয়টি দিয়ে উদ্দেশ্যটি পরিষ্কার করা যায়, যেমন- মানুষের যে ডাক্তার রোগীর চিকিৎসা করেন, সেই ডাক্তারই ওই রোগীর খাদ্য সম্বন্ধে বলে দেন। আবার যে ডাক্তার পরিবার পরিকল্পনায় নিয়োজিত, তিনি জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি, চিকিৎসা ও খাদ্যব্যবস্থাসহ প্রেসক্রিপশন দিয়ে থাকেন। তেমনি বিশ্বের সব দেশে ভেটেরিনারি মেডিক্যাল ডাক্তাররা একইভাবে কার্য সম্পাদন করে থাকেন। অর্থাৎ ভেটেরিনারি ডাক্তাররাই প্রাণীর উৎপাদন ও রোগের চিকিৎসার পাশাপাশি খাদ্য গ্রহণের উপদেশ দিয়ে থাকেন। উল্লেখ্য, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ১৯৪৭ থেকে ১৯৯৪ পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে ও কারিকুলামে ভেটেরিনারি ডিগ্রি প্রচলিত ছিল। কিন্তু ভেটেরিনারি কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া Minimum Standards of Veterinary Education, degree course, BVSc & AH regulation 1993 (MSVE) প্রণয়ন করে। ১৯৯৫-৯৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে ভারতে ৩৬টি ভেটেরিনারি প্রতিষ্ঠানে একই নামে ও মেয়াদে সমন্বিত ডিভিএম ডিগ্রি প্রদান করা হচ্ছে। তেমনিভাবে পাকিস্তানেও ১১টি বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে সমন্বিত ভেটেরিনারি ডিগ্রি প্রদান করা হচ্ছে। Pakistan Veterinary Medical Council (PVMC)-এর Regulation অনুযায়ী সব প্রতিষ্ঠান থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি Composite DVM ডিগ্রি প্রদান করা হচ্ছে। ২০০২ সালে Pakistan Veterinary Medical Council (PVMC) বিএসসি এনিম্যাল হাজবেন্ড্রি ডিগ্রি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। উল্লেখ্য, এর আগে দুই থেকে চার বছর মেয়াদি BSc AH ডিগ্রি দেওয়ার প্রচলন থাকলেও সেই গ্র্যাজুয়েটরা পাকিস্তানের কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার সুযোগ পেতেন না। কারণ এটি ডিপ্লোমার সমতুল্য।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আন্তদেশীয় (Trans-boundary) সংক্রামক ব্যাধির নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান World Animal Health Organization (OIE) বা বিশ্ব প্রাণিস্বাস্থ্য সংস্থা। বিধি মোতাবেক প্রতিটি দেশের ভেটেরিনারি কর্তৃপক্ষকে বিশ্ব প্রাণিস্বাস্থ্য সংস্থার কাছে নিয়মিত জবাবদিহি করতে হয়। প্রতিটি দেশের ভেটেরিনারি কর্তৃপক্ষের প্রধান সে দেশের চিফ ভেটেরিনারি অফিসারের (CVO) দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু বাংলাদেশে যখন একজন অ-ভেটেরিনারিয়ান কনডেনস কোর্সের লোক প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন, তখন বিশ্ব প্রাণিস্বাস্থ্য সংস্থা তাঁকে চিফ ভেটেরিনারি অফিসার হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে না- যা ভেটেরিনারি পেশার জন্যই শুধু অবমাননাকর নয়, সংশ্লিষ্ট সরকারি কাজে জটিলতারও সৃষ্টি করে। এ কারণে বিগত প্রায় ৫১ বছরে প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে আশানুরূপ উন্নয়ন সম্ভব হয়নি। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও এ পেশার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। বিশেষজ্ঞ কমিটি এ অবস্থার উত্তরণের জন্য অকার্যকর বিএসসি (এএইচ) ডিগ্রি বন্ধ ঘোষণা করে সমন্বিত ডিভিএম ডিগ্রি এককভাবে বাস্তবায়নের জন্য বারবার পদক্ষেপ নিয়েছে; কিন্তু তা শতভাগ বাস্তবায়িত হওয়ার পরিবর্তে ইউজিসির অসম্মতিতে পবিপ্রবিতে এএইচ অনুষদ খোলা হলো কার স্বার্থে? যা সরকারের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ ছোড়ার শামিল। আজ বিষয়টি মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে দেশ, জাতি ও পেশার সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে সব সমস্যা দূর করতেই হবে, এ দাবি শুধু ভেটেরিনারিয়ানদেন নয়, দলমত-নির্বিশেষে সবার।
ভেটেরিনারি সায়েন্স আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ডিগ্রি এবং পাঁচ বছর মেয়াদি সমন্বিত ডিগ্রিধারী ডিভিএম গ্র্যাজুয়েটরা বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিলের রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত হয়ে প্রাণীর উৎপাদন ও চিকিৎসাসহ যাবতীয় কাজের অনুমতি নিয়েই কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে হয়। বর্তমানে জলাতঙ্কসহ বিভিন্ন Zoonotic রোগ দমনে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় এমবিবিএস ডাক্তারদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ভেটেরিনারি ডাক্তাররা। অর্থাৎ সমন্বিত ভেটেরিনারি গ্র্যাজুয়েটদের প্রয়োজনীয়তা স্বাস্থ্য বিভাগে (Health Service) দিন দিন বাড়ছে। ২০১১ সালে পবিপ্রবিতে এএইচ খোলার অর্থই হচ্ছে প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের বাধায় নতুন মাত্রা যোগ করা। এটি একটি সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রমূলক পদক্ষেপ, যা অতীতের সেই ভুল সিদ্ধান্তের পুনরাবৃত্তি। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এনিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদ থেকে পূর্ণাঙ্গ ডিভিএম ডিগ্রি প্রদানের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ইউজিসির আদেশ অমান্য করে রাতের আঁধারে বেআইনিভাবে অকার্যকর নামে খ্যাত বিএসসি (এএইচ) নতুন অনুষদে ছাত্র ভর্তি এবং এ ব্যাপারে ডা. মো. আনিসুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক, মেডিসিন, অ্যান্ড সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান BSc (AH) অনুষদ খোলার প্রতিবাদ জানালে তাঁকে ওএসডি করে রাখে ওই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং Faculty of Animal Science and Veterinary Medicine অনুষদের যাবতীয় একাডেমিক কর্মকাণ্ড থেকে দুই বছর ধরে ভেটেরিনারি ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত। এ ধরনের মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, বর্তমানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক একজন এনিম্যাল হাজবেন্ড্রি গ্র্যাজুয়েট হওয়ায় ৩১তম বিসিএস (প্রাণিসম্পদ) ক্যাডারে ভেটেরিনারি ডাক্তারের পদে অ-ভেটেরিনারিয়ান (এএইচ গ্র্যাজুয়েট) নিয়োগে সহযোগিতা করেছেন বলেই বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা। এতে চিকিৎসাবঞ্চিত হচ্ছে প্রায় ২৮টি উপজেলার ডেইরি ও পোলট্রি ফার্মের মালিকরা, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, বিএলআরআইয়ের অর্গানোগ্রামে ১৭টি বিভাগের মধ্যে একটি ভেটেরিনারি গ্র্যাজুয়েটদের জন্য, অন্য ১৬টি বিভাগে এএইচ ডিগ্রিধারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে গবেষণার নামে কোটি কোটি টাকার অনিয়ম ও দুর্নীতি চলছে কয়েক যুগ ধরে, যা এর আগেই জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে গবেষণার নামে অর্থের অপচয় হচ্ছে বলে বিশেষ মহলের ধারণা। অন্যদিকে স্বাধীনতার ৪১ বছর পরও আমরা এ সেক্টরে আশানুরূপ উন্নয়নের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছতে পারিনি। প্রাণিসম্পদের উন্নয়নকে গতিশীল করতে এ মুহূর্তেই বাকৃবি ও পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এএইচ অনুষদ দুটি বন্ধ ঘোষণা করে ভেটেরিনারি সায়েন্স অনুষদের সঙ্গে পুনরেকত্রীকরণ করা এবং প্রাণিসম্পদ সেক্টরের প্রতিটি এন্ট্রি পোস্টে পাঁচ বছর মেয়াদি সমন্বিত ডিভিএম ডিগ্রিধারী গ্র্যাজুয়েটদের নিয়োগের ব্যবস্থা করা। উপজেলায় চারজন ও প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে (ভেটেরিনারি সার্জন) পদ সৃষ্টিসহ নিয়োগের ব্যবস্থা করা একান্ত প্রয়োজন। উল্লেখ্য, প্রাণিসম্পদের উন্নয়নে রোগ দমন এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশ ও পেশার ভাবমূর্তি এবং প্রাণিসম্পদের আমদানি-রপ্তানির সুযোগ ত্বরান্বিত করতে ডিএলএসের ডিজির পদসহ সব গুরুত্বপূর্ণ পদে অবশ্যই পাঁচ বছর মেয়াদি রেজিস্টার্ড ভেটেরিনারি ডিগ্রিধারী গ্র্যাজুয়েট নিয়োগের বিকল্প নেই। এর ব্যতিক্রম হলে প্রাণিসম্পদ ধীরে ধীরে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাবে এবং এ সেক্টরের সঙ্গে জড়িতরা বিভিন্নভাবে প্রতারিত ও প্রবঞ্চিত হবেন। ফলে ডিম, দুধ, মাংসসহ প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে
যেতে পারে।
লেখক : চেয়ারম্যান, মেডিসিন, সার্জারি অ্যান্ড অবস্টেট্রিকস বিভাগ,
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর।
fhoque.hstu@gmail.com

2 comments:

  1. This chairman has no idea about science. He is number one lire as identified in his document. This the time for specialization not for khichuri. Most of the recommendation in the mentioned reports are presented in the opposite way. Anybody could go to BAU website and check the course and curicullum for Vet and AH. I am sure, everything will be crystal clear. I am also sure, If any responsible person will see this document, then this chairman will have to face court.

    ReplyDelete
  2. As a departmental chairman, one should be very much careful not to present such a bundle of wrong information

    ReplyDelete

Powered by Blogger.